যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
আপনাকে এখনও তো অনেকে সামনাসামনি অনেকে, আড়ালে আবডালে ডন বলেন? আবার অনেকে বলেন, সিংহের নাকি বয়স হয়েছে। এখন এলাকা দাপাচ্ছে ভাই রহমত, খিদিরপুরের আনোয়াররা? চোখেমুখে উত্তেজনার ছাপ না পড়তে দিয়ে ছ’বারের কাউন্সিলার সামসুজ্জামান বললেন, ‘ডন’ বললে রাগ করি না। ‘ভাই’ বললেও রাগি না। মানুষ যেভাবে ভালোবাসা দেখাবে, দেখাক না। রাগব কেন? আর যাঁদের কথা বলছেন, ওঁরা আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট। সম্মান দেখায়।
দৃশ্য দুই। ঠিক একটা অ্যাম্বাসাডর ঢোকার মতো জায়গা। আর সেটা ঢোকানো উচিত হবে কি হবে না, ভাবতে না ভাবতেই, ২০-২৫ জোড়া চোখ মেপে নিয়ে বলল, ‘আরে, জাইয়ে, জাইয়ে, অন্দর যাইয়ে। কোই প্রবলেম নেহি। রহমত ভাইকা অফিস অন্দরই হ্যায়’। রহমত আনসারির অফিস। দেড়শো-দুশো লোকজন। সেই এক চেরা চোখে তাকানো। বন্দর এলাকার উঠতি মুখ রহমত। কলকাতা দক্ষিণ লোকসভার এক পুরনো ভোট ম্যানেজার বলেছিলেন, এবারের ভোটে রহমত নিঃসন্দেহে বড় ফ্যাক্টর। প্রচুর লোকজন রয়েছে ওঁর।
দাদা সামসুজ্জামান যেখানে বেঁটেখাঁটো মানুষ, সেখানে ১৩৭ নম্বরের কাউন্সিলার রহমত প্রায় ছ’ফুটিয়া। ক’টা ফোন করলেন, কতজনকে নামালেন ভোট করাতে? চোখা প্রশ্নে নমস্কারের ভঙ্গিতে বিনয়ী উত্তর রহমতের। দু’গালে আঙ্গুল ঠেকিয়ে বললেন, তওবা, তওবা! বলেন কী! কোনও লোকই নামাতে হয়নি। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে শুধু এলাকায় টহল দিচ্ছি। কাউকে ফোন নয়, নির্দেশ নয়। সব ঠিক আছে। আছিও এখানেই। ভি চিহ্ন দেখিয়ে বললেন, জেনে রাখুন, ‘দিদি’ ছাড়া এখানে দ্বিতীয় কিছু নেই। পাশ থেকে এক সাগরেদ বললেন, দাদা, সেন্ট্রাল ফোর্স বহুত বত্তামিজি কর রাহা হে। তাঁকে চুপ করিয়ে রহমত বললেন, প্রচুর ফোর্স দিয়েছে। ভালোই তো। এখানে সন্ত্রাসও হয় না। তবে ওরা মেয়েদের হিজাব তুলে দেখতে চাইছিল। আমরা বারণ করেছি। কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছি।
আনসারি ভাই যেখানে বাড়ি ও পার্টি অফিসের বাইরে খুব একটা বেশি যাননি, সেখানে বন্দরে তৃণমূলের আর এক ভোট ম্যানেজার খিদিরপুরের মহম্মদ আনোয়ার দিনভর ছুটে বেরিয়েছেন। সকাল থেকেই ফোন ‘ব্যস্ত’। কী করছেন, দেখা করাও মুশকিল। পাঁচ মিনিটও এক জায়গায় থাকছেন না। রাজ্য মন্ত্রীসভার এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর ‘খাস’ বলে পরিচিত এই দাবাং নেতা এদিন ছুটে বেরিয়েছেন তারাতলা, ব্রেস ব্রিজ, হাইড রোড, খিদিরপুর রোড সহ একের পর এক জায়গায়। শেষে বিকেল চারটেয় দেখা হল বিএনআর হাসপাতাল লাগোয়া চটকলের মাঠে। ঘিরে আছে প্রায় ৫০ জন লোক। বললেন, না ছুটলে? সেই ২০১৪ সালের ফল হবে! দু’হাজার ভোটে দল পিছিয়ে থাকবে। এবার লিড দিতেই হবে। কথা বলতে না বললেই মাঠের চারদিক ঘিরে ফেলল সেন্ট্রাল ফোর্স। দাবাং নেতা লোক জড়ো করছে, খবর পেয়ে ফোর্স হাজির। যা, যা, তোরা সব চলে যা। ফোর্স এসেছে। আনোয়ারের নির্দেশে নিমেষে মাঠ ফাঁকা!