শত্রুরা পরাভূত হবে। কর্মে পরিবর্তনের সম্ভাবনা। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের জন্য ব্যয়-বৃদ্ধির যোগ আছে। কোনও ... বিশদ
শিলিগুড়ি শহরে করোনার ‘ত্রাস’ অব্যাহত। লকডাউন কার্যকরী করা, কন্টেইনমেন্ট জোন তৈরি করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রভৃতি কর্মসূচি বাস্তবায়িত করেও করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এ অবস্থায় শিলিগুড়িতে থাবা বসিয়েছে ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, সাতদিন আগে বাগডোগরার একব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। এরআগে জানুয়ারি মাসে মশাবাহিত এই রোগে শিলিগুড়ি শহরের দুই বাসিন্দা আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে এবার এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। এমন প্রেক্ষাপটে ডেঙ্গু মোকাবিলা করা নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক করল প্রশাসন। চম্পাসারির স্টেট গেস্ট হাউসে আয়োজিত বৈঠকে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ছাড়াও পুরসভা, মহকুমা পরিষদ, মৎস্য, পূর্ত সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা হাজির ছিলেন।
প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের একাংশ বলেন, আন্তর্জাতিক মহামারী করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে ঘুম ছুটেছে। করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা, উপসর্গযুক্ত ও উপসর্গহীনদের সোয়াব সংগ্রহ করা, বাইরে থেকে আসা বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা, কন্টেইনমেন্ট ও বাফার জোন চিহ্নিত করা, সংশ্লিষ্ট জোনের বাসিন্দাদের পরিষেবা প্রদান প্রভৃতি কর্মসূচি রূপায়িত করার পর ফুরসতের সময় মিলছে না। এরমধ্যে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ভাবিয়ে তুলেছে তাঁদের। মশাবাহিত এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখাই এখন মাথাব্যাথার অন্যতম কারণ। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। এ নিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। রাজ্যের নির্দেশ মতো ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এদিন দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা ডেঙ্গু মোকাবিলার প্রস্তুতি বৈঠকে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, ডেঙ্গু দমনে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করা, ভেক্টোর কন্ট্রোল টিমকে ময়দানে নামানো, মশা মারার জন্য ধোঁয়া ও তেল স্প্রে করা, গাপ্পি মাছ ছাড়া প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। বৈঠকের পর স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ অনুসারে ৬ জুলাই থেকে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা শুরু হবে। বাড়িতে জ্বর, সর্দি, কাশির রোগী আছে কি না, বাড়ির কলতলা, বাথরুমের চৌবাচ্চা, নালায়, ফ্রিজের আউট লেটে ও ফুল গাছে টবে জল জমে থাকছে কি না তা খোঁজ নেবেন। তাঁদের রিপোর্টের ভিত্তিতে ভেক্টর কন্ট্রোল টিমকে আরও সক্রিয় করে তোলা হবে। তাঁরা নিকাশি নালা সাফাই রাখা এবং বাড়ি ও আশপাশ এলাকার জমা জল বাইরে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, অতীতে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চালানো নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে ফাঁকিবাজির অভিযোগ উঠেছে। এবার সমীক্ষা নিয়ে যাতে কোনও অভিযোগ না ওঠে সেইদিকে লক্ষ্য রাখা হবে। এ জন্য সমীক্ষার সময় রেজিস্টারে বাড়ির মালিকের স্বাক্ষর নেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীদেরও তাতে স্বাক্ষর করতে হবে। তাছাড়া শহর ও গ্রামের জলাভূমিতে গাপ্পি মাছ ছাড়ার উদ্যোগ মৎস্য দপ্তরকে নিতে বলা হয়েছে।