শুক্রবার, 20 জুন 2025
Logo
  • শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫

রাস্তার উপর বিদ্যুতের খুঁটি, পাইকরের সঙ্গে নলহাটির সংযোগকারী রাস্তা যেন মরণ ফাঁদ

মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা মেনে পাইকর ব্লকের মিত্রপুর থেকে নলহাটির সাঁওতালপাড়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিমি পিচের রাস্তা নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে।

রাস্তার উপর বিদ্যুতের খুঁটি, পাইকরের সঙ্গে নলহাটির সংযোগকারী রাস্তা যেন মরণ ফাঁদ

সংবাদদাতা, রামপুরহাট: মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা মেনে পাইকর ব্লকের মিত্রপুর থেকে নলহাটির সাঁওতালপাড়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিমি পিচের রাস্তা নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু রাস্তার মাঝখানে হাইভোল্টেজের বিদ্যুতের খুঁটি থাকলেও তা অপসারণ করা হয়নি। বর্তমানে এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শয়ে শয়ে যানবাহন, সাইকেল, যন্ত্রচালিত ভ্যান চলাচল শুরু করেছে। কিন্তু খুঁটিগুলো মরণফাঁদ হওয়া সত্ত্বেও অপসারণের উ঩দ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিশেষ করে রাতের দিকে রাস্তায় পথ চলা দায় হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের। যে কোনও সময় খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকার মানুষ। 
প্রায় আড়াই বছর আগে মিত্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহেবনগর গ্রামের ক্যানেল পাড় হয়ে হিয়াতনগর, তিরোগ্রাম, রুদ্রনগর, কোপা হয়ে নলহাটির কুখুরা ও সাঁওতাল পাড়া গ্রাম পর্যন্ত নতুন রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থাকে ভাগ ভাগ করে রাস্তা নির্মাণের বরাত দেওয়া হয়। এই রাস্তা মুরারই ও নলহাটি বিধানসভার শতাধিক গ্রামকে কভার করছে। জানা গিয়েছে, মুরারই বিধানসভা এলাকার কাজ শেষ হয়েছে। বাকি রাস্তা নির্মাণের কাজ চলছে। অভিযোগ, এই রাস্তার মাঝখানে রয়েছে বিদ্যুতের হাইভোল্টেজ তারের অনেকগুলি খুঁটি। সেগুলি এক একটি মরণ ফাঁদ। যে কোনও সময় একসঙ্গে কয়েকজনের প্রাণ নিয়ে নিতে পারে এই খুঁটিগুলো।
স্থানীয় সাদেকুল আলম, রেশমি বিবিরা বলেন, রাস্তার মাঝখানে বিদ্যুতের খুঁটি থাকার কারণে বাচ্চারা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। টোটো, যন্ত্রচালিত ভ্যানগুলো প্রায়ই খুঁটিগুলিতে গিয়ে ধাক্কা মেরে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বড় যানবাহনের ধাক্কায় হাইভোল্টেজ তারের বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাশাপাশি বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেবে।
স্থানীয়রা বলেন, রাস্তাটি পাকা হওয়ায় আমাদের চলাচলে সুবিধা হয়েছে। কিন্তু মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি। পথবাতি না থাকায় রাতের দিকে এই রাস্তা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু হাতছানি দেয়। সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদার সংস্থা। রাস্তা নির্মাণের সময় বলা হলেও খুঁটিগুলি সরানো হয়নি। এই কারণে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 
এব্যাপারে পাইকর ব্লকের বিডিও মিন্টু ঘোষাল বলেন, যতদুর জানি রাস্তাটি নির্মাণ করেছে জেলা পরিষদ। রাস্তার মাঝে খুঁটি থাকার বিষয়টি আমি জানি। জেলায় এই নিয়ে কথা বলেছি। যাঁরা রাস্তাটি করেছেন, তাঁরাই ইলেকট্রিক দপ্তরকে অভিযোগ করবে। মানুষের সমস্যার বিষয়টি জেলায় ফের জানাচ্ছি।
অন্যদিকে তৃণমূলের এই ব্লকের সভাপতি আবতাবউদ্দিন মল্লিক বলেন, রাস্তার মাঝে যে ইলেকট্রিক খুঁটি পড়ছে, সেটা ঠিকাদারদের জানানো উচিত ছিল। তাঁরা জানালে এই সমস্যা হতো না। বিষয়টি জেলায় জানাব। জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন, এলাকার মানুষ লিখিত অভিযোগ করলে এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।  
এলাকার মানুষ অবশ্য বলছেন, বিড়ালের গলায় কে ঘণ্টা বাঁধবে বলুন। যিনি অভিযোগ করবেন, পরে তাঁর উপরই নানা আক্রমণ নেমে আসবে। প্রশাসনও তো পারে, রাস্তা সরেজমিনে ঘুরে দেখে ব্যবস্থা নিতে।