পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক ... বিশদ
স্বাস্থ্যবান কিডনির সঙ্গে আমাদের দেশের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে! অবাক হলেও তথ্যটি ভুল নয়। কীভাবে? অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রসূতিরা কম ওজনের সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন। ফলে জন্মের সময় থেকেই সেই সন্তানের কিডনিতে নেফ্রনের সংখ্যা কম থাকে। যা পরবর্তী সময়ে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মহিলাদের পর্যাপ্ত পুষ্টির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তবেই একজন সুস্থসবল কিডনির অধিকারীকে আমরা ভাবী প্রজন্ম হিসেবে পাব। এছাড়া প্রসূতি ছাড়াও অন্যদের জীবনযাপনে বেশ কিছু রদবদল ঘটাতে হবে। কিডনিকে সুস্থ রাখতে নজর দিতে হবে নানা ক্ষেত্রে।
কী কী দিকে নজর?
• সুষম আহার গ্রহণ করুন। ফাস্ট ফুড, চিপস, অন্যান্য ভাজাভুজি খাওয়ার চল এখন বেড়েছে। এগুলিতে অত্যধিক নুন থাকে। নিয়মিত এই ধরনের খাবার খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। তার প্রভাব কিডনির উপরে পড়ে। আবার অত্যধিক ফাস্ট ফুড খেলে ওজনও বাড়ে যা কিডনি সহ শরীরের সব অঙ্গে কুপ্রভাব ফেলে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া অভ্যেস করুন।
• ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। তা করা সম্ভব নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে। হাতে সময় কম থাকলে অফিস থেকে ফেরার সময় দুটো স্টপেজ আগে নেমে যান। হেঁটে বাড়ি ফিরুন। উপকার পাবেন।
• খুব বেশি কায়িক পরিশ্রমে দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে ও পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এমনকী র্যাবডোমায়োলিসিস নামে একটি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে কিডনির ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে বেশি কায়িক পরিশ্রম করলে কাজের ফাঁকে ওআরএসের জল খাওয়া জরুরি।
• অনেক রেস্তরাঁতেই খাবারকে আকর্ষণীয় করতে রং ব্যবহার করা হয়। খরচ কমাতে বহু জায়গায় শিল্পে ব্যবহৃত রং খাবারে দেওয়া হয়। যা শরীর ও কিডনির জন্য মারাত্মক।
• একই কথা প্রযোজ্য ফল-সব্জির ক্ষেত্রেও। বাজারে বহু সব্জি ও ফলকে টাটকা দেখানোর জন্য রং, রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। সেসব রাসায়নিক কিডনির ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে। তাই সব্জির রং দেখে বিভ্রান্ত হবেন না।
• কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যাও এখন নতুন নয়। এর একটা কারণ জল কম খাওয়া। কম জল খেলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। আমাদের শরীরের প্রতি কেজি ওজন হিসেবে ৫০ মিলিলিটার জল খাওয়া দরকার। সহজভাবে বললে, একজন সুস্থ-সবল মানুষের রোজ অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার জল খাওয়া প্রয়োজন।
• আমাদের দেশে বহু পেনকিলার, অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের দোকান থেকে প্রেশক্রিপশন ছাড়া সহজেই কিনতে পাওয়া যায়। সেগুলি কার্যত মুড়ি-মুড়কির মতো কিনে খাওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধগুলি খেলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। যদি একটানা এগুলো কেউ কিনে খান, তাহলে তাঁর কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ওষুধ খাবেন না।
• বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রস্টেটের সমস্যাও কিডনির অসুখ ডেকে আনতে পারে। কিন্তু এই সমস্যাকে এড়িয়ে গেলে তা ক্রমশ কিডনির উপর প্রভাব ফেলে। আগে এই সমস্যায় অস্ত্রোপচার জরুরি হলেও এখন ওষুধের সাহায্যেই প্রস্টেটের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। তাই এই সমস্যা ফেলে রাখা উচিত নয়।
• ভারতে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যাও খুব বেশি। ডায়াবেটিস হলে প্রথম দু'বছর তা নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। কিন্তু অনেকেই সেই বিষয়টি জেনে-বুঝেও এড়িয়ে যান। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করেন। এতে কিডনি-সহ অন্যান্য অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ জরুরি। একইভাবে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।
• বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া তাদের চরিত্র বদলে ফেলেছে। আর সেগুলি মানবশরীরে নিত্যনতুন সমস্যা তৈরি করছে। কিডনিও সেই প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। তাই জনবহুল এলাকায় যতটা সম্ভব মাস্ক ব্যবহার করুন।