কর্মপ্রার্থীদের নতুন কর্ম সংস্থানের সুযোগ আছে। সরকারি বা আধাসরকারি ক্ষেত্রে কর্ম পাওয়ার সুযোগ আছে। ব্যর্থ ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিতে সেতু নির্মাণ হচ্ছে। গঙ্গায় জল বেশি থাকায় মাঝে কিছু দিন সেতু নির্মাণের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। তবে তাতে কাজ খুব বেশি পিছিয়ে যায়নি। নির্মাণকারী সংস্থার দাবি, জলের নীচে পিলার তৈরির কাজ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে করতে হয়। পিলারের উপরেই পুরো সেতু দাঁড়িয়ে থাকে। পিলার তৈরির কাজ সফলভাবেই শেষ হয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, ফোর লেনের সেতু তৈরির কাজ শেষ হলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। ফরাক্কা জলাধারের পাশে সেতুটি বহু পুরনো হওয়ায় তার ‘স্বাস্থ্য’র অবস্থা ভালো নয়। এই সেতুর উপর প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। কোনও কারণে সেখানে দুর্ঘটনা হলে দীর্ঘ সময় রাস্তার উপর ট্রাক, বাস বা অন্য যানবাহন দাঁড়িয়ে যায়। দুই বঙ্গের সংযোগকারী সেতু হওয়ায় প্রতিদিনই উপর দিয়ে কয়েক হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। তাই বিকল্প সেতু তৈরির দাবি স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছিলেন।
স্থানীয়রা আরও বলেন, ১৯৭১সাল থেকে পুরনো সেতুটি চালু হয়েছিল। তারপর থেকে সেটি তেমনভাবে সংস্কার করা হয়নি। বেশ কয়েক মাস আগে সেতু সংস্কার করা হয়েছিল। সেসময় যানজটের জেরে স্থানীয়দের নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল। সেতুর একটা লেন দিয়েই ডাউন এবং আপের যানবাহন চালানো হচ্ছিল। ফরাক্কা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বাবলু ঘোষ বলেন, নতুন সেতুটি চালু হয়ে গেলে যানবাহনের অনেক বেশি গতি আসবে। ফরাক্কা থেকে মালদহের দূরত্ব ৩০কিলোমিটার। আমাদের এলাকায় কেউ অসুস্থ হলে তাঁরা চিকিৎসার জন্য মালদহে যান। যানজটের কারণে মাঝেমধ্যে ৩০কিলোমিটার রাস্তা যেতেই প্রায় দু’ঘণ্টা সময় গড়িয়ে যায়। রোগীরা গাড়ির মধ্যেই যন্ত্রণায় ছটফট করেন। ফরাক্কা থেকে বহরমপুরের দূরত্ব অনেক বেশি। সেকারণে অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য মালদহে নিয়ে যাওয়া হয়। নতুন সেতুটি চালু হলে কোনওভাবেই যানজট হবে না। দ্রুত মালদহে পৌঁছনো যাবে। আবার উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে লোকজন দক্ষিণবঙ্গে দ্রুত আসতে পারবেন। কলেজ ছাত্র তথা কালিয়াচকের বাসিন্দা মুজাউদ্দিন শেখ বলেন, আমার মতো অনেকেই মালদহে বিভিন্ন এলাকা থেকে পড়াশোনা করার জন্য ফরাক্কায় আসে। যানজটের কারণে হামেশাই খেসারত দিতে হয়। সেতুর উপর সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। তখন আর এগানো যায় না। পরীক্ষার সময় যানজট হলে মাথা ঠুকতে হতো। নতুন সেতুর খুব প্রয়োজন ছিল। কিছু দিন ধরেই দেখছি সেতু তৈরির কাজ চলছে। কয়েক মাসের মধ্যেই সেতুর পিলার তৈরি হয়ে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সেতু তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নতুনভাবে জমি অধিগ্রহণ করতে হয়নি। ব্যারেজের জমিতেই সেতু তৈরি হচ্ছে। পুরনো সেতু থেকে কিছুটা দূরেই এই কাজ চলছে। নতুন সেতু তৈরি হলে পুরানোটি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। স্থানীয়রা আরও বলেন, যানজটের কারণে ব্যবসারও ক্ষতি হয়। দু’দিক থেকেই ট্রাকে পণ্য পরিবহণ হয়। যানজট হয়ে গেলে লাইন দিয়ে ট্রাকগুলি দাঁড়িয়ে যায়। বিশেষ করে কোনও কারণে দুর্ঘটনা হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়। এক গাড়ির চালক বলেন, সেতুটি সংস্কার করার সময় খুব সমস্যা হয়েছে। একটি লেন দিয়ে দু’দিকের গাড়ি আসত। মাঝখানে কোনও কারণে দুর্ঘটনা হলে আর রেহাই থাকত না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত। চার লেনের সেতু হলে সেই সমস্যা হবে না। কোনও কারণে একটি লেন বন্ধ থাকলেও অন্য পথগুলি খোলা থাকবে। সেগুলি দিয়ে খুব সহজেই যাতায়াত করা যাবে। তখন অনেক বেশি এদিক থেকে ওদিকে পণ্য নিয়ে যাতায়াত করা যাবে। সকলেরই সুবিধা হবে।