কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে লিখেছেন, ২০১৪ সালের ১৫ আগস্ট আপনি যোজনা কমিশন তুলে দিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান গঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। যোজনা কমিশন যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। তার লক্ষ্য ছিল, যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যে সম্পদের বণ্টন। সেই যোজনা কমিশনের আগে ১৯৩৮ সালে জাতীয় যোজনা কমিটি তৈরি করেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা না করে আপনি যেভাবে যোজনা কমিশন তুলে দিলেন, তাতে আমি স্তম্ভিত। আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, যোজনা কমিশনের পরিবর্তে নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ার বদলে নীতি নির্ধারণের দায়িত্বগুলি আন্তঃরাজ্য পর্যদ বা ইন্টার-স্টেট কাউন্সিলের হাতে দেওয়া হোক। এই কাউন্সিল একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই সংস্থা ১৯৯০ সালের ২৮ মে রাষ্ট্রপতির নির্দেশে তৈরি হয়েছে। একইভাবে জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদকে আন্তঃরাজ্য পর্ষদের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম।
মমতা বলেন, দুর্ভাগ্যবশত ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি যোজনা কমিশন তুলে দিয়ে নীতি আয়োগ নামে নতুন প্রতিষ্ঠান গঠিত হল। প্রয়োজন বিচার করে রাজ্যগুলিকে অর্থ বরাদ্দ করার যে ক্ষমতা যোজনা কমিশনের ছিল, তা তুলে দেওয়া হল। রাজ্যগুলির বার্ষিক পরিকল্পনায় সাহায্য করার ক্ষমতার অভাব রয়েছে এই নতুন প্রতিষ্ঠানের। নীতি আয়োগের প্রবীণ কর্তারাই জনসমক্ষে বলছেন, উন্নয়ন খাতে রাজ্যগুলিকে অর্থ জোগানের ক্ষমতা তাঁদের হাতে থাকা উচিত। অর্থ কমিশনের এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাঁর গবেষণাপত্রে সুপারিশ করেছেন, আঞ্চলিক ভারসাম্যের মোকাবিলায় নীতি আয়োগকে আর্থিক ক্ষমতা দেওয়া উচিত, যা যোজনা কমিশনের ছিল। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী (যিনি বিখ্যাত অর্থনীতিবিদও) একই মত দিয়েছিলেন। আগে যোজনা কমিশনে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে সব রাজ্যের মতামত নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করা দরকার। বর্তমান নীতি আয়োগে সেই সুযোগ নেই। আলোচনার অবকাশ নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, নীতি আয়োগের অর্থ বরাদ্দ করার কোনও ক্ষমতা নেই। রাজ্যগুলির পরিকল্পনায় সহায়তা করারও ক্ষমতা নেই তাদের। এমন একটি প্রতিষ্ঠানের মিটিংয়ে যোগ দেওয়ার কোনও মানেই হয় না বলে মনে করেন মমতা। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, সাড়ে চার বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, আন্তঃরাজ্য পর্ষদকে আরও শক্তিশালী করা দরকার। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার পরিবেশ আরও মজবুত হবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি আরও শক্তিশালী হবে। আবারও বলতে চাই, কবরে যাওয়া জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদকে আন্তঃরাজ্য পর্যদের সঙ্গে মিশিয়ে আরও শক্তিশালী করা হোক।
বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার তোলা নিজস্ব চিত্র