পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
পাশাপাশি, রাজ্যের কয়েকটি জেলা পরিষদের মতো মালদহ জেলা পরিষদও নিজস্ব ছাপাখানা চালু করতে উদ্যোগ নিচ্ছে। মালদহের ইংলিশবাজারের বাগবাড়িতে ওই ছাপাখানা করা হবে। দু’টি ক্ষেত্রেই নাম চূড়ান্ত না হলেও প্রাথমিকভাবে ‘মালদহ চিকেন’ ও ‘মালদহ প্রেস’ নামেই ওই প্রকল্প দু’টিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলা পরিষদের অর্থ স্থায়ী সমিতির সভায় আয় বাড়াতে আরও কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে জেলা পরিষদের নিজস্ব অতিথি আবাসের ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাবও আছে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা গৌর মণ্ডল বলেন, বামনগোলাতে আমরা হ্যাচারি সহ পুরো পোলট্রি ফার্ম করব। সেখানে ডিম বিক্রি থেকে মুরগির মাংস প্রক্রিয়াকরণ করে বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে। ওইটি মূল কারখানা হবে। সেখান থেকে জেলার সর্বত্র সরবরাহ করার জন্যে একটি চেইন তৈরি করা হবে। এছাড়াও বিপণনের আরও কিছু কৌশল নেওয়া হয়েছে। মূলত জেলা পরিষদের নিজস্ব আয় বাড়ানো এবং স্থানীয় শিল্প গড়ার লক্ষ্যে ওই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একটি বাজেট ধরে আমরা কাজ শুরু করছি। এরসঙ্গে অর্থ স্থায়ী সমিতিতে আমরা একটি ছাপাখানা তৈরির প্রকল্প অনুমোদন করেছি। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা পরিষদের নিজস্ব ছাপাখানা আছে। সরকারি বহু নথি আমাদের বেরসরকারি ছাপাখানা থেকে ছাপিয়ে আনতে হয়। সেই কাজ আমরাই করতে পারব। এখান থেকেও একটি আয়ের পথ খুলে যাবে। জেলা পরিষদের অতিথি আবাস সহ ভাড়া দেওয়া ভবনগুলির সংরক্ষণ ব্যয় বাড়ছে। ফলে সামান্য কিছু টাকা বৃদ্ধির কথা ভাবা হয়েছে।
২০১৬ সালে কিছু সময়ের জন্যে মালদহ জেলা পরিষদের দখল পাওয়ার পর থেকেই তদানীন্তন তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড নিজস্ব আয় বাড়ানোর জন্যে প্রস্তুতি শুরু করেছিল। বস্তুত জেলা পরিষদের প্রচুর অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেওয়ার পাশাপাশি পরিষদের নিজস্ব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্যেও প্রচুর টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি প্রকল্পগুলির জন্যে যে বরাদ্দ আসে তাতে সেই নির্দিষ্ট কাজটিই করা যায়। অথচ স্থানীয় উন্নয়নের জন্যে জেলা পরিষদের উপরে প্রচুর চাপ থাকে। এই চাপ সামাল দিতে হয় নিজস্ব তহবিলের টাকা থেকে। জেলা পরিষদের অতিথি আবাস, কিছু বাজার ও মূলত বিভিন্ন ফেরিঘাটের টেন্ডার মারফত কিছু আয় হয়। কিন্তু সেই আয়ে জেলা পরিষদ চাহিদা মোতাবেক উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে গিয়ে আর্থিক সমস্যায় পড়ে। এই অবস্থাকেই নতুন করে জেলা পরিষদ দখলের পর তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড পরিবর্তন করতে চাইছে। সেই কারণে অর্থবর্ষের শুরু থেকে নিজস্ব তহবিল বাড়ানোর উপরে তারা জোর দিয়েছে।
সেই পরিকল্পনার আওতাতেই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, পোলট্রি ফার্ম ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়া ও ছাপাখানা তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। সোমবার অর্থ স্থায়ীসমিতির সভায় বিষয়টি আসার পরেই সদস্যরা একবাক্যে প্রকল্প দু’টি অনুমোদন করে দিয়েছেন। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহের বামনগোলায় ওই মুরগি পালন ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা করা হবে। প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ওই প্রকল্পের জন্যে ধরা হয়েছে। অর্থস্থায়ী সমিতি বিষয়টি অনুমোদন করে দেওয়ার পরে এবার নির্মাণ কাজে হাত দেওয়ার জন্যে কর্তারা তৎপরতা শুরু করেছেন। বামনগোলার মতো প্রত্যন্ত এলাকায় কারখানা করলেও মুরগি ও মাংস সরবরাহের জন্যে গোটা জেলাজুড়ে একটি সুসংহত ব্যবসায়িক চেইন গড়ে তোলা হবে। জেলা পরিষদ কর্তাদের দাবি, সঠিক মূল্যে উচ্চমানের পণ্য সরবরাহ করা হবে। ফলে জনপ্রিয়তা পেতে সময় লাগবে না। একটি ব্র্যান্ড নামে ওই পণ্য বাজারে আনা হবে। পাশাপাশি, একটি আধুনিক মানের ছাপাখানা তৈরির জন্যেও জেলা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মালদহের ইংলিশবাজারের বাগবাড়ির একটি তৈরি পরিকাঠামোকে ওই কাজের জন্যে ব্যবহার করা হবে। ওই ছাপাখানাটিও ব্যাবসায়িক ভিত্তিতে চালানো হবে। দু’টি প্রকল্পকেই বাস্তবে রূপ দিতে ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদে তৎপরতা শুরু হয়েছে।