বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
উত্তর দিনাজপুরের পুলিস সুপার সুমিত কুমার বলেন, জেলায় অপরাধমূলক কাজকর্ম রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমি এখানে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই জেলার কিছু দক্ষ অফিসারকে নিয়ে এসওজি টিম বানাই। ওই টিমের সদস্যরা খুবই ভালো কাজ করছেন। প্রত্যেকেই সক্রিয় এবং দক্ষ। এটা আমি গর্ব করে এখন বলতে পারি, এসওজি গঠনের পর জেলায় ৩০ শতাংশ ক্রাইম কমাতে সক্ষম হয়েছি। আগামী দিনে এটা আমরা আরও কমিয়ে আনব।
এসওজি টিমের পুলিস অফিসারদের নেতৃত্বে জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে নাকা চেকিং করে গত ন’মাসে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র, কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে কুখ্যাত অপরাধীরা ধরা পড়েছে। অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে এসওজি ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছে। জেলার পুলিস কর্তারা তাই এসওজি’কে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে।
জেলা পুলিসের মানচিত্র অনুযায়ী, এখানে ১৮৭ কিমি জাতীয় সড়ক বিস্তৃত রয়েছে। প্রায় ২০০ কিমি জুড়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সীমানা ঘেরা এই জেলা। দুষ্কৃতীরা অপরাধ করে সহজেই প্রতিবেশী রাজ্য বিহার কিংবা আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে চলে যেতে পারে। জাতীয় সড়ক ধরে দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, শিলিগুড়ি হয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে সহজেই পালানো যায়।
জেলা পুলিসের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত এখানে অপরাধের সংখ্যা ছিল যথেষ্টই বেশি। পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যায় সেসময়ে জেলায় লুট হয়েছিল ২৯টি, খুনের সংখ্যা ৮১টি। অন্যদিকে অনিচ্ছাকৃত খুনের ঘটনা ১৪টি, গোলমাল পাকানোর মতো ঘটনা ৩৩টি হয়েছিল। জেলার মহিলাদের উপর অপরাধের ঘটনা সেসময়ে পুলিস প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। ওই বছর ১০৮টি ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল। সুমিত কুমারের দাবি, এসপি হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার পর তিনি জেলায় অপরাধের ধরন বিশ্লেষণ শুরু করেন। এত বিপুল সংখ্যক অপরাধে লাগাম টানতে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে জেলা পুলিসের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এসওজি গঠন করেন। ওই টিমে অফিসারের পাশাপাশি কনস্টেবলদেরও রাখা হয়। এই দলটি কাজ শুরু করতেই একের পর এক সাফল্য পেতে থাকে। এতে অপরাধের সংখ্যাও কমতে থাকে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের (২০১৯) জুন মাস পর্যন্ত পরিসংখ্যান দেখলেই এটা পরিষ্কার যে কীভাবে অপরাধ কমছে। পুলিসের রেকর্ড বলছে, এই সময়ের মধ্যে একটিও ডাকাতি হয়নি। খুন হয়েছে ৬৩টি, অনিচ্ছাকৃত খুনের ঘটনা হয়েছে চারটি, হাঙ্গামা পাকানোর অভিযোগ ২৮টি নথিভুক্ত হয়েছে। ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৭৩টি।
জেলা পুলিসের দাবি, এসওজি গড়ার পর ডাকাতি প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে খুনের ঘটনায় ২০ শতাংশ এবং হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ৭৫ শতাংশ কমেছে। অন্যান্য অপরাধের ধরনও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।