বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
কার্যত বারুদের স্তূপের উপর রয়েছে নৈহাটি থানার দেবক গ্রাম। গত ৩ জানুয়ারি এই গ্রামেই একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে প্রায় ৮ কিমি এলাকা। ঘটনার পর পুলিস দেবক গ্রাম সংলগ্ন রামচন্দ্রপুরে কয়েকটি বাড়িতে নামমাত্র তল্লাশি চালায়। তিনটে গাড়িতে বিস্ফোরক দ্রব্য পাচার হওয়া আটকে দেয় এলাকাবাসী। সেগুলিই নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার নৈহাটির ছাইঘাটে বিস্ফোরণ হয়। সূত্রের খবর, দেবক গ্রামে বাড়ি বাড়ি বেআইনি বাজির কারখানা। কার্যত কুটির শিল্পের পর্যায়ে রয়েছে। ১৫০টি বাড়িতে মজুত রয়েছে প্রচুর বিস্ফোরক দ্রব্য। তবে এখনও পুলিস দেবক গ্রামে ঢুকতে পারেনি। ঢুকলেই পুলিসই আক্রমণের মুখে পড়তে পারে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই পুলিস এই মুহূর্তে ঝুঁকি নিচ্ছে না।
দেবক গ্রামে বেআইনি বাজি কারখানা চালানোর কারবার নতুন কিছু নয়। বাম আমল থেকেই রমরমিয়ে চলছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলে নাম লেখান বাজি কারখানার মালিকরা। অভিযোগ, প্রতি কারখানা থেকে শাসক দলের নেতা ও পুলিসের মাসোহারা রয়েছে। তাই বেআইনি কারখানার বন্ধের উদ্যোগ নেয় না কেউই। তবে এই সব বাজি কারখানার আড়ালে যে বোমা তৈরি হত, তা এক প্রকার নিশ্চিত তদন্তকারীরা। এলাকার বাসিন্দারা জানান, দেবক গ্রামে বেআইনি এই কারবার অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত। বিস্ফোরক দ্রব্য সব উদ্ধার হওয়া উচিত। নইলে আবার প্রাণ ঝরবে।
বেআইনি এই বাজি কারখানায় এলাকার প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজে যুক্ত। সরকারি প্রকল্পের কাজ না পেয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বাজি কারখানায় যোগ দেন শ্রমিকরা। সারাদিন কাজ শেষে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা মজুরি মেলে। তবে বাজি কারখনায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর প্রশাসন শ্রমিকদের বিকল্প কাজের জন্য চিন্তাভাবনা করছে। সবকটি বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছেন বারাকপুর পুলিস কমিশনার মনোজ বর্মা।
এদিকে, ১৫০টি বাড়িতে বিস্ফোরক দ্রব্য মজুত নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির সাংসদ অর্জুন সিং বলেন, সবকটি কারখানায় বোমা বানানো হয়। দেবক গ্রাম থেকে বোমা চলে যায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের হাতে। ওই গ্রামে যে বোমা তৈরি হত, তা নৈহাটির বিস্ফোরণেই পরিষ্কার হয়েছে। তৃণমূল এবং পুলিস দেবক গ্রামে বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতে পারবে না।
নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, দেবক গ্রামে ৫০ বছর ধরে বাজি কারখানা চলছে। অনেক মানুষের রুটিরুজি জড়িয়ে রয়েছে। প্রশাসনিকভাবে শ্রমিকদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থার চিন্তাভাবনা চলছে। দেবক গ্রামটি জগদ্দল বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। তাই অর্জুন ভালো জানবেন, ওখানে কী তৈরি হয়। কারণ উনিই তো ওখানে সব তৈরি করাতেন।