মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযো ... বিশদ
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে দলীয় কাজ সেরে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলিতে খুন হন কালনা-১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ ইনসান মল্লিক। তাঁকে খুব কাছ থেকে দু’রাউন্ড গুলি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় তাঁর।
এই ঘটনায় পরিবারের লোকজন শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দলকেই দায়ী করেছিলেন। পাশাপাশি, বিজেপির কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন। শনিবার রাতে নিহত ইনসান মল্লিকের ভাই রাজীব মল্লিক কালনা থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস জানিয়েছে, সেই অভিযোগে তৃণমূল নেতা রাজকুমার পাণ্ডে, তৃণমূল কর্মী চঞ্চল সিংহরায়, বিজেপি কর্মী হারান শেখ, আয়ুবনবি শেখ ওরফে গগন, মিলন ঘোষ সহ নিজাম মল্লিক, বাবর মল্লিক, নাজির শেখ, খোকন মল্লিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিস তদন্তে নেমে রবিবার বিকেলে পুলিস নিজাম মল্লিককে গ্রেপ্তার করে। তার বাড়ি নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকায়। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগে নাম থাকা হারান শেখ, আয়ুবনবি শেখ ওরফে গগন ও মিলন ঘোষ এক সময় ইনসানের সঙ্গে তৃণমূল কগ্রেস করত। হারান শেখ এক সময় বেগপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও ছিল। পরে ইনসানের সঙ্গে মতবিরোধ হয়। একইভাবে মিলন ঘোষ ও গগনের সঙ্গেও বিরোধ তৈরি হয় ইনসানের। ফলে লোকসভা ভোটের আগে সকলে বিজেপিতে যোগদান করে। এই নিয়ে এলাকায় ও পাশ্ববর্তী কাকুড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় ইনসানের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে হারান ও গগন গোষ্ঠী। তাদের বিরোধ চরমে উঠেছিল। ইনসান এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা ও ভালো সংগঠকও ছিলেন। গত লোকসভা নির্বাচনে একাই নিজের অঞ্চল থেকে ১০হাজার লিড পাইয়ে দেন দলকে। ক্ষমতা দখলের জন্য তার প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী এই খুন করেছে বলে অনুমান পুলিসের।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে মাধবডিহির আলমপুর গ্রামে খুন হন অনিল মাঝি নামে এক তৃণমূল কর্মী। ওই ঘটনায় এক বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। জেরায় সে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিসের দাবি। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই কালনায় তৃণমূল নেতা খুন হওয়ায় শাসক-বিরোধী চাপানউতোর শুরু হয়েছে জেলাজুড়ে।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রাজকুমার পাণ্ডে অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় তৃণমূলের কিষাণ সেলের সভাপতি ছিলেন। তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় শাসক দলের অন্দরে অস্বস্তি বাড়িয়েছে। তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকায় এব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে, কালনা-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি উমাশঙ্কর সিংহরায় বলেন, বিরোধীরাই ইনসানের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে লড়তে না পেরে তাঁকে খুন করেছে। তৃণমূল নেতার ও কর্মীদের নাম অভিযোগে থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, পুলিস তদন্ত করবে। কেউ দোষী হলে অবশ্যই শাস্তি পাবে।
ইনসানের ভাই রাজীব মল্লিক বলেন, পুলিসের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা চাই, পুলিস সঠিক তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।
বিজেপি জেলা সহ সভাপতি ধনঞ্জয় হালদার বলেন, ওর পরিবারের লোকজনই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বলছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকতে আমাদের কয়েকজন কর্মীকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আমরা তাঁদের পাশে আছি।
পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার ধ্রুব দাস বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।