পেশাদারি ও ব্যবসায়িক কর্মোন্নতি ও ধনাগম যোগ। শারীরিক সমস্যায় মানসিক অশান্তিভোগ। আঘাত লাগতে পারে। ... বিশদ
পল্লবী নেই, এটাই এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার বন্ধুকে চুল্লিতে ঢোকাবে সেটা দাঁড়িয়ে দেখার মতো মনের জোর আমার ছিল না। তাই শেষযাত্রার আগে একবার ওকে দেখতে চেয়েছিলাম। রবিবার ওর নিথর দেহের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হল, ও তখনও কাঁদছে। কাঁদলে ওর থুতনিতে ভাঁজ পরত। একটু ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদত। ঠিক তেমনই যেন অবস্থা ওর মুখের। মনে হয় না, ও নিজে গলায় দড়ি দিয়েছে। আবার এটাও মনে হয় না, সাগ্নিক চক্রবর্তী (পল্লবীর বয়ফ্রেন্ড) ওকে মেরে ফেলতে পারে। ভালোবাসার মানুষকে কেউ কীভাবে মারবে? এটা সত্যিই একটা রহস্য!
২০১৮-র শেষ থেকে পল্লবীকে চিনি আমি। একসঙ্গে কাজ করেছি‘আমি সিরাজের বেগম’ ধারাবাহিকে। আমি, রিয়াজ, আয়েন্দ্রী, অমিতাভ— ওই ধারাবাহিকের কয়েকজন মিলে রি-ইউনিয়ন করেছিলাম একমাস আগে সাউথ সিটিতে। পল্লবীর সঙ্গে ওই শেষ দেখা। সেদিন একটু মনমরা ছিল ও। কী হয়েছিল জানতে চেয়েছিলাম। বলেছিল, ‘কাজের চাপ, সাগ্নিকের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না, ভালো লাগছে না।’ আমি বাড়ি ফিরে সাগ্নিককে মেসেজ করেছিলাম, কীরে আজ এলি না, এলে ভালো লাগত। সাগ্নিক উত্তর দিয়েছিল, ‘বাড়িতে আছি, পরে দেখা করব।’ তার দু’দিন পর সাগ্নিকের স্ট্যাটাসে দেখি, ও আর পল্লবী কোনও একটা হোটেলে গিয়েছিল, তার ছবি।
সাগ্নিককে আমি চিনতাম পল্লবীর সূত্রেই। ওদের দেখা হওয়ার অ্যানিভার্সারি, পল্লবীর জন্মদিন— এমন দু’-তিনটে পার্টিতে সাগ্নিকের সঙ্গে দেখা হয়েছে। ও পল্লবীকে ঘন ঘন সোনার গয়না, আইফোন গিফট করত। সাগ্নিক পেশাগতভাবে কী করে, জানি না। তবে ওর টাকা আছে। প্রচুর খরচ করে। সেটা পল্লবীর টাকায় কি না তা অবশ্য জানি না। ও নাকি ওয়ার্ক ফ্রম হোম করে। কিন্তু কী এমন কাজ যাতে ঘন ঘন দামি গিফট দিতে পারে, এ প্রশ্ন তখনও মনে জেগেছিল। কিন্তু এটা তো আর কাউকে জিজ্ঞেস করা যায় না।
খুব চাপা স্বভাবের ছিল পল্লবী। ব্যক্তিগত জীবন ব্যক্তিগতই রাখত। কখনও কিছু শেয়ার করত না। যদি কিছু জানতে পারতাম, হয়তো সাহায্য করতে পারতাম ওকে। গত শুক্রবার ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়। একজন ইনস্টাগ্রাম ম্যানেজারের খোঁজ করছিল। টাকা দিয়েই রাখতে চেয়েছিল। কারও যদি মাথায় টাকার চিন্তা, ধার শোধ করার চিন্তা থাকে, তাহলে তো এমন বাজে খরচ কেউ করবে না। কোনও কথার সঙ্গে কোনও কথা আর মেলাতে পারছি না এখন।