পারিবারিক বা শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম ও সঞ্চয় যোগ। ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতি। মনে ... বিশদ
রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে এখন পরিযায়ী পাখির আনাগোনা শুরু হয়েছে। মূলত জুন-জুলাই থেকেই এখানে পরিযায়ীরা আসতে শুরু করে। তবে, এবার মে মাসেই দেখা গিয়েছে ওপেন বিল স্টর্ক (শামুকখোল)।
জেলা বনদপ্তর সূত্রে খবর, গত কয়েকদিনে বেশকিছু ওপেন বিল স্টর্ক এসেছে কুলিকে। পক্ষী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৃষ্টির সঙ্গে ওপেন বিল স্টর্ক পাখির একটা সম্পর্ক রয়েছে। বৃষ্টি শুরু হতেই কুলিক নদীর ধারে গড়ে ওঠা পক্ষীনিবাসে বাসা বাঁধার পাশাপাশি রায়গঞ্জ শহরজুড়ে থাকতে শুরু করে তারা।
রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার দাওয়া সাংমু শেরপা বলেন, কয়েকদিন হল ওপেন বিল স্টর্ক আসতে শুরু করেছে। বৃষ্টি হলেই এই পাখি আসতে শুরু করে কুলিকে। পাখিদের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে প্রস্তুত বনদপ্তর। ইতিমধ্যে পাখির খাবারের জোগান দিতে পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন দপ্তরের কর্মী ও আধিকারিকরা।
পরিযায়ী পাখিদের নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করছেন জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক আশিসকুমার দাস। তাঁর কথায়, প্রথমে একদল ওপেন বিল স্টর্ক এসে ফরেস্ট ঘুরে দেখে। এলাকার পরিস্থিতি, পর্যাপ্ত খাবার আছে কি না এবং পরিবেশের অবস্থা দেখে ফিরে যায়। তারপর পরিবেশ অনুকূল হলে পরিযায়ী পাখির দল ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করে। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ওপেন বিল স্টর্ক আসে। তবে বৃষ্টি এই পাখিদের আসার জন্য অনুকূল। কারণ, বৃষ্টি হলে এদের খাবারের অভাব হয় না। এই পাখিরা এসে বাসা তৈরি করে ডিম পাড়ে। তারপর শাবক উড়তে শিখলে ডিসেম্বর নাগাদ তাদের নিয়ে আবার ফিরে যায় নিজেদের দেশে।
কিন্তু চিন্তার বিষয় হল, গত তিন বছরে ওপেন বিল স্টর্ক আসার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালে ওপেন বিল স্টর্ক আসার সংখ্যা ছিল ৭১ হাজার ৩০২টি। ২০২২ সালে সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬৪ হাজার ৫৫টি। ২০২৩ সালে আরও কমে পাখির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৭ হাজার ৪৪ টি।
কুলিকে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা কমার কারণ কী? পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনই এরজন্য দায়ী। রায়গঞ্জের বাসিন্দা তথা পশুপ্রেমী সংগঠন উত্তর দিনাজপুর পিপল ফর অ্যানিমেল-এর সাধারণ সম্পাদক গৌতম তাঁতিয়া বলেন, বৃষ্টি কম হলে এই পাখির খাবারের সঙ্কট দেখা দেয়। তাছাড়া তীব্র গরম এই পাখিদের জীবনযাত্রায় প্রভাব ফেলে। ফলে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা কুলিকে ওপেন বিল স্টর্ক আসা কমার পিছনে অন্যতম কারণ। ছবি বনদপ্তরের সৌজন্যে।