লন্ডন: দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ঘরবন্দি। লকডাউন শিথিল হলেও নিত্যদিনের স্বাভাবিকতায় সেই বাধা থেকেই গিয়েছে। তাই মরশুমের সবথেকে গরমের দিনে আর ঘরে আটকে থাকতে পারেননি মানুষ। করোনার তোয়াক্কা না করে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ডোরসেটের দু’টি সমুদ্র সৈকতকে রীতিমতো ছুটির দিনের পিকনিক স্পট বানিয়ে ফেললেন তাঁরা। ভিড়ে ঠাসা বর্নমাউথ ও ক্রাইস্টচার্চ সৈকত দেখলে মনেই হবে না যে, কোভিডের হানায় ব্রিটেনে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩ হাজার ২৩০ জন। আক্রান্ত বেড়ে ৩ লক্ষ ৭ হাজার ৯৮০ জন। লকডাউনের আগে যেভাবে মানুষ সপ্তাহ শেষের ছুটি কাটাতে বিচে গিয়ে গা এলিয়ে দিতেন, ঠিক সেভাবেই বৃহস্পতিবার দু’টি বিচে ভিড় জমান কাতারে কাতারে মানুষ। সেই ভিড়ের ছবি ভাইরাল হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও সৈকত চত্বর থেকে কোনও মানুষই সরেননি।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক এই ঘটনাকে জনতার দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি এও বলেন, সামাজিক দূরত্বের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা যদি মানা না হয়, তাহলে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এমনকী মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আগামী দিনে সমুদ্রসৈকত বা ওই ধরনের অন্য জায়গাও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন। সৈকতে ওই জন সমাগমের ঘটনাকে স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিস ‘অত্যন্ত বড় ঘটনা’ বলে দাবি করেছে।
এদিকে ইংল্যান্ডের ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমেরিকার বেশকিছু শহরে আরও কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকায় ফের রেকর্ড সংক্রমণ হয়েছে। সতর্কতা হিসেবেই টেক্সাস এবং আরিজোনার লকডাউন কঠোর করার কথা ঘোষণা করেছেন দুই প্রদেশের গভর্নর। একইভাবে সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মেক্সিকোয়। সেদেশে মৃতের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে ভালো খবরও রয়েছে। গত এপ্রিল থেকে রাশিয়ায় নিয়মিত সাত হাজার জনেরও বেশি মানুষ সংক্রামিত হচ্ছিলেন। এই প্রথম রাশিয়ায় একদিনে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজারের নীচে নামল। শুক্রবার রুশ প্রশাসন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ৮০০ জন সংক্রামিত হয়েছেন। একইভাবে পাকিস্তানেও প্রায় এক মাস পর একদিনের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৭৭৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৫৯ জন। সিঙ্গাপুরে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা থাকা ১৩ বছরের বেশি বয়সি সকলকেই করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে সেই কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।