Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

প্রেশার
মহুয়া সমাদ্দার

বাসে বসে প্রথমেই শিপ্রাদিকে ফোন করল মিত্রা। গতকাল থেকে ভীষণ ব্যস্ততায় আর ফোন করা হয়ে ওঠেনি তার। শিপ্রাদি ফোন ধরতেই মিত্রা বলল, ‘দিদি, আমি বাসে আছি। বাসস্ট্যান্ডে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েছিলাম। আর মিনিট পনেরো-কুড়ি লাগবে।’ একটু ভয়ে ভয়েই বলল। কে জানে শিপ্রাদি এতটা দেরি দেখে আবার ‘মিত্রা আর আসবেই না’— এই বলে রিপোর্ট না করে দেন ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টারে অর্থাৎ ডিসিতে। প্রথমদিন দেখেই শিপ্রাদি নামক মহিলাটিকে কেমন যেন লেগেছিল মিত্রার! 
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল বারোটা পাঁচ বাজে। মিত্রা আশা করেছিল শিপ্রাদি বলবেন ডিসিতে তিনি আর পিউ তার জন্য অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু শুনল পুরো উল্টোটা। শিপ্রাদি বলছেন, ‘ঠিক আছে। ধীরেসুস্থে এসো। আমিও জ্যামে আটকে আছি। আর পিউও এখনও আসতে পারেনি। এক্ষুনি ফোন করেছিল।’
কাল রাতেই ফেসবুকে দেখেছে প্রিসাইডিং অফিসারেরা দশটা না বাজতেই সব ঢুকে যাবে ডিসিতে। আর দুপুর বারোটাতেও কি না তাদের প্রিসাইডিং জ্যামে আটকে আছেন! মিত্রার দেরি হওয়ার তবু কারণ আছে। তাতাই ভীষণ কান্নাকাটি করছিল। দশটা থেকে বেরবার চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত এগারোটায় বেরতে পেরেছে তাতাইকে নানারকম বানানো প্রতিশ্রুতি দিয়ে। দিনের বেলাতে একা থাকা কোনও রকমে আয়ত্ত করলেও সাত বছরের তাতাই রাতে মাকে ছেড়ে থাকা মোটেই বরদাস্ত করতে পারে না। মিত্রার নিজেরও কি কম কষ্ট হচ্ছে ছেলেটাকে ছেড়ে আসতে! পুরো দু’দিন ছেড়ে থাকতে হবে। কিন্তু ভোটের ডিউটি বলে কথা! তাও তো মায়ের কাছে তাতাই আছে বলে মিত্রা একটু নিশ্চিন্ত। কিন্তু শিপ্রাদির ছেলে তো অনেক বড়। বাইরে চাকরি করে। তাঁর তো আরও আগে আসা নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথাই নয়। 
ডিসিতে গিয়ে মিত্রার চোখ তো চড়কগাছ। এই এত পোলিং-অফিসার একসঙ্গে! চারদিকে শুধু কালো কালো মাথা আর চিৎকার। সে দেখল বিরাট প্যান্ডেল বানিয়ে ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার বানানো হয়েছে। এখান থেকেই সব প্রিসাইডিং-পোলিং অফিসারেরা ভোটের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার যাবতীয় সামগ্রী সংগ্রহ করবেন। অনেক কষ্টে শিপ্রাদিকে খুঁজে বার করল সে। শিপ্রাদির হাজব্যান্ড তাঁর ভারী ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। শিপ্রাদিকে নিয়ে চেকলিস্ট অর্থাৎ যেখানে সব পোলিং পার্টির নাম্বার এবং বুথের নাম দেওয়া থাকে, সেটা  খুঁজে মিত্রা দেখল গড়িয়ার একটা বড় স্কুলে তাদের বুথ। বুথের পাশে বড় হাতের ‘এ’ লেখা দেখে মিত্রা সহজেই বুঝে গেল তাদের বুথটা অক্সিলিয়ারি বুথ। অর্থাৎ বড় কোনও বুথকে ভেঙে ছোট বুথ বানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোটার সংখ্যাও কম হবে আশা করা যায়। 
