গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
এব্যাপারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, গাড়িটি পুরসভার নামে কেনা হয়েছে। শতাব্দী রায়ও ওই গাড়িতে চড়েন। তাছাড়া অশ্বিনীর বিশাল অবস্থা। কলকাতায় বড় বড় ব্যবসা রয়েছে। এটাকে নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করা হচ্ছে। দলের কাউন্সিলারের বয়কটের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমার জানা নেই। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও আমাকে জানাননি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে গাড়ি কেনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারি। তিনি বলেন, আগের গাড়িটি সাত লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ৩৫ লক্ষ টাকা দিয়ে এই গাড়ি আমি কিনেছি। ওই গাড়ি এরাজ্যের মধ্যে প্রথম আমাকেই ডেলিভারি করা হয়েছে। তবে গাড়ি পুরসভার নামে কেনা হয়েছে। আমার নামে নয়। দলীয় কাউন্সিলারদের বয়কটের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি কাউন্সিলারদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করি। তবে হয়তো আমার অজান্তে কোনও ভুল হয়েছে। সেটা সকলে মিলে বসে ঠিক করে নেব। গাড়িতে নীল বাতি লাগানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওটা ফল্স। জ্বলে না। শুধু লাগানো রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে তিনি ওই গাড়ি কেনেন। তাতে ডবল এলসিডি, উন্নত মানের এসি সহ বিলাসবহুল সব ব্যবস্থাই রয়েছে। অভিযোগ, পুরসভার নিজস্ব ফান্ডের টাকায় উন্নয়ন না করে সেই টাকায় ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই গাড়ি কেনা হয়েছে। এমনকী, এবিষয়ে বিরোধীদের সঙ্গে দলের কাউন্সিলারদেরও অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। তখন থেকেই দলীয় কাউন্সিলাররা তাঁর থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে শুরু করেন। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা ছাড়াই কী করে চেয়ারম্যান নিজের একক সিদ্ধান্তে টাকা খরচ করতে পারেন তানিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে দলীয় কাউন্সিলারদের মধ্যে।
এর প্রতিবাদে বোর্ড মিটিংও বয়কট করেছেন ১৪ জন দলীয় কাউন্সিলার। যদিও এব্যাপারে প্রকাশ্যে তাঁরা কেউই মুখ খুলতে নারাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাউন্সিলার বলেন, চেয়ারম্যান কোনও আলোচনা ছাড়াই শহরের উন্নয়নের টাকা থেকে সানঘাটা মোড়ে বিশ্ব বাংলা লোগো করেছেন। যার খরচ দেখানো হয়েছে ৪৫ লক্ষ টাকা। একইভাবে পুরসভায় ঢোকার রাস্তায় ১৫ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে গেট করা হয়েছে। এছাড়া ৭ নম্বর ওয়ার্ড দেখিয়ে পঞ্চায়েত এলাকায় অনেককেই সরকারি বাড়ি দিয়েছেন। তাঁর এই কাজের সঙ্গে আমরা নেই। তাই বোর্ড মিটিংয়ে আমরা যাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।
পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলার সঞ্জীব মল্লিক বলেন, গরিব মানুষের উন্নয়নের টাকায় তিনি ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আধুনিক সুবিধা যুক্ত গাড়ি কিনছেন। তাঁর অভিযোগ, শহরের উন্নয়নের জন্য গত ১০ আগস্ট ফরটিন ফিনান্সের ১ কোটি ৮০ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা আসে। সেই টাকার এখনও পর্যন্ত কোনও হিসেব নেই। চার মাস আগে আমি আরটিআই করি। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত আমাকে উত্তর দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, পুরসভায় সরকারি অর্থ লুট চলছে।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার শুভাশিস চৌধুরী বলেন, ট্রেড লাইসেন্স, বাড়ি বানানোর অনুমতি ও অন্যান্য কর এখন চারগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পুরসভার নিজস্ব ফান্ডে এখন কোটি কোটি টাকা। সেই টাকায় এলাকার উন্নয়ন না করে নিজেদের উন্নয়ন করছেন তৃণমূল নেতারা।