বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনাচিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
শুধু মানিকবাবু নন, একইভাবে চাষের কাজে শামিল হয়েছেন মহকুমার বহু পরিযায়ী শ্রমিক। কৃষিকাজের মাধ্যমেই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। ফলে মহকুমায় বেড়েছে আমনের চাষ। এভাবেই গ্রামীণ অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষবার মহকুমার প্রায় সাড়ে ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছিল। এবছর তা হচ্ছে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে। বহু বছর পর এবার এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। রয়েছে কৃষি উপযোগী আবহাওয়াও। তাই এবার ভালো ফসলের আশায় বুক বাঁধছেন চাষিরা। তাঁরা বলেন, পরপর দু’বছর আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। প্রথমে বুলবুল ও পরে উম-পুন দুর্যোগ চাষের ব্যাপক ক্ষতি করে। তাছাড়া অন্যান্য বছর বর্ষা সময়ে না আসায় বীজতলা তৈরির কাজেও সমস্যা হতো। তবে এবার সময়ে বৃষ্টি হয়েছে। তাই ফসলের গুণগতমান ও উৎপাদন বৃদ্ধির আশা তো রয়েছেই।
আরামবাগ মহকুমা কৃষি আধিকারিক (প্রশাসন) সজল কুমার ঘোষ বলেন, মহকুমার ছ’টি ব্লকের ৬৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও একটি পুরসভা এলাকায় আমন চাষ হচ্ছে। এই চাষ সবচেয়ে বেশি হয় আরামবাগ ব্লকে। চাষের জন্য কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এবার মহকুমার ৩০ হাজার চাষিকে নতুন করে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। সেই লক্ষ্যমাত্রার বেশি চাষি ওই কার্ডের সুবিধা পেয়েছেন।
করোনা ভাইরাসের প্রকোপে দীর্ঘ কয়েক মাস টানা লকডাউন চলেছে। ভিন রাজ্য থেকেও ফিরে এসেছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। গ্রামে ফিরে অধিকাংশ শ্রমিকের নতুন করে কর্মসংস্থান হয়নি। তাই তাঁরা এবার চাষের কাজে অংশ নিয়েছেন। খানাকুলের ঘোষপুরের যুবক মানিক সাঁতরা বলেন, বাবার সঙ্গে এবারই প্রথম কয়েক বিঘা জমিতে ধান চাষ করছি। আশা করি, ভালোই ফলন হবে। ঘরে ধান থাকলে না খেতে পেয়ে তো মরতে হবে না। একই কথা জানিয়েছেন মহকুমার অনেকেই।
কৃষিদপ্তরের কর্তাদের দাবি, পরিযায়ী শ্রমিকরা বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কৃষিতে অংশ নিয়েছেন। যে কারণে, এবার মহকুমায় অব্যবহৃত কৃষিজমিতেও ধান চাষ হয়েছে। মূলত জুন মাস থেকে এই চাষ শুরু হয়। অক্টোবর মাস থেকে ফসল কাটা শুরু হয়। এবার রাজ্যে প্রায় ৪২ লক্ষ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই মত, করোনা আবহে বাণিজ্য ও শিল্প অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু, গ্রামীণ এলাকায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরিযায়ী শ্রমিকরা চাষের কাজে নিযুক্ত হয়েছেন। তাই কৃষির মাধ্যমেই গ্রাম বাংলার অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।