এর মধ্যেই পিউ অর্থাৎ সেকেন্ড পোলিং অফিসার এসে গিয়েছে। লাইনে দাঁড়িয়ে প্রথমে থার্মাল গান এবং তারপর একে একে ভিভি প্যাট, ইভিএম, স্যানিটেশন কিট, মেডিক্যাল কিট ইত্যাদি নেওয়ার পর সবকিছু মিলিয়ে নেওয়ার সময় পিউই বিষয়টা তুলল, ‘আচ্ছা, আমাদের থার্ড পোলিং আসবে না?’ সত্যিই তো! মিত্রা ঘড়িতে দেখল আড়াইটে বাজে। মাইকিং করে বলা হচ্ছে— যাঁদের পোলিং পার্সন অ্যাবসেন্ট আছেন, তাঁদের ট্যাগিং শুরু হয়ে গিয়েছে। যেসব পোলিং পার্সন অ্যাবসেন্ট তাঁদের বদলে যাঁরা রিজার্ভে আছেন, তাঁদের নতুন পোলিং অফিসার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে।
মিত্রা আর পিউ দু’জনেই তাদের প্রিসাইডিংয়ের দিকে চেয়ে অবাক হয়ে দেখল, শিপ্রাদি নিশ্চিন্ত মনে কয়েকটা কাগজ এদিক ওদিক ছড়িয়ে বসে আছেন। থার্ড পোলিং নিয়ে তাঁর কোনও মাথাব্যথাই নেই! মিত্রাই পা বাড়াল পোলিং পার্সন ট্যাগিং এবং একই সঙ্গে পুলিস আর ক্যামেরা ট্যাগিংয়ের উদ্দেশ্যে। তাদের যে আসল থার্ড পোলিং ছিলেন তিনি এক অবাঙালি-বয়স্কা। মিত্রা অফিসে গিয়ে থার্ড পোলিংয়ের অ্যাবসেন্সের কথা জানাতেই ওখানকার লেডি অফিসাররা সঙ্গে সঙ্গে রিতা কুমারী অর্থাৎ থার্ড পোলিংকে লাগাতার ফোন করে চলল। কিন্তু নাহ! তিনি ফোন রিসিভ করলেন না। অগত্যা অ্যানাউন্সমেন্ট করে দিলেন, রিজার্ভে যে থার্ড পোলিং অফিসারেরা আছেন, তাঁদের মধ্যে কেউ এসে ইমিডিয়েট যোগাযোগ করুন। কয়েক মিনিটের মধ্যে মিত্রার বয়সিই একটি সুন্দরী মেয়ে চলে এল অফিসে। নাম অন্বেষা। মেয়েটি ব্যাঙ্কে চাকরি করে। কথা বলেই বোঝা গেল মেয়েটি বেশ শিক্ষিতা। মনটা ফুরফুরে লাগছে মিত্রার। তিনজন পোলিং পার্সন-ই প্রায় সমবয়সি। 
অন্বেষাকে নিয়ে এসে মিত্রা দেখল পিউ একা বসে শিপ্রাদির ওলটপালট করে যাওয়া কাগজ গোছাচ্ছে। শিপ্রাদি উধাও। পিউকে জিজ্ঞেস করাতে সে বলল, ‘আমাকে কিছুই বলে যাননি গো! একটু আসছি বলে চলে গেলেন। তাও প্রায় আধঘণ্টা আগে।’ 
ওদিকে বারেবারে মাইকিং করে ‘একশো বাহান্ন-এ’ বুথকে বাসের কাছে চলে যেতে বলা হচ্ছে। কারণ, একই স্কুলে আরও তিনটি বুথ পড়েছে এবং একটা বাসই চারটে বুথের পোলিং পার্সনদের একসঙ্গে নিয়ে যাবে। 
‘এ তো ভালো জ্বালায় পড়া গেল! অফিসে গিয়ে জানাব নাকি? তোমরা কি বলছ?’ পিউ আর অন্বেষাকে জিজ্ঞেস করল মিত্রা। দু’জনেই একসঙ্গে বলে উঠল, ‘এক্ষুনি অফিসে না জানালে এবার আমাদেরও শো-কজ করা হবে।’ 
মিত্রা অফিসের কাছে পৌঁছনোর আগেই শিপ্রাদিকে দেখল মেডিক্যাল টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে। তিনি আর তাঁর হাজব্যান্ড কী সব যেন বোঝানোর চেষ্টা করছেন মেডিক্যাল টিমকে। পিছনে গিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল মিত্রা। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছে! শিপ্রাদি এই শেষ সময়ে ডিউটি কাটানোর শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। প্রেশার বেড়েছে না কী সব যেন বলছেন। মেডিক্যাল টিম এবার প্রেশার মাপার যন্ত্র দিয়ে প্রেশার মাপল। তারপর দু’-একটা ওষুধ শিপ্রাদিকে দিয়ে বলল, ‘প্রেশার সামান্য কিছুটা বেশি আছে আপনার। এই দুটো ওষুধ কিছু খাবার খেয়ে তারপর খাবেন। চিন্তার কোনও কারণ নেই।’ 
