পড়শির ঈর্ষায় অযথা হয়রানি। সন্তানের বিদ্যা নিয়ে চিন্তা। মামলা-মোকদ্দমা এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেমে বাধা।প্রতিকার: একটি ... বিশদ
জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় বলেন, ফড়েদের উপর নজরদারি রয়েছে। পুলিস মোতায়েন রয়েছে। কিষাণমান্ডি ও ক্রয় কেন্দ্রগুলি এখন ভিড় কম হওয়ার কারণে ধান প্রায় শেষ হয়েছে। তবে সন্ধ্যে হতেই লরি ভর্তি ধান কোথা থেকে আসছে তা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে ফড়েদের যোগসাজশের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
জেলার একাধিক কৃষক বলেন, সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে গেলে অধিকাংশ সময়ই তাঁদের নানাভাবে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কখনও বলা হচ্ছে আবেদনপত্রে ভুল রয়েছে, কখনও বলা হচ্ছে আবেদনপত্র হারিয়ে গিয়েছে, নতুন করে আবেদন করতে হবে এমন হাজারটা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। বার বার ধান বিক্রি করতে গিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। খাদ্য দপ্তরের কর্মীদের এমন অসহযোগিতায় বাধ্য হয়ে কৃষকরা সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে না পেরে খোলা বাজারের ফড়েদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের ফড়েদের কাছে কার্যত যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ কিষাণ খেতমজুর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির জেলা সভাপতি মফিজউদ্দিন মিঁয়া বলেন, সহায়ক মূল্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কৃষকরা ধান বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। তবে ফড়েদের উপর প্রশাসনের নজরদারি আরও বাড়ানো উচিত। এবিষয়ে প্রশাসনে আবেদন জানাব। ভারতীয় জনতা কিষাণ মোর্চার জেলা সভাপতি শঙ্কর দাস লাহা বলেন, আমরা একাধিকবার এসব নিয়ে আন্দোলন করেছি। যে সমস্ত অভিযোগ জানিয়েছি সেগুলির একটিও প্রশাসন খতিয়ে দেখেনি। খাদ্য দপ্তরের একাংশের সঙ্গে ফড়েদের বড় যোগসাজশ রয়েছে। না হলে এই ভাবে কৃষকদের ফেরানো হতো না।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আটটি কিষাণ মান্ডি ও চারটি ক্যাম্প করে রাজ্য সরকার ক্যুইন্টাল প্রতি ১৭৭০ টাকা সহায়ক মূল্যে ধান কিনছে খাদ্য দপ্তর। কৃষিপ্রধান দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়ে ধান কেনা শুরু হতেই ফড়েরা ময়দানে নেমে পড়ে। এনিয়ে রাজ্য সরকার কড়া হতেই ফড়েরা পদ্ধতি পাল্টে নেয়। অভিযোগ উঠেছে খাদ্য দপ্তরের একাংশকে হাত করে ফড়েরা প্রকৃত কৃষকদের সরকারি জায়গায় ধান বিক্রি করতে দিচ্ছে না। খাদ্য দপ্তরের কর্মীরা নানা অজুহাতে কৃষকদের ক্রয় কেন্দ্র থেকে ফেরাতে শুরু করেছে। বাধ্য হয়ে কৃষকরা খোলা বাজারের কমদামে ফড়েদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। অভিযোগ, ফড়েরা গ্রামে গ্রামে টাকার লোভ দেখিয়ে কৃষকদের কাছে জমির কাগজ সংগ্রহ করছে। তা দিয়ে ধান বিক্রির জন্য আবেদন করছে। যাদের নামে আবেদন করা হচ্ছে তাদের ধান বিক্রি করতে যেতে হচ্ছে না। এর জন্য ফড়েদের কাছে খাদ্য দপ্তরের কিছু কর্মী ৫০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধানের পরিমাণের উপর টাকার অঙ্ক নির্ভর করে। ফড়েদের কাছে যাতে কৃষকরা ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয় সেই কারণে কিষাণ মান্ডি ও ক্রয় কেন্দ্রগুলি থেকে প্রকৃত কৃষকদের নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবেদনের করেও কখনও জানানো হচ্ছে তা হারিয়ে গিয়েছে। কখনও বলা হচ্ছে জমির কাগজে ভুল রয়েছে। বাধ্য হয়ে ঋণের টাকা শোধ ও সংসার চালানোর টাকা জোগাড় করতে তড়িঘড়ি কৃষকরা খোলা বাজারের ধান বিক্রি করে দিচ্ছে। বাজার থেকে কম দামে সেই ধান সংগ্রহ করে ফড়েরা সন্ধ্যে হতেই কিষাণ মান্ডি ও ক্রয় কেন্দ্রগুলিতে বিক্রি করতে যাচ্ছে। প্রায় সারাদিন কিষাণ মান্ডি ও ক্রয় কেন্দ্র ফাঁকা থাকলেও সন্ধ্যে হতেই উপচে পড়া ভিড় নজরে আসছে। খাদ্যমন্ত্রী ফড়েদের দাপট রুখতে একধিক বার্তা জেলাগুলিকে দিলেও কেন কোনও ব্যবস্থা প্রশাসনের তরফে নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।