সোমবার, 23 জুন 2025
Logo
  • সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

কোন খাতে আইএমএফের টাকা খরচ, প্রকাশের নির্দেশ, ভারতের সুরেই নজরদারি শর্ত পাকিস্তানকে

সতর্ক করেছে ভারত। ভোটদানে বিরত থেকেছে। এই টাকায় স্রেফ জঙ্গি ফান্ডিং হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। তারপরও আর্থিক সঙ্কটের জন্য পাকিস্তানকে ১০০ কোটি ডলারের ঋণ মঞ্জুর করেছে আইএমএফ বা আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। 

কোন খাতে আইএমএফের টাকা খরচ, প্রকাশের নির্দেশ, ভারতের সুরেই নজরদারি শর্ত পাকিস্তানকে

ইসলামাবাদ: সতর্ক করেছে ভারত। ভোটদানে বিরত থেকেছে। এই টাকায় স্রেফ জঙ্গি ফান্ডিং হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। তারপরও আর্থিক সঙ্কটের জন্য পাকিস্তানকে ১০০ কোটি ডলারের ঋণ মঞ্জুর করেছে আইএমএফ বা আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার। ভারত কিন্তু থেমে থাকেনি। সুর চড়িয়েছে লাগাতার। দাবি জানিয়েছে, বিদেশি ঋণের টাকা কোথায় যাচ্ছে, তার নজরদারি চাই। সেই চাপেই এক সুরে গলা মেলাল আইএমএফ। এবং সন্ত্রাস ইস্যুতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানের পায়ে কার্যত শর্তের শিকল পরিয়ে দিল তারা। নির্দেশ দিল, ‘বেল আউট’ ঋণের অর্থ কীভাবে খরচ হচ্ছে, তার খুঁটিনাটির হিসেব প্রকাশ করতে হবে ইসলামাবাদকে। সঙ্গে আরও ১০ দফা শর্ত চাপানো হয়েছে। 
পহেলগাঁও হামলা এবং তারপর অপারেশন সিন্দুর পরবর্তী আবহে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সরাসরি দাবি করেছিলেন, বিদেশি ঋণের টাকা ক্ষতিপূরণের নামে পাকিস্তান পৌঁছে দেবে জঙ্গি তহবিলে। জয়েশ সুপ্রিমো মাসুদ আজহারই পাবেন ১৪ কোটি টাকা। এই প্রেক্ষাপটেই ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ার আগে বস্তুত পাকিস্তানের সামগ্রিক অর্থনীতির উপরই নজরদারির শর্ত দেওয়া হয়েছে। ১৭.৬ লক্ষ কোটির নতুন বাজেটকে পার্লামেন্টে অনুমোদন করানো, বিদ্যুৎ বিল ও ঋণ পরিষেবার ক্ষেত্রে সারচার্জ বৃদ্ধি এবং তিন বছরের বেশি পুরনো গাড়ি আমদানির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার—এমনই কড়া শর্ত পাকিস্তানের উপর চাপিয়েছে আইএমএফ। এছাড়াও অর্থ ভাণ্ডার সতর্ক করে দিয়েছে, ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়লে তার প্রভাব পাকিস্তানের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। সেক্ষেত্রে ঘোষিত কর্মসূচির আর্থিক ও অন্যান্য লক্ষ্যপূরণ নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে। 
এ পর্যন্ত ইসলামাবাদের উপর চাপানো শর্তের সংখ্যা হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে। নতুন শর্তে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে বাজেটের ১.০৭ লক্ষ কোটি টাকা উন্নয়ন খাতে ব্যয় করতে হবে। এর জন্য আগামী জুন পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে শর্ত পূরণ হলে তবেই ঋণের কিস্তি ছাড়া হবে। দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, স্টাফ লেভেল রিপোর্ট শনিবার প্রকাশ করেছে আইএমএফ। 
রিপোর্টে পরবর্তী অর্থবর্ষে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ ২.৪২৪ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি টাকা দেখানো হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বা ২৪ হাজার ১০০ কোটি টাকা বেশি। শাহবাজ শরিফ সরকার এই অঙ্কটাই আড়াই লক্ষ কোটিতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। আইএমএফ কিন্তু সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মর্জিমাফিক কিছুই করতে পারবে না পাকিস্তান। অর্থাৎ, সবটাই থাকবে নজরদারিতে। প্রশাসনিক সংস্কার ও অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য যে পরিকল্পনাই পাক সরকার নিক না কেন, জানাতে হবে আইএমএফকে। বার্তা স্পষ্ট, আন্তর্জাতিক মহল এবার আতশকাচের নীচে ফেলে দিল পাকিস্তানকে। কারণ? সন্ত্রাসের লালন পালন আর চলবে না।