শুকনো মুখে শিপ্রাদি বাসের উদ্দেশে চললেন। মিত্রা লক্ষ করল মেডিক্যাল টিম যে ওষুধ দিয়েছে, সেটা পার্সের একপাশে ঢুকিয়ে রাখলেন তিনি। একটা জিনিসও হাতে ধরলেন না। অগত্যা মিত্রারাই সবাই ভাগ করে জিনিস নিয়ে এগিয়ে চলল বাসের দিকে। মিনিট কুড়ি পরেই বাস পৌঁছে গেল ওদের বুথে। ওরা নেমে দেখল স্কুলটার লোকেশন খুব ভালো। ওদের জন্য যে ঘরটা বরাদ্দ ছিল সেটাও বেশ ভালো। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। এই প্রথমবার ভোটের ডিউটি পড়েছে মিত্রার। প্রথম কয়েকটা রাত টেনশনে ভালো করে ঘুমাতে পারেনি সে। কী জানি কেমন ঘর, কেমন ওয়াশ-রুম দেওয়া হবে! কিন্তু এখানে পৌঁছে তার ভয়টা প্রায় কেটে গেল। সবকিছুই বেশ ভালো। ঘরের একপাশে ওদের জন্যে বালিশ, তোষক ইত্যাদিও রাখা আছে। সবাই হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আসতেই শিপ্রাদি বলে উঠলেন, ‘নাও মিত্রা, প্রিসাইডিংয়ের যা যা লেখালিখি আছে শুরু করে ফেল। নইলে কালকে অত পেরে উঠবে না।’
কপাল কুঁচকে মিত্রা বলল, ‘আমি লিখব মানে? প্রিসাইডিংয়ের সব লেখা আমি কেন লিখতে যাব? আমি তো প্রিসাইডিং অফিসার নই! আমি তো ফার্স্ট পোলিং!’
—ট্রেনিংয়ের সময় কী বলেছিল মনে নেই তোমার মিত্রা? 
—কী? 
—বলেছিল না প্রিসাইডিং অসুস্থ হয়ে পড়লে সব দায়িত্ব ফার্স্ট পোলিংকেই নিতে হবে! 
—কিন্তু আপনি তো অসুস্থ নন!
—কে বলেছে আমি অসুস্থ নই? তুমি জানো? আমার ব্লাড প্রেশার কত্ত হাই। আজ যাও একটু চলছি ফিরছি, কাল সকাল থেকে তো আমি আর উঠতেই পারব না। 
—কাল সকালে উঠতেই পারবেন না, সেই কথা আপনি এখনই জেনে গেছেন! বাহ! দারুণ তো! 
—আমার প্রেশার কাল আরও বাড়বে। মেডিক্যাল টিম এসেই আমাকে রিলিজ করে দেবে। মিলিয়ে নিও তুমি। তখন তো সব কাজ তোমাকেই করতে হবে। তার চেয়ে আজকেই শুরু করে দাও তো! কথাগুলো তোমার ভালোর জন্যই বললাম মিত্রা। 
***
ঘড়িতে সন্ধে সাড়ে সাতটা বাজে। পিউ, অন্বেষা, মিত্রা তিনজনই বাইরে বেরচ্ছে কিছু কেক, কোল্ড ড্রিংক ইত্যাদি কেনার জন্য। ঘরে শিপ্রাদি একা আছেন। গেটের সামনে এসে কী মনে হতেই মিত্রা ওদের দু’জনকে তার খাবার কেনার টাকা দিয়ে দিল। তারপর ওদের জন্য বরাদ্দ ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। দরজার বাইরে থেকে সে শুনতে পেল শিপ্রাদি জোরে জোরে কার সঙ্গে যেন কথা বলছেন ফোনে তার শরীর খারাপের বিষয়ে। মিত্রা বাইরেই দাঁড়িয়ে রইল তার ফোনের অডিও রেকর্ডিং অন করে। বলা যায় না পরে কাজে লাগলেও লাগতে পারে। কী বলছেন শিপ্রাদি! মাই গড! 
—আরে হ্যাঁ। হ্যাঁ। সব ঠিক আছে। না না। মাথা খারাপ নাকি! ভোটের ডিউটি থেকে রিলিজ পাব ভেবে গতকাল থেকে প্রেশারের ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। আর এখন খাব! পাগল নাকি? কাল মেডিক্যাল টিম এসে আমাকে বসিয়ে দেবেই। কাজ কে করবে? কেন? ফার্স্ট পোলিং কাজ করবে! ...নাহ! আজ এমনিতেই প্রেশার স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি। আজও ওষুধ খাব না। এবার বুঝতে পারছ তো কাল সকাল থেকে আমার কী অবস্থা হবে! হা হা হা। শিপ্রা সামন্তর বুদ্ধি বলে কথা! আচ্ছা। এখন রাখ। এক্ষুনি চলে আসবে ওরা। বাই।’
