সামাজিক কল্যাণকর্মে সামাজিক স্বীকৃতি আর সন্মান। গৃহ পরিবেশে চাপ। আর্থক প্রগতি বজায় থাকবে। ... বিশদ
সচ্ছল পরিবারের ঝকঝকে সফল, একাকী এক নারী সাইয়ারা এ নাটকের মূল চরিত্র। সে মেয়ে কবিতা ভালোবাসে, ভালোবাসে পুরনো গান! সেই মেয়ে একদা প্রেমে পড়ে বয়সে দ্বিগুণ, বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা এক অধ্যাপকের। পুতুল খেলার শখ মিটলে অধ্যাপক বিয়ে ভেঙে দেন। ধ্বস্ত মেয়েটিকে আগলে রাখে পরিবার। ফের প্রেম। ফের বিয়ে। এবার স্বামী পেশায় চিকিৎসক। কয়েকদিনের মধ্যে বেরিয়ে আসে তথাকথিত শিক্ষিত, প্রগতিশীল সেই পুরুষের দাঁত, নখ! আপত্তি ওঠে সাইয়ারার কাজ, আধুনিক পোশাক পরা নিয়ে। আবার সেই স্বামীই একসময় মত্ত হয় পরকীয়ায়! প্রতিবাদ করলে সাইয়ারার ভাগ্যে জোটে তিন তালাক!
আসলে জুহির এই প্রচেষ্টা ভারতীয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার কাঠামো এবং দ্বিচারিতার অভ্যেসে এক জবরদস্ত হাতুড়ির ঘা! সুযোগসন্ধানী পুরুষের ভণ্ডামির মুখোশ খুলে যায় নাটকের পরতে পরতে। নারী মানেই ভোগ্য এই ভাবনার মূলে ছিটিয়ে দেয় ঘৃণা। চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দেয় ‘বিয়ে’ নামক খেলাটি তৈরি হয়েছে নারীর উপর পুরুষের প্রভুত্ব এবং নিয়ন্ত্রণের তাগিদে। নারীকে বাঁধতে ব্যর্থ হলে বিয়ে ভাঙতে সময় লাগে না পুরুষের। সাইয়ারা তাই উপহাস ছুড়ে দেয়। তার গল্প বুঝিয়ে দেয়, ধনী হোক না নির্ধন— সফল ও স্বাধীন হতে হলে সমাজের সকল স্তরেই নারীদের পেরিয়ে আসতে হয় পুরুষের নির্ধারিত যুক্তিহীন নিয়ম এবং শাসনের বেড়াজাল। সাইয়ারার কাহিনি তাই স্বাধীনতা এবং উত্তরণের কথা বলে। সে কাজে জুহি সফল।
এ থিয়েটারের অন্যতম প্রাপ্তি জুহির অভিনয়। মঞ্চ জুড়ে তাঁর সাবলীল বিচরণ, হাসি, কান্না, অন্য চরিত্রের ভূমিকায় দ্রুত প্রবেশ ও ফিরে আসা অবাক করে! প্রায় চলচ্চিত্রের মতো পরিচ্ছন্ন, ঝকঝকে মঞ্চসজ্জা পেলব অনুভূতি দেয়! তবে কাহিনি নিয়ে আরও একটু ভাবার পরিসর রয়েছে। বিশেষ করে পরিবারকেন্দ্রিক সম্পর্কের জটিল বাঁকগুলি তিনি প্রায় সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন। দ্রুত লাফ দিয়ে গল্প এগিয়েছে আর এই অনায়াস গতিই ক্লাইম্যাক্সের পরিপন্থী হয়ে উঠেছে। ফলে খানিকটা হলেও দুর্বল হয়েছে নাটকের নির্মাণ।