সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
গড়িয়াহাট থানার অতিরিক্ত ওসি রাজেশকুমার সিংয়ের মেয়ে রিচা সিং। এবছর আইএসসি পরীক্ষা দেন রিচা। সারা দেশে মেধা তালিকায় তাঁর স্থান চতুর্থ। সেই খবর পৌঁছে যায় কলকাতার নগরপাল ডঃ রাজেশ কুমারের কাছে। মেয়ের এই সাফল্যে খুশির জোয়ার সিং পরিবারে। বাবা রাজেশকুমার সিংয়ের সহকর্মীরাও অভিনন্দনের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়েছেন তাঁকে। এরমধ্যেই লালবাজার সিদ্ধান্ত নেয়, রিচাকে এমনভাবে সম্মান জানানো হবে, যা তিনি সারাজীবন মনে রাখতে পারেন। ঠিক হয়, তাঁকে কয়েক ঘণ্টার জন্য প্রতীকী ডিসি (এসইডি) পদে বসানো হবে। ঘটনাচক্রে তাঁর বাবার বসই ডিসি (এসইডি)।
সেই খবর পৌঁছে দেওয়া হয় তাঁর বাবার কাছে। ঠিক হয় সকালের দিকেই এই সম্মান জানানোর পালা সেরে ফেলা হবে। কারণ ওই সময়ে চাপ কম থাকে। সেইমতো সকাল ৬টা নাগাদ ডিসি অফিসে পৌঁছে যান রিচা। তাঁর আসার আগেই নিজের অফিসে চলে আসেন এই ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। রিচার সাফল্যকে স্যালুট জানিয়ে নিজের চেয়ার ছেড়ে দেন তিনি। ঘরে তখন হাজির তাঁর বাবাও। দায়িত্ব বুঝে নিয়েই রাতে কোথায় কোনও অপরাধ ঘটেছে কি না, তা জানতে চান বাবার কাছে। এরপর রবীন্দ্র সরোবর থানা সহ এই ডিভিশনের অন্যান্য থানার ওসিরা ফোন করে তাঁকে মর্নিং রিপোর্ট দেন। বাইরের কিছু ফোনও তাঁর কাছে আসে। তবে নতুন ডিসি যে একফোঁটা সময়ও নষ্ট করতে চান না, তা কয়েক ঘণ্টার কাজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। এরপর সোজা চলে যান বেনিয়াপুকুর ও তপসিয়া থানায়। কীভাবে থানায় এফআইআর করা হয়, আর্মস কোথায় থাকে, লক-আপের চেহারা কেমন, তা ভালো করে বুঝে নেন।
কয়েক ঘণ্টার জন্য ডিসি পদে বসে স্বভাবতই আপ্লুত রিচা। তাঁর বক্তব্য, বাবা পুলিস। ছোটবেলা থেকেই তাই পুলিসের কাজকর্ম সম্পর্কে অল্পবিস্তর ধারণা ছিল। তবে তাঁদের যে এতটা দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে হয়, তা পুলিস স্টেশনে আসার পর বুঝলাম। সেইসঙ্গে প্রতিদিনই যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে পুলিস কর্মীদের, তাও জানাতে ভোলেননি। আমজনতার নিরাপত্তা রক্ষায় কীভাবে পুলিস কাজ করে, তাও কয়েক ঘণ্টায় শিখেছেন রিচা। পুলিস কর্মীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ অভিযোগ তোলার আগে তাঁদের কাজের দিকটাও যেন একটু ভাবেন, এই আবেদন রেখেছেন ওই কৃতী ছাত্রী। মেয়ের এই সম্মানে সম্মানিত বাবা রাজেশ সিংও। বেলা বারোটা নাগাদ থানা ভিজিট সেরে লালবাজারের উদ্দেশে বেরিয়ে যান রিচা। সেখানে দেখা করেন নগরপালের সঙ্গে। তাঁকে সেখানে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় উৎসাহিত করতে কলকাতা পুলিসের এই উদ্যোগ অন্যদের উৎসাহ জোগাবে বলেই মত পুলিস কর্মীদের।