নয়াদিল্লি: আপনি কি অভিযোগকারিণীকে বিয়ে করবেন? ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তকে এমনই প্রশ্ন ছুড়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। মহারাষ্ট্র স্টেট ইলেকট্রিক প্রোডাকশন কোম্পানির টেকনিশিয়ান মোহিত সুভাষ চ্যবনের বিরুদ্ধে এক স্কুল পড়ুয়া নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। স্বভাবতই পকসো আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। নিম্ন আদালতে তার জামিনের আবেদন মঞ্জুর হলেও হাইকোর্টে মোহিতের জামিনের আবেদন নাকচ হয়ে গিয়েছিল। এরপরেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মোহিত। তার আইনজীবী সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, মোহিত সরকারি চাকুরে। তাই গ্রেপ্তার হলে তাঁর চাকরি চলে যেতে পারে। তখনই প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে তার আইনজীবীকে বলেন, মোহিত কি ওই অভিযোগকারিণীকে বিয়ে করতে রাজি আছেন? তাহলে আদালত বিষয়টিকে সহানুভূতির সঙ্গে দেখতে পারে। মোহিত বিয়েতে রাজি থাকলে তাকে সহযোগিতা করতে পারি। কিন্তু, বিয়েতে রাজি না থাকলে জেলে যেতে হবে। চাকরি খোয়াতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা বিয়ের জন্য জোর করছি না। আমরা আপনার মতামত জানতে চাইছি। অন্যথায় আপনি বলবেন, আদালত বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি তাঁর মক্কেলের সঙ্গে কথা বলেই আদালতকে সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। পরে শুনানি শুরু হলে মোহিত শীর্ষ আদালতকে জানায়, ওই মেয়েটিকে বিয়ের জন্য আগেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন সে রাজি হয়নি। কিন্তু এখন তার পক্ষে ওই মেয়েটিকে বিয়ে করা আর সম্ভব নয়। কারণ তিনি ইতিমধ্যেই বিবাহিত। কিন্তু, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এই বিয়েতে রাজি না হলে তাকে জেলে যেতে হবে। চাকরিও খোয়াতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট মোহিতকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এই সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না।
জানা গিয়েছে, মেয়েটি মোহিতের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। একদিন ওই মেয়েটির বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে মেয়েটির বাড়িতে গোপনে ঢোকে মোহিত। মেয়েটির হাত-মুখ বেঁধে তাঁকে ধর্ষণ করে। শুধু তাই নয়, খবর জানালে পরিবারের ক্ষতি করে দেওয়ার হুমকি দেয়। এমনকী মেয়েটির মুখেও অ্যাসিড ছোড়ারও হুমকি দিয়ে বেশ কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করে মোহিত। একদিন মেয়েটি আত্মহত্যা করতে যায়। মা দেখে ফেলায় অবশ্য সেযাত্রা বেঁচে যায় মেয়েটি। মাকে খুলে বলে সব কথা। তারপরই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। মোহিতের মা সেই সময় প্রতিশ্রুতি দেন, মেয়েটির বয়স ১৮ বছর হলেই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে। এমনকী মেয়েটির অশিক্ষিত মাকে একটি কাগজে সই করিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে লেখা ছিল দু’জনের সম্মতিতেই সব কিছু হয়েছে। কিন্তু মেয়েটি ১৮ হওয়ার পরে সেই প্রতিশ্রুতি পালন করেনি ছেলের মা। এরপরেই অভিযোগ দায়ের করে মেয়েটির পরিবার।