***
ঘড়িতে আটটা বাজে। অন্বেষা আর পিউ এখনও ফেরেনি। ওরা বলেছিল বটে রোল-টোল কিছু খেয়ে ফিরবে। এর মধ্যেই রাতের খাবার চলে এলো প্যাকেটে করে। শিপ্রাদি ওয়াশ-রুমে গিয়েছেন। মিত্রা সবার ব্যাগের পাশে খাবার আলাদা করে রেখে ভোটার লিস্টে মেল-ফিমেল গুনে আগামী কাল সকালের জন্যে নিজের কাজ গুছিয়ে রাখল। পিউরাও ফিরে এসে থেকে সব কাগজে স্ট্যাম্প মারার কাজ, দরজায় এন্টার-এক্সিট, নো-স্মোকিং ইত্যাদির জন্যে দেওয়া কাগজ বাইরের দেওয়ালে লাগিয়ে দিল। কাজ করলেন না কেবল শিপ্রাদি। তিনি তাঁর বিছানা পেতে শুয়ে রইলেন চুপচাপ। পিউরাও দু’-একবার শিপ্রাদিকে বলল লেখালিখির কাজ সেরে রাখতে। পাশের সব বুথের প্রিসাইডিংরা তাঁদের কাজ গুছিয়ে রাখছেন। কিন্তু না। শরীর খারাপের অজুহাত দেখিয়ে তিনি একটা কাজও করলেন না দু’-চার জায়গায় নাম সইটুকু করা ছাড়া। 
রাত এগারোটা নাগাদ যে যার প্যাকেটের খাবার সে খেয়ে শুয়ে পড়ল। ভোর চারটে না বাজতেই শিপ্রাদি ছাড়া সবাই উঠে চেয়ার-টেবিল সব সেট করে ড্রেস পরে রেডি হয়ে নিল। পৌনে ছ’টায় শিপ্রাদিকে হাতে-পায়ে ধরে ঘুম থেকে তুলে মক-পোলিংয়ের কাজ শুরু করা গেল কোনওমতে। সাতজন নানা পার্টির এজেন্ট এসেছেন। প্রত্যেক এজেন্টই বেশ কো-অপারেটিভ। কিন্তু তাঁরাও রেগে গেলেন যখন শিপ্রাদির কাছে তাঁদের এজেন্ট-পাস হাজার বার চেয়েও পেলেন না। ভোট শুরুর পরে বেশিরভাগ এজেন্টই তাদের রিলিভার বসিয়ে বাইরে চলে যান। আবার সাড়ে তিনটের আগে চলে আসেন। এই কারণেই এজেন্ট-পাস ভীষণ রকম জরুরি। কিন্তু প্রিসাইডিংয়ের লেখা এজেন্ট পাস না পেয়ে তাঁরা বেরতেই পারছেন না। শিপ্রাদি সমানে বলেই চলেছেন যে, তিনি ভীষণ অসুস্থ। তাঁর পক্ষে কোনও কিছু করাই সম্ভব নয়। এজেন্টদের মধ্যে একজন কোথায় কোথায় ফোন করে বলে দিলেন মেডিক্যাল টিমকে ইমিডিয়েট পাঠাতে। মিত্রাও এরই মধ্যে সুপারভাইজারকে ফোন করে যা জানানোর জানিয়ে দিয়েছে। ঠিক সাড়ে আটটার সময় দু’জন ডাক্তার ও নার্স চলে এলেন মিত্রাদের বুথে। মিত্রা এবারে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। যদিও ভেতরে ভেতরে একটু চাপা উত্তেজনা কাজ করছে। ডাক্তার অনেকক্ষণ ধরে শিপ্রাদিকে দেখলেন।
 নার্স প্রেশার মাপলেন। মিনিট পাঁচেক পরে ডাক্তার বললেন, ‘হার প্রেশার ইজ কোয়াইট নর্মাল। শি ক্যান ডু হার ওয়ার্ক।’ 
শিপ্রাদি অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছেন প্রেশার মাপার যন্ত্রটার দিকে। এটা কীভাবে সম্ভব! কাল ডিসিতেই কত বেশি প্রেশার ছিল। কাল রাতেও ওষুধ খাননি। তাহলে তো প্রেশার আরও বেড়ে যাওয়ার কথা! কিন্তু...
সব এজেন্ট এবার প্রায় একসঙ্গে বলে উঠলেন, ‘ম্যাডাম, এবার তাড়াতাড়ি আপনার কাজ শুরু করে দিন প্লিজ। নইলে আমাদের বুথের ভোট আজ আর শেষই হবে না।’
শিপ্রাদি চারদিকে ছড়িয়ে থাকা কাগজগুলোকে একসঙ্গে গুছিয়ে নিয়ে লেখালিখির কাজ শুরু করলেন। তাঁর দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসল মিত্রা। ভাগ্যিস কাল সবার অ্যাবসেন্সে প্রেশারের ওষুধ দুটো মিশিয়ে দিয়েছিলাম শিপ্রাদির খাবারে! নইলে এখন তাকেই ফার্স্ট পোলিং আর প্রিসাইডিং— দুটো কাজই সামলাতে হতো। থ্যাংক গড! ভেবেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ল সে।
শিপ্রাদি লিখতে লিখতে কী মনে হওয়ায় পাশে রাখা পার্সটা খুলে ওষুধগুলো বের করে অবাক হয়ে দেখলেন, প্রেশারের দুটো ওষুধই একটা করে কম আছে। কপাল কুঁচকে মিত্রার দিকে তাকাতেই সে আবারও একটু মুচকি হেসে পরের ভোটারের নাম ডাকল। শিপ্রাদির ছিল কাল হাই ব্লাড-প্রেশার আর আজ হাই কাজের প্রেশার।  
অঙ্কন: সুব্রত মাজী
26th  May, 2024
ছোট গল্প: একাকিনী
আইভি চট্টোপাধ্যায়

