গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
মোহন বাগান -১ (শুভ ঘোষ)
লুধিয়ানা, ১৪ জানুয়ারি: ম্যাচের বয়স তখন ৮৮ মিনিট। মেরিনার্সরা পিছিয়ে ডিপান্ডা ডিকার গোলে। এমন সময়ে পাঞ্জাব এফসি’র ব্রাজিলিয়ান দানিলোর ক্লিয়ারেন্স থেকেই বিপদের সূত্রপাত। সেই বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন অপ্রস্তুত আনোয়ার আলি। নাওরেমের পরিবর্ত হিসেবে নামা শুভ ঘোষ ফাঁকায় বল পেয়ে মোহন বাগানকে সমতায় ফেরান। আপাতত আই লিগে পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে পরিবর্ত হিসেবে নেমে শুভ তিনটি গোল করলেন। কল্যাণীতে স্বদেশিদের নিয়ে গড়া ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে তিনি খেলার সুযোগ পাননি। তাই মঙ্গলবার কিছু করে দেখানোর বাড়তি তাগিদ ছিল শ্যামনগরের প্রতিশ্রুতিসম্পন্ন স্ট্রাইকারটির মধ্যে। পাপা দিওয়ারার ব্যর্থতার দিনে শুভর ঔজ্জ্বল্যই মোহন বাগানের প্রাপ্তি। ডার্বির আগে তাঁর গোলেই হার এড়াল কিবু ভিকুনার দল।
জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে নেওয়া পাপা দিওয়ারাকে দুর্মূল্য সওদা বলছেন সবুজ-মেরুন কর্তারা। কিন্তু নতুন জার্সিতে তিনটি ম্যাচ ইতিমধ্যে খেলে ফেললেও স্কোরশিটে নাম তুলতে পারেননি তিনি। স্বাভাবিকভাবেই সেনেগালের ফরোয়ার্ডটির মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব সুস্পষ্ট। এদিন লুধিয়ানায় পাঞ্জাব এফসি’র বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিটের মধ্যে তিনি পাঁচ বার বিপেক্ষর পাতা অফ সাইডের ফাঁদে পা দেন। গোটা ম্যাচে একবারই তাঁকে চোখে পড়েছে। বিরতির আগে বাঁ দিক থেকে পাপা বুদ্ধিদীপ্ত বল বাড়িয়েছিলেন বেইতিয়াকে। কিন্তু সেক্ষেত্রে স্প্যানিশ মিডিওটির নেওয়া শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের ১৯ মিনিটে কিছুটা খেলার গতির বিরুদ্ধে পাঞ্জাব এফসি’কে এগিয়ে দেন ডিপান্ডা ডিকা। জুনিয়রের কর্নার থেকে বল পেয়ে দুরন্ত ভলিতে জাল কাঁপান তিনি (১-০)। প্রাক্তন ক্লাবের বিরুদ্ধে বিশেষ কিছু করার জন্য মায়ের শেষকৃত্যে যোগ দেননি। সেই লক্ষ্যে সফল হয়ে খুশি ক্যামেরুনের এই স্ট্রাইকারটি। দ্বিতীয়ার্ধে মোহন বাগান গোলরক্ষক শঙ্কর রায় বিপক্ষের সঞ্জু প্রধানের দু’টি প্রয়াস রুখে দেন। শুধু তাই নয়, সংযোজিত সময়ে বালি গগনদীপের শট বাঁচিয়েও দুর্গের পতন রোধ করেন তিনি। তবে ৮৩ মিনিটে ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় গোল হজম করেনি কিবু ভিকুনার দল। কেভিন লোবোর কার্লিং শট ক্রসপিসে আছড়ে পড়ে। পাঞ্জাবের থেকে সৃজনশীল ফুটবলার মোহন বাগানে বেশি ছিল। বৃষ্টিভেজা মাঠ হলেও এরিয়াল বলের উপর জোর না দিয়ে বেইতিয়ারা পাসিং ফুটবল খেলেছেন। নিজেদের বক্স পর্যন্ত পাঞ্জাব কোচ ইয়ান ল বিপক্ষকে পাস খেলার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু ডিফেন্সিভ থার্ডে দানিলো-জুনিয়র-ডেনিসদের মতো দীর্ঘদেহী বিদেশিরা অনবদ্য ব্লকিং করায় মোহন বাগানের আক্রমণ সেভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেনি। ফ্রান গঞ্জালেজ মুনোজ স্বাভাবিক খেলা মেলে ধরতে ব্যর্থ হন। ম্যাচের সেরা দানিলোর সঙ্গে তাঁর বেশ কয়েকবার ঝামেলাও হয়। কিছুটা গা জোয়ারি ফুটবল খেলে পাঞ্জাব। ম্যাচে তাদের ফাউলের সংখ্যা ১৩টি। আর মোহন বাগান ফাউল করেছে সাতটি। ড্যানিয়েল সাইরাসকে তুলে তুর্কমেনিস্তানের টারসুনভকে নিয়ে আসেন কোচ কিবু ভিকুনা। প্রায় ২৫ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। মাঝমাঠ থেকে তিনি দু’টি চমৎকার থ্রু বাড়ান নাওরেম ও পাপা দিওয়ারাকে। কিন্তু কেউই তা কাজে লাগাতে পারেননি। ৯১ মিনিটে প্রতিপক্ষের দু’জনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকলেও লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেননি টারসুনভ। ভিডিও অ্যানালিস্টের মাধ্যমে মোহন বাগানের খেলার ধরন নিয়ে রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেছেন পাঞ্জাব এফসি’র কোচ। এদিন তিনি সবুজ-মেরুনকে উইং প্লে করার তেমন সুযোগ দেননি। পাশাপাশি এটাও ঠিক যে, বৃষ্টিভেজা ভারি মাঠ দুর্দান্ত ফুটবল খেলার উপযুক্ত ছিল না। টানা চারটি ম্যাচ জেতার পর মোহন বাগানের বিজয়রথ থেমে গেল লুধিয়ানার মাটিতে। ৭ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট সংগ্রহ করে আপাতত লিগ তালিকার শীর্ষে মোহন বাগান। একটি ম্যাচ বেশি খেলে পাঞ্জাবের সংগ্রহ ১১ পয়েন্ট।