কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
নতুন অভিযানের জন্য চাই নতুন পোশাক। আগামী আর্টেমিস চন্দ্র অভিযানের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে নাসা। তার জন্য বিশেষ স্পেসস্যুট বা মহাকাশ অভিযানের উপযুক্ত পোশাক প্রস্তুত করে ফেললেন বিজ্ঞানীরা। সাংবাদিক সম্মেলন করে তা প্রকাশ্যে নাসার প্রধান জিম ব্রিডেনস্টাইন। ওরিয়ন ক্রু সারভাইভ্যাল স্যুটটি দেখে ধন্য ধন্য পড়ে গিয়েছে মহাকাশ গবেষক মহলে।
কী রয়েছে নতুন এই স্পেসস্যুটে? এটি দেখতে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে ব্যবহৃত পোশাকের মতো। নাসার অবশ্য দাবি, এটি আরও আরামদায়ক এবং চন্দ্রপৃষ্ঠে পদচারণার জন্য এক্কেবারে উপযুক্ত। হেলমেট সহ ১০০ শতাংশ অক্সিজেন সরবরাহের থাকছে স্যুটটিতে। হেলমেটে থাকছে ভয়েস অ্যাকটিভেটেড মাইক্রোফোন। একটি ফোম ব্লক, যাতে নাক চুলকোতে পারবেন মহাকাশচারীরা। -২৫০ ডিগ্রি থেকে ২৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাতেও কর্মক্ষম থাকবে পোশাকটি। এটি এমন একটি উপাদান দিয়ে তৈরি, যাতে ধুলোবালিও লাগবে না। মহাকাশচারী ছেলে হোক বা মেয়ে, তাঁর চেহারা যেমনই হোক, এই পোশাকটি পরতে অসুবিধা হবে না। এভাবেই সেটি তৈরি করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সামনেই মহিলা মহাকাশচারী অ্যান ম্যাককেইন এবং মহাকাশযানের ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস্টিন ডেভিস নতুন এক্সইএমইউ স্যুটটি পরে দেখিয়েও দিলেন। স্পেসস্যুটটিতে হেলমেট সহ তিনটি ভাগ রয়েছে। কোমর থেকে পা পর্যন্ত অংশটিকে চন্দ্রপৃষ্ঠে সহজে চলাফেরার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এই অংশটি অনেকটাই হাল্কা। আর এই স্পেসস্যুট গায়ে চাপানোও যায় সহজেই। যা আগের স্যুটগুলিতে করা সম্ভব ছিল না।
এই প্রথম স্পেসওয়াক দুই মহিলার
মহাকাশ অভিযানের ইতিহাস গড়লেন মহিলারা। এই প্রথম আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের (আইএসএস) বাইরে একসঙ্গে পদচারণা করেছে নাসার দুই মহিলা মহাকাশচারী ক্রিস্টিনা কখ ও জেসিকা মেয়ার। গত ১৮ অক্টোবর এই নজির গড়েছেন তাঁরা। একটি বিকল পাওয়ার কন্ট্রোল ইউনিট বদলাতেই স্পেস স্টেশনের কোয়েস্ট এয়ারলকের (স্পেসওয়াকের সময় ব্যবহৃত দরজা) বাইরে যান তারা। পোর্ট-৬ ট্রাস স্ট্রাকচারে গিয়ে ব্যাটারি চার্জ-ডিসচার্জ ইউনিট (বিসিডিইউ) প্রতিস্থাপন করেন দুই মহিলা মহাকাশচারী। ৭ ঘণ্টা ১৭ মিনিট মহাকাশে কাটিয়ে বিকল যন্ত্রাংশ নিয়ে ফিরে আসেন তাঁরা। ১৮ অক্টোবর স্পেসওয়াকের সেই ঐতিহাসিক ঘটনাটি নাসা-র পক্ষ থেকে ‘লাইভ স্ট্রিম’ করে দেখানোও হয়।
কোন পুরুষ মহাকাশচারী ছাড়া মহিলাদের এভাবে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের বাইরে আগে কখনও কাজ করতে দেখা যায়নি। ক্রিস্টিনা কখ এর আগে ৪ বার স্পেসওয়াক করেছেন। তবে তার সঙ্গে যাওয়া জেসিকা মেয়ারের এটিই প্রথম স্পেসওয়াক।
ক্রিস্টিনা ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং জেসিকা মেরিন বায়োলজিতে ডক্টরেট। শুধু মহিলাদের নিয়ে এই ঐতিহাসিক স্পেসওয়াক হওয়ার কথা ছিল গত মার্চ মাসে। সহকর্মী অ্যান ম্যাকক্লেইনকে নিয়ে তাতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল ক্রিস্টিনা কখের। কিন্তু ম্যাকক্লেইনের শারীরিক মাপ অনুযায়ী সঠিক স্পেসস্যুট না থাকায় তা হয়ে ওঠেনি। বিষয়টি নিয়ে নাসার বিরুদ্ধে অভিযোগও ওঠে। এরপরেই চন্দ্র অভিযানের জন্য নতুন স্পেসস্যুট তৈরির কাজে গতি আসে। সম্প্রতি, নাসার ওই নতুন স্পেসস্যুটের প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ম্যাকক্লেইন।
স্পেসওয়াক নিয়ে ক্রিস্টিনা বলেন, আগে মহিলাদের এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যেত না। এখন মহাকাশ অভিযানে একজন মহিলা হিসেবে অবদান রাখতে পেরে চমৎকার লাগছে। মহাকাশে ভাসতে ভাসতে বেশ কয়েকটি সেলফিও তুলেছিলেন তাঁরা।
পৃথিবী থেকে ৪০২ কিলোমিটার উপরে তোলা সেই সেলফি পোস্ট করেছেন দু’জনে।
প্রথম নারী হিসেবে মহাকাশে পদচারণা করেছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের স্বেতলানা সাভিতস্কায়া। তিনি ১৯৮৪ সালের ২৫ জুলাই ইউএসএসআরের স্পেস স্টেশনের বাইরে ৩ ঘণ্টা কাটিয়ে ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন মহাকাশচারী ভ্লাদিমির ঝানিবেকভ। আর মানব ইতিহাসে স্পেসওয়াক করা প্রথম মানুষ হচ্ছেন, সোভিয়েতের মহাকাশচারী অ্যালেক্সি লিওনোভ। গত মাসেই ৮৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি।