সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
অ্যাঞ্জেলিনা ইওয়ার্ড ওরফে গওহর জানের জন্ম বৃত্তান্ত থেকে বেড়ে ওঠা, বেনারস থেকে কলকাতায় চলে আসা, মা বড়ি মলকা জানের তত্ত্বাবধানে তাঁর নাচ-গানের তালিম থেকে বারবধূ জীবনে প্রবেশ, সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে দেশ বিদেশে খ্যাতি, জৌলুসপূর্ণ জীবনযাপন, গান রেকর্ডিং, মামলা মোকদ্দমায় জর্জরিত হয়ে শেষ জীবনে অর্থাভাবে করুণ পরিণতি— এইসবই ট্র্যাজিক ভঙ্গিতে দৃশ্যের পরতে পরতে উঠে এসেছে। এর সঙ্গে গওহরের জীবনে প্রেম ও বিশ্বাসঘাতকতার যে লম্বা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, গোটা নাটকে তাও সুন্দর ভাবে বর্ণিত। কখনও তা লম্পট রাজা রূপে, কখনও ছগন, কখন গোলাম আব্বাস রূপে গওহরের বয়ানে মূর্ত হয়েছে।
একাধারে ন্যারেশন, নাচ, গান, অভিনয়ের লাইভ পারফরম্যান্স— অর্পিতার একক উপস্থাপনার কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। দেড় ঘণ্টার বেশি সময়ের একক নাটকটিতে দশটি গান ব্যবহৃত হয়েছে। ‘বাবুল মোরা’ ‘রসকে বুন্দ পড়ে’, ‘ছিপ যারে চান্দনি’, ‘যমুনে এই কি তুমি’, ‘রসকে ভরে তোরে নয়না’, ‘চৈত মাস বোলে রে’-এর সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘কেন চোখের জলে’— গানগুলি অর্পিতা নিজেই মঞ্চে গেয়েছেন। প্রায় এক বছর রাজ্যশ্রী ঘোষের কাছে গানের তালিমের যথাযোগ্য প্রয়োগ কানে ধরা পড়ল। পারফর্মিং আর্টসের সবক’টি ধারাই অর্পিতা এই নাটকে অত্যন্ত পারদর্শিতার সঙ্গে কাজে লাগিয়েছেন। প্রজেক্টটিতে ক্লাসিক্যাল থিয়েটার ফর্মের সঙ্গে কনটেম্পোরারি প্রজেকশনের মেলবন্ধন নতুনত্ব এনেছে। মুম্বইয়ে ইদানীং নাটকে যেভাবে কর্পোরেট সংযুক্তি ঘটেছে, কলকাতায় গওহর জানকে অর্পিতা-অবন্তী সেইভাবেই মঞ্চস্থ করেছেন। নাটকে উর্দু মিশ্রিত হিন্দি টানে বাংলা সংলাপ শুনতে ভালো লাগে। রক্তিম গোস্বামীর নৃত্য নির্দেশনা, জয় সরকারের সঙ্গীত পরিচালনা, অনিরুদ্ধ চাকলাদারের মেকআপের কথা আলাদা করে বলতে হয়। কৌশিক সেনের পরিচালনায় ‘নটীর পূজার’ পর গওহর জান হয়ে দ্বিতীয় বার মঞ্চে অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ের সাফল্য সগর্বে ঘোষিত হল— জি ডি বিড়লা সভাঘরে, রাজ্যপালসহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং অগণিত দর্শকের করতালি ও অভিনন্দনে।