পারিবারিক বা শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম ও সঞ্চয় যোগ। ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতি। মনে ... বিশদ
ছবি ২: ডেকার্স লেনে চায়ের দোকান মনোরঞ্জন দাসের। তিনিও সন্ধ্যা নামার আগেই গোছানো শুরু করেছেন। আজ, শনিবার দুই মেদিনীপুরে লোকসভা নির্বাচন। গোপালপুরের বাসিন্দা মনোরঞ্জনেরও ঘরে ফেরার পালা। চা আগামী তিনদিন মিলবে না।
ছবি ৩: বেলা ৩টে। হাওড়া স্টেশন বাসস্ট্যান্ডে তিল ধারণের জায়গা নেই। কালো মাথার ভিড় দূরপাল্লার বাসগুলির সামনে। কোনওভাবে দরজা গলে ঢুকতে পারলেই যেন কেল্লা ফতে! চলছে হুড়োহুড়ি। সিট ভর্তি, দাঁড়িয়েও রয়েছেন অনেকেই। বাসের মাথায় উঠেও চলেছ ঝুঁকির যাত্রা।
আজ, রাজ্যের ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় ভোট। বহু মানুষ মেদিনীপুর থেকে বিশেষ করে কাঁথি, তমলুক, দীঘা থেকে নানা কাজে কলকাতা আসেন। অনেকেই এখানে অস্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তাঁদের এদিন ঘরে ফেলার পালা। সেই সুবাদে ভিড় দূরপাল্লার বাসগুলিতে। সেই সুযোগে পকেট কাটছেন বাস চালক-কন্ডাক্টার। বাসের ভাড়া কেউ দ্বিগুণ কেউ আবার তিনগুণ হাঁকছেন। নন্দকুমার হাই রোড থেকে নিয়মিত হাওড়া আসেন কার্তিক মান্না। এদিন ১০০ টাকার টিকিট তিনি ৩০০ টাকায় কিনেছেন। তাঁর কথায়, প্রথমে বলছিল নন্দকুমার যাওয়ার কোনও টিকিট দেবে না। এত কাছে লোক তোলা যাবে না। বাজকুল, রামনগর, হেড়িয়া, দীঘা গেলে টিকিট দেব। নির্বাচনের জন্য এরা পেয়ে বসেছে। একই ভাবে শঙ্কর দলুই দীঘা যাওয়ার টিকিট পেয়েছেন ছ’শো টাকায়।
এদিন বাড়ি ফিরতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে এই সব জেলার বাসিন্দাদের। কারণ রাস্তায় বাস কম। ভোটের জন্য পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অধিকাংশ বাস তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে অন্যান্য দিনের তুলনায় এদিন রাস্তায় বাসের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। ফলে দুপুরের পর থেকেই মেদিনীপুর, বাঁকুড়ার উদ্দেশে যাওয়া প্রতিটি বাসে ছিল বাদুড়ঝোলা ভিড়। এমনকী বাসের মাথায়ও তিল ধারণের জায়গা ছিল না। তবে এদিন সবথেকে করুন অবস্থা হয়েছিল যারা নিবড়া, অঙ্কুরহাটি, ধুলাগড়, রানিহাটি, পাঁচলা, উলুবেড়িয়া, বাগনান থেকে বাসে উঠতে যান তাঁদের। ভিড়ে ঠাসা ছিল প্রতিটি বাসস্ট্যান্ড। আগে থেকেই বাস ভর্তি থাকায় অনেকেই নির্দিষ্ট বাস ধরতে পারেননি। কোনওরকমে বিভিন্ন যানবাহনের মাথায় চড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন বাসিন্দারা। এদিন বিকেলে বাগনান লাইব্রেরি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের বাসিন্দা অসিত মাইতি জানান, প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করেও বাসে উঠতে পারা যাচ্ছে না। কিন্তু, বাড়ি তো ফিরতেই হবে। এর মাঝেই একটা ছোটা হাতি এসে দাঁড়াল লাইব্রেরি মোড়ে। চোখের নিমেষে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল সবার মধ্যে। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান ভর্তি হয়ে গেল ছোটা হাতি। গাড়িটি যাবে কাঁথি পর্যন্ত। মাথাপিছু ভাড়া ১০০ টাকা। সাগর দাসের কথায়, কষ্ট করে হলেও এতেই যেতে হবে। ফি বছর ভোট এলে এভাবেই গ্রামে ফেরেন ওঁরা।