পারিবারিক বা শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম ও সঞ্চয় যোগ। ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতি। মনে ... বিশদ
কীভাবে গড়ে তোলা যেতে পারে সেই নিরাপত্তা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খামারে অপ্রয়োজনীয় লোকজনের প্রবেশ প্রথমেই বন্ধ করতে হবে। খামারে ঢোকার মুখে জীবাণুনাশক মেশানো জলের ব্যবস্থা রাখা দরকার। যাতে কেউ খামারে ঢুকলে সেই জলে পা ভিজিয়ে আসেন। এছাড়া খামারে গাড়ি ঢোকা ও বেরনোর সময় জীবাণুনাশক জল দিয়ে চাকা ভালোভাবে ধুয়ে দিতে হবে। পারলে গোটা গাড়িতেও জীবাণুনাশক স্রে ঞ করা যেতে পারে। একইভাবে যাঁরা খামারে পাখির পরিচর্যার কাজে যুক্ত, তাঁরাও যখন ঢুকবেন, জীবাণুনাশক স্রোে চ্যানেলের ভিতর দিয়ে তাঁদের আসার ব্যবস্থা করতে পারলে ভালো হয়। এছাড়া খামারের চারদিকে নিয়মিত চুন ও ব্লিচিং ছড়াতে হবে। কিছু জীবাণুনাশক রয়েছে, যেগুলি মুরগি থাকা অবস্থাতেও খামারের ভিতরে স্রে।া করা যেতে পারে। প্রাণী চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে সেসব স্রেতে করতে পারেন প্রাণীপালক। খামার চত্বরে চুন-ব্লিচিংয়ের সঙ্গে ফর্মালিন বা সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড স্রেচি করলেও জীবাণুনাশ হয়।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ডিম উৎপাদনের জন্য কোনও খামার হলে সেখানে কিছু ডিম ভাঙবেই কিংবা পচা বের হবে। তবে এইসব ডিম যেখানে সেখানে মোটেই ফেলা যাবে না। নিয়ম মেনে সেগুলিকে গর্ত করে পুঁতে দিতে হবে। এছাড়া একটি বড় খামারে স্বাভাবিকভাবেই দিনে একটি-দু’টি মুরগি মারা যেতে পারে। সেগুলিকেও উন্মুক্ত জায়গায় ফেলা যাবে না। হয় মাটির নীচে চেম্বার করে তার ভিতরে ফেলতে হবে। চেম্বারের উপরে ঢাকনার ব্যবস্থা রাখতে হবে। দ্রুত যাতে ওইসব মরা মুরগির পচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, সেজন্য মাঝেমধ্যে ওই চেম্বারে নুন ও ব্লিচিং যোগ করতে হবে। বড় ফার্ম হলে সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বা ডিজেল চালিত ইনসিনারেটরের (চুল্লি) ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। ওই ইনসিনারেটরের ভিতর দিয়ে দিতে হবে মৃত মুরগিকে। ফলে তার থেকে জীবাণু ছড়ানোর আর আশঙ্কা থাকবে না।
খামারে মুরগিকে সুস্থ ও সবল রাখতে নিয়মিত টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়া ভীষণ জরুরি, বলছেন প্রাণী বিশেষজ্ঞরা। এইচফাইভ এন ওয়ান গ্রুপের এক ভাইরাসের আক্রমণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুর সেভাবে কোনও টিকা নেই, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, এই ভাইরাসটি মিউটেশনের মাধ্যমে দ্রুত স্রে েইন পরিবর্তন করে থাকে। মূলত ভাইরাসটি পাখির শ্বাসযন্ত্রকে আক্রমণ করে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে নষ্ট করে দেয়। কিন্তু সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা অন্য কিছু রোগের উপসর্গের সঙ্গে বার্ড ফ্লুর উপসর্গও অনেকটাই মিলে যাওয়ায় সবসময় তা বোঝা সম্ভব হয় না। তবে বার্ড ফ্লুর ভাইরাস মূলত হাই প্যাথোজেনিক ও লো প্যাথোজেনিক স্রে ড়ইনের হয়ে থাকে। লো প্যাথোজেনিক স্রে েইন আক্রমণ করে থাকলে অনেক সময় তা প্রতিহত করা সম্ভব হয়। কিন্তু হাই প্যাথোজেনিক স্রেথাইনের আক্রমণ হলে পাখিকে বাঁচানো মুশকিল হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অন্যান্য টিকা যদি সঠিক সময়ে দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে পাখির শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্টই বেশি থাকে। সেক্ষেত্রে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারে সে। এই সময় হাঁস-মুরগির খাবারের সঙ্গে ইমিউনো বুস্টারও দেওয়া যেতে পারে। সেইসঙ্গে ভিটামিন সি, ই ও সেলেনিয়াম পাখিকে খাওয়াতে পারেন প্রাণীপালকরা।
প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানো পাখিরা বার্ড ফ্লুর ভাইরাসের অন্যতম বাহক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, আমাদের দেশে পরিযায়ী পাখিদের মাধ্যমেই বার্ড ফ্লু ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ঘটে। পাখিদের আটকানো খুবই মুশকিল। তবুও খামার চত্বরে যদি ডালযুক্ত গাছের সংখ্যা কম থাকে, তা হলে কিছুটা হলেও পাখি কম আসবে।
নিয়ম মেনে খামারে মুরগি রাখতে হবে। ডিপ লিটার পদ্ধতিতে চাষের ক্ষেত্রে মাংসের জন্য যদি পালন করা হয়, তাহলে খামারে একটি মুরগির জন্য জায়গা রাখতে হবে দেড় বর্গফুট। কিন্তু যদি ডিমের জন্য পালন করা হয়ে থাকে, তা হলে মুরগি পিছু জায়গা দরকার সাড়ে তিন বর্গফুট।