কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
স্বাভাবিকভাবে প্রতিবছর রুটিন মাফিক এইসব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ধাক্কায় সুন্দরবন ও তাকে ঘিরে গড়ে ওঠা জনপদের মানুষ কখনই কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি। বার বার ছিন্নমূল হয়ে এক জায়গা থেকে অন্য নিরাপদ আস্তানার সন্ধানে চলে যেতে হয়েছে। মাত্র সাড়ে ছ’মাস আগে বুলবুল ঝড়ে ঘর, জমির ফসল নষ্ট হওয়ার ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি সুন্দরবন। তারমধ্যেই উম-পুনের হামলা। সবর্স্ব হারিয়ে আগামী দিনে কীভাবে চলবে তাঁদের, সেটাই চিন্তা। ঐতিহাসিক ডঃ বিজয়কৃষ্ণ হালদারের বই থেকে জানা যায়, ১৫৯৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে কঙ্কনা দেবীর ছেলে রঙ্গিলা রায়ের সঙ্গে সুন্দরবনের রায়দিঘি দুর্গের কাছে মোগল সম্রাট আকবরের ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়। সাতদিন ধরে সেই যুদ্ধ চলার মধ্যে বাংলার ভাদ্র মাস, কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীর দিন (২৭ কী ২৮ আগস্ট হবে) প্লাবন শুরু হয়। ভয়ঙ্কর সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসে রায়দিঘি, কঙ্কনাদিঘি সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। আকবর অবশ্য প্লাবন দেখেই ভয়ে ফিরে গিয়েছিলেন বলে জনশ্রুতি। ১৫৮২ সালে ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। ১৬৮৮ খ্রীষ্টাব্দে ঝড় ও প্রবল জলস্ফীতির জেরে সাগরদ্বীপ সহ সমস্ত সুন্দরবন অঞ্চলের দু’লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলেন। ঘটনাক্রমে যাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন, ছিন্নমূল হয়ে সকলে ২৪ পরগনার উত্তর দিকে চলে যান। ১৭৩৭ সালে একই ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রায় ৩০ হাজার প্রাণহানি হয়। ওই সময় সমুদ্রের জল ৪১ ফুট উপর দিয়ে গোটা সুন্দরবনকে ডুবিয়ে দিয়েছিল। ১৮৩৩, ১৮৬৪, ১৮৯৫ সালে পর পর ঝড়, জলোচ্ছ্বাসে মানুষ, গবাদি পশুর মৃত্যুর পাশাপাশি ভূসম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৯৭০ সালের ১৩ নভেম্বর, ১৯৭৩, ১৯৮১ সালের ১০-১২ ডিসেম্বরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ফসল, বসতবাটি থেকে শুরু করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এরপর ১৯৮৮ এর ২৯ নভেম্বর (প্রতি ঘণ্টায় ঝড়ের বেগ ছিল ২৫০ কিলোমিটার)। আড়াইশো বছরের মধ্যে এত ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এরপরও প্রতিবছর পালা করে হয়েছে। কখনও তা বাংলাদেশের সুন্দরবনের উপর দিয়ে গিয়েছে। কখনও উভয় দেশের এই উপকূলবর্তী এলাকাকে বিপর্যস্ত করেছে। সুন্দরবনের মানুষ বিশেষ করে মনে রেখেছে ২০০৯ সালের ২৫ মে-র আইলা ও ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বরের বুলবুলকে।