বিশেষ সংবাদদাতা, শ্রীনগর: অকাল তুষারপাত উপত্যকায়। সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি। যার ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত। ধসে তাঁবুতে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে তিন মেষ পালকের। পুলওয়ামা জেলার ত্রাল এলাকার ঘটনা। শনিবার সেখানে প্রবল বৃষ্টিতে ভূমিধসের কবলে পড়েন অনেকে। এছাড়া জম্মু-কশ্মীরের একটা বড় অংশে—বিশেষ করে উঁচু এলাকায় মাঝারি মানের তুষারপাত হয়েছে। সমতল এলাকায় জনজীবনে প্রভাব ফেলেছে প্রবল বৃষ্টি। এর ফলে হালকা শীতের আমেজ শুরু হয়েছে উপত্যকা জুড়ে। স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, সোনমার্গ ও গুলমার্গের টুরিস্ট রিসর্ট সহ পহেলগাঁও, সোপিয়ান, জোজিলা, দ্রাস এলাকায় মাঝারি তুষারপাত হয়েছে। সোনমার্গে প্রায় সাত ইঞ্চি পুরু বরফ জমে গিয়েছে। গুলমার্গ ঢেকে গিয়েছে সাদা বরফের চাদরে। বেশ কয়েকটি জায়গায় ধসের ফলে শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে আপাতত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জম্মু-কাশ্মীর। পুঞ্চ ও রাজৌরি জেলার সংযোগ রক্ষাকারী মুঘল রোড রাত থেকে বন্ধ রয়েছে। শ্রীনগর-লাদাখ জাতীয় সড়কের সোনমার্গ-জোজিলা রাস্তাতেও তুষারপাতের ফলে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা পরিষ্কার করতে তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসন। সোনমার্গ ও গুলমার্গে যন্ত্রের সাহায্যে রাস্তা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পাহাড়ি পীরপঞ্জল এলাকা ও রাজৌরির মুঘল রোডে সাফাই চলছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি-তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আজ, রবিবার দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতির বদল হতে পারে।
সপ্তাহের শুরুতেই বৃষ্টি ও তুষারপাতের সতর্কতা জারি করে হাওয়া অফিস। তখনই শুরু হয় আশঙ্কা। আগাম তুষারপাতে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন উপত্যকার আপেল চাষিরা। কারণ প্রায় ৩০ শতাংশ আপেল গাছেই রয়ে গিয়েছে। সেগুলি এখনও তোলা বাকি। তুষারপাতে সেগুলির ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির আন্দাজ পেতে উপত্যকার উদ্যান বিভাগের ডিরেক্টর আইজাজ আহমেদ ভাট সোপিয়ান জেলা পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য, দেশের ৭৫ শতাংশ আপেলের উৎপাদন হয় জম্মু-কাশ্মীরে। রাজ্যের ১২ লক্ষ পরিবারের প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আপেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। চিন্তার ভাঁজ তাঁদের কপালে।