ওয়াশিংটন: চেন্নাইয়ে জন্মেছিলেন দুই বোন। নিজেদের সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের যোগ রাখতে কমলা এবং তাঁর বোন মায়ার ‘সংস্কৃত’ নাম রেখেছিলেন তাঁদের মা। ছোটবেলায় কমলার জীবনের অনেকটা অংশ জুড়ে ছিলেন তিনি। তাঁর জীবনে মায়ের প্রভাব কতটা, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের সময় তা জানিয়েছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস। নিজের আত্মজীবনী ‘দ্য ট্রুথ উই হোল্ড - অ্যান আমেরিকান জার্নি’-তেও সে বিষয়ে লিখেছেন। তাঁর কথায়, ‘আমার মা জানতেন যে, তিনি দু’টি কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েকে বড় করে তুলছেন। যে দেশকে তিনি আপন করে নিয়েছেন (আমেরিকা), সেখানে মায়া এবং আমাকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবেই দেখা হবে। তাই আমাদের আত্মবিশ্বাসী ও গর্বিত কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন তিনি।’ কমলার জীবনে তাঁর মায়ের প্রভাবে কথা জানিয়েছেন বোন মায়াও। তিনি বলেন, ‘আমাদের মায়ের ব্যাপারে না জানলে, কমলাকে চেনা যাবে না। মাকে খুব মনে পড়ছে। তবে জানি, মা ও অন্যান্যরা আজ খুব খুশি হয়েছেন।’ শুধু মা নয়, কমলার জীবনে দাদু পি ভি গোপালনের ব্যাপক প্রভাব ছিল। একটি সাক্ষাৎকারে ক্যালিফোর্নিয়ার সেনেটর বলেন, ‘মা ছাড়া আমার জীবনের অন্যতম প্রভাবশালী মানুষ হলেন আমার দাদু। উনি আমার অন্যতম প্রিয় মানুষ ছিলেন।’ মাত্র ১৯ বছরে কমলা হ্যারিসের মা শ্যামলা গোপালন ক্যালিফোর্নিয়ায় স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করতেন তিনি। ২০০৯ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। খুব কম বয়সেই কমলার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। তারপরও মেয়েদের ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আফ্রো-আমেরিকান জীবনধারায় সড়গড় করে তুলেছিলেন।
ওকল্যান্ডে বড় হন কমলা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তারপর আলামেদা কাউন্টির ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিসে কাজ শুরু করেছিলেন কমলা। ২০১৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার সেনেটর হিসেবে শপথ নেন কমলা। হ্যারিস বরাবরই নিজের কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয় দিতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন। নিজেকে বলেন, আপাদমস্তক ‘আমেরিকান’। ২০১৯ সালে ওয়াশিংটন পোস্টকে সেকথা জানিয়েছিলেন কমলা।
মায়ের সঙ্গে দুই বোন কমলা ও মায়া।-পিটিআই