অপারেশন টেবলেই হার্ট স্তব্ধ প্রসূতির, মা-সন্তানকে বাঁচিয়ে মিরাকল এন আর এসে
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ ঠিক কেমন? পাড়ার মোড়ে হোক বা ট্রেনে-বাসে একবার যদি এই গল্প শুরু হয়, ভিড় জমে যায় মুহূর্তে।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
মে ১৩, ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ ঠিক কেমন? পাড়ার মোড়ে হোক বা ট্রেনে-বাসে একবার যদি এই গল্প শুরু হয়, ভিড় জমে যায় মুহূর্তে। ২১ বছর বয়সে সদ্য মা হয়েছেন কুসুম বাসফোরে। তাঁকে যখন চিকিৎসকরা বলছিলেন, ‘কুসুম, আপনি জানেন, অপারেশন থিয়েটারে কী হয়েছিল আপনার? ২ মিনিট যে আপনার নাড়ির গতি (পালস রেট) শূন্য ছিল, জানেন?’ এন আর এস মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা কুসুম তাঁর সরল প্রাণখোলা হাসিতেই উত্তর জানিয়ে দিয়েছেন। কল্যাণী ঘোষপাড়ার বাসিন্দা, তাঁর স্বামী অনুপ বাসফোরে বরং ঘোর কাটিয়ে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারেননি। স্ত্রী ভেন্টিলেটর থেকে বেরিয়ে আসার পর দেখা করার সুযোগ মিলতেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, প্রেমের স্মৃতি সব মনে আছে তো তোমার?’
‘দাদা, কুসুম সবকিছুর উত্তর দিয়েছে। ভালো আছে। হাসছে। নতুন জীবন পেয়েছে। মেয়েটাও দ্রুত সুস্থ হয়ে যাক। ভোলেবাবার কাছে এটাই প্রার্থনা। ডাক্তারবাবুরা নিজের পরিবারের মতোই ওদের খেয়াল রাখছেন।’ অনুপের এই ছিল অকপট উত্তর।
মিরাকল বলে মিরাকল! বুধবার কুসুমকে এন আর এসের গাইনি বিভাগে যখন ভর্তি করা হয়, তখন এসব ‘ঝড়’-এর কোনও পূর্বাভাস ছিল না। প্রাণঘাতী কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি। কিন্তু গর্ভস্থ শিশুর ওজন কম থাকায় ও শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় চিকিৎসকরা দ্রুত সিজারের সিদ্ধান্ত নেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওটি টেবলে তোলার আগে প্রসূতির প্রেশার ছিল ১৩৬/৮৪। কিন্তু ওটি শুরুর সময় আচমকা হু হু করে প্রেশার বাড়তে শুরু করে। হয়ে যায় ২২০/১০০! বমি হয় প্রসূতির। খিঁচুনি শুরু হয়। শরীর ঘামতে শুরু করে। হার্ট পাম্প করাই বন্ধ করে দেয়। নাড়ির গতি হয়ে যায় শূন্য! চিকিৎসকদের মুখ থেকে অস্ফুটে বেরিয়ে আসে দু’টো শব্দ—‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’!
তবে হাল ছাড়েননি বিভাগীয় প্রধান ডাঃ রুণা বল, অধ্যাপক স্বপন দাস প্রমুখ। এখন দ্রুত সিজার করে বাচ্চাকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করতে হবে। কুসুমের ফিরে আসাও শুধু ঈশ্বরের কৃপার উপর ছেড়ে না দিয়ে শেষ চেষ্টা জারি রাখেন তাঁরা। অ্যানাসথেসিওলজিস্ট ডাঃ আসিফ ইকবাল, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অনুভূতি নাগরা শুরু করেন সিপিআর। উঠতে থাকে নাড়ির গতি। জীবনে ফেরেন কুসুম। গর্ভস্থ সন্তানকেও বের করা হয়।
এরপর শুরু হয় অন্য লড়াই! ৪৮ ঘণ্টা ভেন্টিলেটরে ছিলেন নতুন ‘মা’। এখনও ‘নিকু’-তে তাঁর একরত্তি মেয়ে। শনিবার রুণাদেবী যখন গাইনি বাড়ির চারতলায় একটি অপারেশন করছেন, ডাঃ অনুভূতি তখন দ্বিতীয়বার জীবন বাঁচানোর আনন্দ সঙ্গে নিয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলেন, ‘ম্যাডাম, কুসুম ভেন্টিলেটর থেকে বেরিয়েছে।’
মায়ের মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত ধরে নিয়ে এই ধরনের সিজার অতিবিরল। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয় ‘পেরিমর্টেম সিজারিয়ান সেকশন’। কুসুমের প্রাণের টুকরো সদ্যোজাত মেয়েটি মায়ের কাছে ফিরলেই এখন সমস্ত চেষ্টার ষোলো কলা পূর্ণ হবে। সেই জন্যই চলছে লড়াই!
related_post
অমৃত কথা
-
অবিদ্যা
- post_by বর্তমান
- জুলাই 17, 2025
এখনকার দর
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুলাই 16, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুলাই 16, 2025
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুলাই 17, 2025