সংবাদদাতা: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা ১ নম্বর ব্লকের তাপসকুমার তেওয়ারি ব্লকের ১০ নম্বর গরঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ধ্বনি গ্রামের চাষিদের নিয়ে কম খরচে, অল্প সময়ের মধ্যে দেশি মাগুরের সঙ্গে গলদা চিংড়ির চাষ করে ভালো লাভ পেয়েছেন। এতে ওই অঞ্চলের চাষিদের মধ্যে মাছ চাষে প্রবল উৎসাহ দেখা দিয়েছে। গলদা চিংড়ির সঙ্গে দেশি মাগুর চাষ সম্পর্কে তাপসকুমার তেওয়ারি বলেন, মাছ চাষে চাষিদের উৎসাহ দেওয়া এবং চাষিদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলার পাশাপাশি আমার মৎস্য প্রকল্পে বহু চাষির কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রচলিত চাষের সঙ্গে দেড় বিঘা জমিতে অন্য কোনও ফসল চাষ না করে জমিকে সংস্কার করে গলদা চিংড়ির সঙ্গে দেশি মাগুর মাছের চাষ করছি। কারণ, বাজারে সবসময় এই মাছের চাহিদার সঙ্গে দাম ভালোই থাকে। এক একটি মাছ বিক্রি করে দাম পাওয়া যায় দ্বিগুণ থেকে চারগুণ পর্যন্ত। এই মাছ চাষের জন্য জলাধারের উচ্চতা সবসময় চারফুট বজায় রাখতে হবে। এর পর ৪-৬ দিনের ডিম ফোটা বাচ্চা বা চারা পোনা জলে ছেড়ে দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে, চারাপোনা কোনওভাবেই পাখি বা অন্য কিছুতে খেয়ে না নেয়। এজন্য জলাশয়ের উপরে সুতো অথবা জাল দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। আমার দেড় বিঘা জলাশয়ে ২ হাজার দেশি মাগুরের সঙ্গে ৫ হাজার গলদা চিংড়ির বাচ্চা ছাড়া হয়। এক একটি চারা পোনার দাম পড়ে দেড় টাকা। এর পর মাছের মাছের খাবার হিসেবে প্রতি সপ্তাহে গুড়, চালের খুদ এবং খোল, এই তিনটি সামগ্রীর ১০ কেজির মিশ্রণ জলে গুলে একটি বড় পাত্রে রেখে পচিয়ে নিতে হবে। সেই পচানো মিশ্রণ জলে ছিটিয়ে দিতে হবে। বাচ্চা অবস্থায় পর পর কয়েক সপ্তাহ ১০ কেজি হারে দেওয়ার পর একটু বড় হলে খোল, চালের খুদ এবং গুড়ের সংমিশ্রণ অল্প অল্প করে বাড়াতে হবে। ৪-৬ মাসের মধ্যে চারা পোনার ওজন হবে ১০০-১৫০ গ্রাম। ২০০ গ্রামও হতে পারে। এই সময় বাজারে বিক্রি করে দিতে হবে। মাসের পর থেকে আমার জলাশয়ের মাছ বিক্রি শুরু করি। ৬ মাসের মধ্যে সব মাছ বিক্রি করে দিই। দাম পেয়েছি গড়ে ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজি। ৬ মাসের মাথায় আবার ডিম ফোটা ৪-৬ দিনের বাচ্চা বা চারা পোনা জলাশয়ে ছেড়ে দিই। এক একটি মাছের খরচ পড়ে ২০-২৫ টাকার মতো। বিক্রি করার সময় প্রতিটি মাছের দাম পাওয়া যায় ওজন অনুযায়ী ৮০-১২০ টাকার মতো।
চাষিরা ফসল চাষের পাশাপাশি কিছুটা জমিতে দেশি মাগুরের সঙ্গে গলদা চিংড়ির চাষ করলে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে পারবেন। বহু চাষিকে কর্মসংস্থান দেওয়ার জন্য শীঘ্রই আরও দেড় বিঘা জমি সংস্কার করে রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের চাষ শুরু করব।