ওই আবার। দরজাটা খুলল মনে হচ্ছে না? খুব আস্তে আস্তে খুলেছে দরজা। যাতে সুকৃতির কানে না আসে আওয়াজটা। কালও এ সময় হয়েছিল আওয়াজটা। এই ভোরের দিকে,  যখন চারদিক ঘুমে অচেতন,  সেই সময়টাই বেছে নিয়েছে। বিশদ

23rd  June, 2024
গুপ্ত রাজধানী: মির্জা গালিবের হাভেলি
সমৃদ্ধ দত্ত

আম তো কমবেশি একইরকম দেখতে! তা আবার এত মন দিয়ে দেখার কী আছে। অধিক ফলবতী গাছের কাছে গিয়ে নুইয়ে পড়া আম ধরে ধরে মির্জা কী দেখছে? বিস্মিত হলেন সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর। একটু আগে তিনি বেরিয়েছেন বৈকালিক ভ্রমণে। বেশিদূর নয়। বিশদ

23rd  June, 2024
আজও রহস্য: স্পেডলিনস ক্যাসেলের ভূত
সমুদ্র বসু

আন্নান নদীর দক্ষিণ তীরে আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যে দুর্গ সেট হল স্পেডলিনস টাওয়ার। এটি একসময়ে ছিল  ডামফ্রিসশায়ার কাউন্টি, আজকের দিনে স্কটল্যান্ডের লকারবি-এর অংশ। ভূত মানে যেমন অশরীরী তেমনই ভূত মানে অতীত। বিশদ

23rd  June, 2024
একটি প্রেমের গল্প
শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ

