সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
প্রসঙ্গত, আর্থিক সঙ্কট ও কাঁচামালের অভাব রয়েছে বলে গত বছরের ২৭ মে চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলে সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস দেয় মালিকপক্ষ। তারপর প্রথমে জেলা ও পরবর্তী সময়ে রাজ্য শ্রমদপ্তরের আধিকারিকরা মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে। কিন্তু, মালিকপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয় আর্থিক সঙ্কটের জন্য তারা মিল চালাতে পারবেন না। শুধু তাই নয় বেশ কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎয়ের বিল বাকি পড়ায় জুটমিলের শ্রমিক মহল্লাতে প্রতিদিন বেশ কয়েক ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ইএসআইয়ের টাকা জমা না পড়ায় শ্রমিকরা চিকিৎসার সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছিলেন।
ফলে জুটমিল লাইন ও সংলগ্ন প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক পরিবার ক্ষোভে ফুঁসছিল। বেশ কিছু শ্রমিক প্রকাশ্যে শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছিলেন। গত ২০ এপ্রিল আলোচনার মাধ্যমে জুটমিল খোলার ব্যবস্থা হয়। প্রথমে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে তারপর উৎপাদনের কাজ শুরু হবে বলে জানায় মালিকপক্ষ। কিন্তু, উৎপাদন শুরুর আগেই এদিন ভোরে আচমকা ফের সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস দেখেই শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপরেই তারা প্রথমে মিল সংলগ্ন এলাকায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের তিনটি কার্যালয় ভাঙচুর করে। পাশাপাশি জুটমিলে থাকা শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক পরিমল সিংহরায় ও উমেশ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙচুর করে। পাশাপাশি গোন্দলপাড়া ফেরিঘাট ও তার ইজারা পাওয়া স্থানীয় তৃণমূল নেতা চন্দন বর্মনের বাড়িতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
গণ্ডগোলের সময়ে উত্তেজিত শ্রমিকদের একাংশ শাসক দলের দলীয় কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুলিস ও দমকল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, ভোটে আদায়ের জন্যই তৃণমূল নেতৃত্ব মালিক পক্ষের সঙ্গে বসে কারখানা খোলার পরিকল্পনা করেছিল। এখন ভোট মিটে গিয়েছে, তাই ফের কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। শ্রমিকরা নিজেদের অভাব অভিযোগের কারণে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের কথা বললেও তা মানতে নারাজ তৃণমূল। স্থানীয় তৃণমূল পরিমল সিংহরায় বলেন, জুটমিল বন্ধ হওয়ার ইস্যুকে সামনে রেখে বিজেপিই পরিকল্পনামাফিক আমাদের বাড়ি ও কার্যালয়গুলিতে ভাঙচুর করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা পুলিসের কাছে অভিযোগ দায়ের করছি।
যদিও শাসকদলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি। দলের ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পাল বলেন, ভোটের আগে গোন্দলপাড়া জুটমিল খোলার সময়েই আমরা বলেছিলাম, এটা ভোট আদায়ের কৌশল। আমাদের অনুমান যে সঠিক ছিল, এদিন তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। স্বপনবাবু বলেন, আমাদের দলের কেউ গোন্দলপাড়ায় কোনও গণ্ডগোল করেনি। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে শাসকদল প্রতারণা করেছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই শ্রমিকদের ক্ষোভ শাসকদলের নেতা ও কার্যালয়গুলিতে আছড়ে পড়েছে।