বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
বিষ্ণুপুরের অতিরিক্ত বিদ্যালয় পরিদর্শক সঞ্জীব দাস চক্রবর্তী বলেন, বৈতল গার্লস হাইস্কুলের শুন্যপদ আগেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিন একজন গণিতের শিক্ষিকা কাজে যোগ দিয়েছেন। ধাপে ধাপে অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষিকা দেওয়া হবে।
বৈতল গার্লস হাইস্কুলের অতিথি শিক্ষকদের বর্তমান ইনচার্জ সুকুমার কাইতি বলেন, স্কুলে বর্তমানে সাড়ে পাঁচশো ছাত্রী রয়েছে। অতিথি শিক্ষক দিয়ে ছ’টি ক্লাস চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই স্কুল থেকে দু’টি ব্যাচের ছাত্রীরা মাধ্যমিক পাশ করেছে। এবারও ৬৭জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। এদিন এক শিক্ষিকা কাজে যোগ দিয়েছেন। এতে আমরা ভীষণ খুশি। তাঁকে আমরা সাদরে গ্রহণ করেছি।
বৈতলের বাসিন্দা আরমান খাঁ বলেন, আমার মেয়ে বৈতল গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা করে। কিন্তু, কোনও স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। আমরা স্কুলে স্থায়ী ও পর্যাপ্ত শিক্ষক দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়েছি। কিন্তু, তা পূরণ হয়নি। এদিন নতুন একজন শিক্ষিকা স্কুলে যোগ দিয়েছেন। এতে আমরা খুশি। সেই সঙ্গে বাকি বিষয়েও যাতে শিক্ষিকা দেওয়া হয় আমরা তার দাবি জানাচ্ছি।
স্কুলের ছাত্রী টিনা কর্মকার, সুনীতি ঘোষ বলে, নতুন দিদিমণি পেয়ে আমরা ভীষণ খুশি। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। অল্প সময়েই ম্যাডাম আমাদের কাছে খুব প্রিয় হয়ে গিয়েছেন। আশা করি, ম্যাডামের কাছে পড়াশোনার বিষয়ে খুব সাহায্য পাব।
নবনিযুক্ত শিক্ষিকা পৌলমী ঘোষ বলেন, আমার বিষ্ণুপুরে বাড়ি। এদিন স্কুলে যাওয়ার পর ছাত্রী ও অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকা যেভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন তাতে আমি ভীষণ আপ্লুত। স্কুলের পরিবেশটাও খুব সুন্দর। প্রচুর ছাত্রী রয়েছে। ওরা আমাকে একদিনেই খুব আপন করে নিয়েছে। আমিও ছাত্রীদের সঙ্গে নিজের মতো করে কথা বলেছি। একজন শিক্ষিকা হয়ে স্কুলে যোগ দিতে এসে আমাকে এভাবে অভ্যর্থনা জানানো হবে তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। এই দিনটা আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈতল এলাকায় একটি মাত্র হাইস্কুল রয়েছে। সেখানে প্রচুর ছাত্রছাত্রী থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা বাম আমল থেকে এলাকায় একটি পৃথক গার্লস হাইস্কুল স্থাপনের দাবি জানান। তাঁদের দাবি মেনে ২০১১সালে বর্তমান রাজ্য সরকার বৈতলের পাতরপুকুরে একটি গার্লস হাইস্কুলের অনুমোদন দেয়। স্থানীয় বৈতল, যাদবনগর, কসবা, মুরলিগঞ্জ, ধাড়া, বাকাটি, বিক্রমপুর, পাতরপুকুর সহ উত্তরবাড় গ্রামপঞ্চায়েতের ১০-১২টি গ্রামের ছাত্রীরা ওই স্কুলে পড়াশোনা করে। প্রথমে আপার প্রাইমারি হিসেবে চালু হলেও এলাকায় আর কোনও গার্লস হাইস্কুল না থাকায় প্রচুর ছাত্রী ভর্তি হয়। সেজন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে তিন বছর আগে তা মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। ২০১৭সালে ২১জন, পরের বছর ৬১জন ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়। তারা সাফল্যের সঙ্গে পাশও করে। চলতি বছরেও ৬৭জন মাধ্যমিক পড়ুয়া রয়েছে। স্কুল শুরুর সময় থেকে পার্ট টাইম ও অতিথি শিক্ষক দিয়ে চলছে। বর্তমানে ৬জন পার্ট টাইম ও অতিথি শিক্ষক দিয়ে স্কুল চলছে। কিন্তু, তাতে পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পঠনপাঠন চালাতে সমস্যা হচ্ছে। স্কুলে মোট ১৩টি স্থায়ী শিক্ষক পদ থাকলেও তার একটিও এতদিন পূরণ হয়নি। স্থানীয় ও অভিভাবকরা বারবার এবিষয়ে দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু, তা পূরণ হয়নি। বৃহস্পতিবার প্রথম একজন শিক্ষিকা কাজে যোগ দেওয়ায় স্কুলে কার্যত উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়।