ব্যবসার গতি ও বেচাকেনার সঙ্গে লাভও বাড়বে। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। শত্রু সংখ্যা বাড়বে। ... বিশদ
কথা পুরোপুরি ঠিক নয়। বাচ্চারা ভোলে কম, আর অভিভাবকরা যেটা বলছেন সেটা হচ্ছে স্পেসিফিক লার্নিং ডিজঅর্ডার। বাবা-মা যখন এটা বুঝতে পারেন, ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। একেবারে প্রথম ধাপে যদি বিষয়টা নিয়ে অভিভাবকরা সচেতন হতে পারেন, তবে ৪-৫ মাসের মধ্যে তা নিরাময় সম্ভব।
কিন্তু কীভাবে বোঝা যাবে বাচ্চা এই অসুখে ভুগছে? ডাঃ অসীমায়ন নন্দী বলেন, ‘১০০ জনের মধ্যে ১টা বাচ্চার এই রোগ হয়। মূলত ক্লাস ওয়ান বা টুতে পড়া বাচ্চারাই এর শিকার। লোয়ার বা আপার নার্সারির পড়ার ক্ষেত্রে কোনওরকম সমস্যা এদের হয় না। কিন্তু উচু ক্লাসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তা প্রকট হতে থাকে। সেই পড়ার চাপ তখন আর নিতে পারে না ওরা। ফল একটাই। রেজাল্ট ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। ১০০র মধ্যে যে বাচ্চা ৯০ পেত, সেই নম্বর ধীরে ধীরে ৭০-৫০-৩০ হতে থাকে। এই শেষ ধাপে পৌঁছে অভিভাবক বা স্কুল বুঝতে পারেন বাচ্চাটির সাহায্য প্রয়োজন। তখন একেবারে শেষ থেকে শুরু করতে হয় আমাদের। এটাই যদি ৬০ নম্বর পাওয়ার পর আমাদের কাছে নিয়ে আসা হয়, আমাদের কাজ তো সহজ হয়ই, বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও সেটা ভালো।’
ডিসলেক্সিয়া, ডিসক্যালকুলিয়া, ডিসগ্র্যাভিয়া। এই তিনটি জিনিস মিলিয়ে একত্রে বাচ্চাদের গ্রাস করে স্পেসিফিক লার্নিং ডিজঅর্ডার। কারও ক্ষেত্রে একটাই থাকতে পারে, কারও ক্ষেত্রে আবার তিনটেই। অসীমায়নবাবুর মূল্যায়ন, ‘বাচ্চাটি একদম স্বাভাবিক। সে জানে ৪+৪=৮ হয়, কিন্তু পরীক্ষায় সেটা আর লিখে উঠতে পারে না। বারবার অভ্যেস করিয়ে এই সমস্যা কিছুটা মেটানো যায় হয়তো, কিন্তু মূল ইস্যু থেকেই যায়। সেজন্য স্পেশাল এডুকেশন দরকার। যেমন ৪টে পাথরের সঙ্গে ৪টে পাথর রেখে যদি গুনতে বলা হয়, তখন তার কাছে ৪+৪=৮ ধারণাটা পরিষ্কার হয়ে যায়। কারণ, ব্যাপারটি সে হাতেকলমে করছে। সেগুলো স্পর্শ করছে, দেখছে। অনেকের ক্ষেত্রে হয় হাতের লেখার সমস্যা। ঠিক লিখছে, কিন্তু সেটা এক লাইনে আসছে না। উচু-নিচু হয়ে যাচ্ছে। অনেকের আবার দিক বুঝতে সমস্যা হয়। যেমন ধরা যাক, সে জানে কোনটা তার ডানহাত। কিন্তু ডানদিকে ঘুরতে বললে বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। আবার ধরা যাক, কাউকে বলা হল, ৫ নম্বর পৃষ্ঠা খুলে ৩ নম্বর লাইনটা পড়ো। দেখা গেল সে ঠিক উল্টোটা করল। অর্থাৎ, তিন নম্বর পাতা খুলে ৫ নম্বর লাইন পড়তে শুরু করল। অথবা হয়তো সে বুঝতেই পারল না ঠিক কী বলা হচ্ছে। এটা যদি চলতেই থাকে, তবে নিশ্চিতভাবে তার চিকিৎসা প্রয়োজন। এগুলো অভিভাবকদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাচ্চার ভবিষ্যতের স্বার্থে।’