পদার্থ ও রসায়নিক বিদ্যার অনুশীলনে বিশেষ উন্নতি।প্রায় সম্পূর্ণ কাজে বাধা আসতে পারে। বিকেল থেকে মানসিক ... বিশদ
‘ধৈর্য’ জন্মগত দক্ষতা নয়। জীবনের পথে চলতে চলতে ধীরে ধীরে অর্জন করতে হয়। এই ধৈর্য বাড়িয়ে তোলারও নানা পদ্ধতি রয়েছে। শিশুবয়স থেকে ধৈর্যের অনুশীলন শুরু করলে, তা-ই পরে বড় চারিত্রিক গুণ হয়ে দাঁড়ায়। বিদেশে নানা খেলার মাধ্যমে ছোটদের ধৈর্য পদ্ধতিগতভাবে বাড়ানো হয়।
• পালা করে মজা: এমন কিছু খেলা বাছুন, যা মজার কিন্তু পালা করে খেলতে হয়। ফলে শিশুকে নিজের পালা আসার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। সেখানে বিশৃঙ্খল হয়ে কোনও শিশু আগেই লাইন ভেঙে এগিয়ে এলে বা খেলায় অংশ নিতে চাইলে তাদের বোঝাতে হবে, অপেক্ষা করার গুরুত্ব।
• গুলি-চামচ: আমাদের দেশের স্পোর্টস ইভেন্টে গুলি-চামচ রেস খুবই প্রচলিত। এতে দক্ষতার সঙ্গে ধৈর্য বাড়ে।
• বৃষ্টির জল জমানো: ঝিরঝিরে বৃষ্টির সময় একটি জগ বা বোতল জানালার বাইরে রাখুন। ঘরের ভিতর থেকে শিশুকে ওই বোতল বা জগের দিকে নজর রাখতে বলুন। তাঁকে নির্দেশ দিন, যতক্ষণ না পর্যন্ত জগ বা বোতলটি জলে পূর্ণ হয়, ততক্ষণ জানালার কাছে বসে থাকতে। এই জল ভরার সময়টুকু শিশু শুধু বোতল বা জগের দিকেই লক্ষ রাখবে। এতেও শিশুদের ধৈর্যের চর্চা হয়।
• পাজল গেম: জিগস গেমের পাজল ব্লক কিনে দিন শিশুকে। এই পাজল সমাধান করতে অনেক বুদ্ধি ও ধৈর্য লাগে। প্রথমদিকে অসফল হবে শিশু। ধীরে ধীরে খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়বে ও একদিন নিজেই সমাধান করতে পারবে।
• বাগান করা: বীজ রোপন থেকে গাছে ফুল-ফল ধরা— এ বড় সময়সাপেক্ষ বিষয়। ছোটদের যদি এই নেশার প্রতি আকৃষ্ট করতে পারেন তাহলে শুধু পরিবেশই বাঁচবে না, মানসিক বিকাশে ধৈর্যর ঘরেও অনেক নম্বর যোগ হবে।
• চাইলেই মজুত নয়: বায়না শিশুদের চরিত্রগত অভ্যাস। সব শিশুই কমবেশি বায়না করে। তাবলে চেয়েছে বলেই হাতের কাছে দ্রুত সেই জিনিস হাজির করবেন না। যে কোনও প্রার্থিত বিষয়ের জন্য ওকে অপেক্ষা করতে বাধ্য করুন।
তবে শিশুর বাড়াবাড়ি রকমের একাগ্রতার অভাব বা অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি) থাকলে মনোবিদের শরন নিন। নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মানসিক কোনও সমস্যা নেই এমন শিশুদের ধৈর্য বড়দের থেকে অনেক বেশি। বরং বড়দেরই বারবার ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। কিছু নিয়ম মেনে চললে ধৈর্য বাড়বে বড়দেরও।
• যে পরিস্থিতি আপনার হাতে নেই, তা নিয়ে স্ট্রেস তৈরি করবেন না। রাস্তায় জ্যামে আটকে। অফিসে দেরি হচ্ছে। বস কী বলবেন এটা ভেবে আগে থেকেই শঙ্কিত হবেন না। জ্যাম কারও হাতে থাকে না। এটি অফিসের বস না বুঝলে আপনারও তা নিয়ে মানসিক চাপ বাড়িয়ে লাভ নেই। টেনশন করলেই সিগন্যাল সবুজ হবে না।
• নিজের আবেগে রাশ টানুন। দপ্তরে নানা মানসিকতার মানুষ থাকেন। কারও কথায় বা কাজে বিরক্ত হলে বা অপমান করছেন মনে হলে তখনই যেটা বলার ঠান্ডা মাথায় বলুন। পরিস্থিতি খুব জটিল বুঝলে তখনই প্রত্যুত্তর দেবেন না। রাগের মাথায় বললে হয় বেশি বলবেন, নয়তো ভুল বলবেন। বরং ওই সময় জায়গাটি থেকে সরে, চোখ বন্ধ করে বড় বড় শ্বাস নিন ও শ্বাস ছাড়ুন। নিত্য মেডিটেশনের অভ্যাস করুন। তাতে আবেগ নিয়ন্ত্রণে আসে। মাথা শান্ত হয়। পাল্টা উত্তর দেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। মন শান্ত হলে নিজের বক্তব্য জানুন।
• কিছু পরিস্থিতি মনের মতো হয় না। তাদের মেনে নিতে শিখুন। এতে ধৈর্য বাড়ে।
• বর্তমানে প্রায় সকলেই সকাল থেকে রাত নানা ব্যস্ততা রয়েছে। অফিসেও নানা কাজের চাপ থাকে। সব কাজ একসঙ্গে সারতে যাবেন না। এতে মানসিক চাপ তৈরি হয় ও ধৈর্য হারায় মানুষ। একটি কাজ শেষ হলে আর একটি কাজে মনোযোগ দিন।
• সারাদিনের নানা ঘটনা একটি ডায়েরি বা পাতায় লিখে রাখুন। কারও উপর রাগ বা বিদ্বেষ জমলে তাও লিখে রাখুন। ভালো-মন্দ সব কথা লিখলে মন হালকা হয়, স্ট্রেস কমে। আর তার হাত ধরেই হঠকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে দূরে থাকে মানুষ। সার্বিকভাবে ধৈর্য বাড়ে।