—তুমি তো দেখছি বাসনটাও মাজতে পার না ভালো করে! হাসতে হাসতে ইংরেজিতে বলেছিল ক্যাথারিন। ইতালির মেয়ে। কলকাতায় এসেছিল গবেষণা করতে কালীপুজো নিয়ে। বিশদ

16th  June, 2024
গুপ্ত রাজধানী: ফিরোজ শাহ কোটলা দুর্গ
সমৃদ্ধ দত্ত

তিমুর ই বেগের মধ্যে সৃষ্টি ছিল না। তার পূর্ববর্তী আরও অনেক শাসকদের মতোই তার আনন্দ ছিল ধ্বংসে। ধ্বংস মানেই লুটপাট। লুট মানেই পাহাড়সমান সম্পদ। যত সম্পদ, তত বড় হবে সেনাবাহিনী। যত বড় হবে সেনাবাহিনী, ততই বেড়ে চলবে সাম্রাজ্য। বিশদ

16th  June, 2024
অতীতের আয়না: গ্রীষ্মকালের পথচলা
অমিতাভ পুরকায়স্থ

উনিশ শতকের কলকাতাবাসী অনেক সস্তায় চাল খেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু গ্রীষ্মের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে মেট্রোর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় ভ্রমণ? উঁহু, সেটা তাদের ভাগ্যে জোটেনি। বিশদ

16th  June, 2024
চাবুক
কাকলি ঘোষ

ছেলেটাকে নিয়ে আর পারে না রঞ্জা। রোজ কিছু না কিছু অশান্তি বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এত বোঝায়! মাঝে মাঝে রাগও দেখায়। তবুও ছেলের সেই একই চাল। কী যে করে একে নিয়ে? এক এক সময় তো ডাক ছেড়ে কাঁদতে ইচ্ছে করে ওর। বিশদ

09th  June, 2024
গুপ্ত রাজধানী: মজনু কা টিলা
সমৃদ্ধ দত্ত

জাহাঙ্গির: হিন্দুদের আরাধ্য পরমেশ্বর আর ইসলামের সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আল্লাহের মধ্যে পার্থক্য কী? বুঝিয়ে বলুন।  বিশদ

09th  June, 2024
আজও রহস্য: মৃত্যুর রাস্তা
সমুদ্র বসু

বৈচিত্র্যময় ভারতবর্ষের বিচিত্র সব জায়গা। যাদের প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব  কিংবদন্তি। সত্যি মিথ্যার বিতর্ক সরিয়ে রাখলে এই কিংবদন্তি যে জায়গার আকর্ষণ বৃদ্ধি করে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। আর সেই সব কিংবদন্তি যদি রহস্য ও অলৌকিক সম্পর্কিত হয় তাহলে কৌতূহলীর অভাব হয় না। বিশদ

09th  June, 2024
গুপ্ত রাজধানী: মখদম সাহিবের তাবিজ রহস্য
সমৃদ্ধ দত্ত

সেই তাবিজটা কোথায়? ওই তাবিজ যদি ইব্রাহিম লোধি পরে থাকতেন, তাহলে কি এত সহজে সমরখন্দ, ফরঘনা, তৈমুর লং আর চেঙ্গিজ খানের সম্মিলিত এক শক্তিশালী পেডিগ্রি থাকলেও জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবরের হাজার দশেক সেনার কাছে লোধি পরাস্ত হতেন? বিশদ

26th  May, 2024
অতীতের আয়না: তপ্ত দিনে তৃপ্তির স্নান
অমিতাভ পুরকায়স্থ

চৈত্রের শেষ থেকেই  ট্রেনে-বাসে, হাটে-বাজারে বা সমাজ মাধ্যমের দেওয়ালে উঠে আসে প্রতিদিন গরমের রেকর্ড ভাঙার আলোচনা। চল্লিশ ডিগ্রি পেরিয়েও আরও একটু উচ্চতা ছোঁয়ার জন্য যেন সকাল থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেন সূয্যি মামা। বিশদ

26th  May, 2024
মহাপাপ
প্রদীপ আচার্য

 

