বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় কদমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুরজিৎ গোস্বামী, স্ত্রী ও সাতমাসের শিশুকে নিয়ে পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামবাজারপাড়া এলাকায় থাকেন। সুরজিৎবাবু জানিয়েছেন, শনিবার রাত দশটা নাগাদ তিনি খাবার কিনতে বাইরের গেটে তালা দিয়ে বেরিয়েছিলেন। আধঘণ্টা পর বাড়ি ফিরে দেখেন, বাড়ির দরজার তালা খোলা, ঘর অন্ধকার, স্ত্রী মাটিতে বেহুঁশ হয়ে পড়ে রয়েছে। শিশুটি চিৎকার করে কাঁদছে। এরপর তিনি চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডেকে স্ত্রীকে শান্তিপুর হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে হুঁশ ফেরার পর তিনি স্ত্রীর কাছ থেকে জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী ঊর্মিলাদেবী রান্নাঘর থেকে শিশুর খাবার নিয়ে বেরনোর সময় হঠাৎ ঘরের সমস্ত লাইট বন্ধ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে কেউ বা কারা তাঁর মুখে রুমাল চেপে ধরে। এরপর তাঁর আর কিছু মনে নেই।
সুরজিৎবাবু বলেন, বাড়িতে ঢোকার দু’টি দরজা বন্ধ থাকলেও সন্ধ্যার দিকে একটি দরজা মাঝেমধ্যে খোলা থাকে। সম্ভবত শনিবার সন্ধ্যায় সেটি খোলা ছিল। দুষ্কৃতী হয়তো সেই সময় ঘরে ঢুকে কোথাও লুকিয়ে ছিল। তাদের হয়তো জানা ছিল, আমি প্রতিদিন রাতে রুটি নিতে দোকানে যাই। আমি প্রতিদিনের মতো এদিনও রুটি কিনতে ঘর থেকে বেরিয়ে ছিলাম। তারপরই দুষ্কৃতীরা আমার স্ত্রীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা ক্লোরোফর্ম জাতীয় কিছু দিয়ে আমার স্ত্রীর মুখ চেপে ধরে। তাতে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। স্ত্রী ও সন্তানের শরীর থেকে সমস্ত সোনার গয়না খুলে নেয়। এছাড়া, আমার ঘরের দু’টি আলমারি উপর থেকে চাবি নিয়ে তালা খোলে। সেখান থেকেও সোনা ও নগদ টাকা নিয়েছে। আমি আসার আগেই গেটের চাবি খুলে চম্পট দেয়। সুরজিৎবাবুর প্রাথমিক অনুমান, খুব পরিচিত লোক ছাড়া এই কাজ কারও করা সম্ভব নয়।
এদিকে, এত বড় চুরির ঘটনা ঘটলেও রবিবার বিকেল পর্যন্ত সুরজিৎবাবু শান্তিপুর থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। এমনকী, পুলিস খবর পেয়ে ওই রাতে তাঁদের বাড়ি ও হাসপাতালে ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সেই সময় পুলিস ঘটনার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানাতে বললেও পরিবারের পক্ষ থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি ওই পরিবারের সদস্যরা। এবিষয়ে সুরজিৎবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে আমার স্ত্রী ও সন্তান অসুস্থ। যে কারণে আমি অভিযোগ জানাতে যেতে পারিনি।
এদিকে, ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত। তাঁদের দাবি, মাস দু’য়েক আগেও এই এলাকায় পরপর চারটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। ফের এই চুরির ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা পুলিসের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনায় ওই পরিবারকে লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়েছে।