দরদর করে ঘামছিলেন বিজন। প্রায় অন্ধকার ঘরে একা বসে আছেন তিনি। তাঁর মাথাটা নুইয়ে আছে। চিবুক ঠেকে আছে বুকে। চেয়ারে ওভাবে ভেঙেচুরে বসে বসেই একটা ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন তিনি। অপমানিত, লাঞ্ছিত আর কলঙ্কিত বিজনের সামনে এখন এই একটাই মুক্তির পথ খোলা। বিশদ

19th  May, 2024
আজও রহস্য আকাশবাণীর অশরীরী
সমুদ্র বসু

রহস্য, ভৌতিক-অলৌকিক চিরকালই মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বিশ্বাস-অবিশ্বাস, সত্যি-মিথ্যার দ্বন্দ্ব সত্ত্বেও এর কৌতূহল অনস্বীকার্য। আজকে আমরা জানব খাস কলকাতায় অবস্থিত তেমনই এক জায়গার কথা, অতীত  হয়েও যা বর্তমান। বিশদ

12th  May, 2024
অসমাপ্ত
সায়ন্তনী বসু চৌধুরী

মাতৃসঙ্ঘ ক্লাবের সামনে পৌঁছে মার্জিত ও অভ্যস্ত কণ্ঠে ক্যাব ড্রাইভার বলল, ‘লোকেশন এসে গিয়েছে ম্যাডাম।’  বিশদ

12th  May, 2024
একনজরে
প্যারিস ওলিম্পিকসের জন্য ঘোষিত হল ভারতীয় হকি দল। ১৬ সদস্যের স্কোয়াডে অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন হরমনপ্রীত সিং। তাঁর ডেপুটির দায়িত্বে হার্দিক সিং। মোট পাঁচজন প্লেয়ার কেরিয়ারে প্রথমবার এই গেমসে অংশ নেবেন ...

বিদ্রোহের পরদিনই ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা শিরোমণি অকালি দলে। মঙ্গলবার সুপ্রিমো সুখবীর সিং বাদলের অপসারণ চেয়ে সরব হন একাংশ। ...

অবশেষে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। প্রায় ১৪ বছর পর। বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে জড়িয়ে ধরেন স্ত্রী স্টেলা। ...

আগামী ২৭ জুন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে পিএফ দপ্তরের ‘নিধি আপকে নিকট’ কর্মসূচি, জানিয়েছে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন (ইপিএফও)। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

জমি, গৃহাদি বা যানবাহনাদি ক্রয়-বিক্রয়ে লাভ ভালো হবে। কাজকর্মে সুনাম। আর্থিকভাব শুভ। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৯০৮: হেলেন কেলারের জন্ম
১৯৩৯: সুরকার রাহুল দেব বর্মনের জন্ম
১৯৬৪: অ্যাথলিট পি টি ঊষার জন্ম
১৯৮১: চলচ্চিত্রের শিল্প নির্দেশক বংশীচন্দ্র গুপ্তর মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮২.৬৩ টাকা ৮৪.৩৭ টাকা
পাউন্ড ১০৪.২২ টাকা ১০৭.৬৮ টাকা
ইউরো ৮৭.৮৯ টাকা ৯১.০১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭২,০০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭২,৩৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৬৮,৭৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৭,২৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৭,৩৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

১২ আষাঢ়, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪। ষষ্ঠী ৩৪/১৫ সন্ধ্যা ৬/৪০। শতভিষা নক্ষত্র ১৬/৩৮ দিবা ১১/৩৭। সূর্যোদয় ৪/৫৮/১৯, সূর্যাস্ত ৬/২০/৫১। অমৃতযোগ দিবা ৩/৪০ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ৭/৩ গতে ৯/১১ মধ্যে পুনঃ ১২/১ গতে ২/৯ মধ্যে পুনঃ ৩/৩৪ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ প্রাতঃ ৫/৫২ মধ্যে পুনঃ ৯/২৬ গতে ১১/১২ মধ্যে। বারবেলা ৩/০ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ১১/৪০ গতে ১২/৫৯ মধ্যে। 
১২ আষাঢ়, ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪। ষষ্ঠী রাত্রি ৬/৩১। শতভিষা নক্ষত্র দিবা ১/৫৭। সূর্যোদয় ৪/৫৭, সৃর্যাস্ত ৬/২৪। অমৃতযোগ দিবা ৩/৪২ গতে ৬/২৪ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৪ গতে ৯/১ মধ্যে ও ১২/৪ গতে ২/১২ মধ্যে ও ৩/৩৭ গতে ৪/৫৮ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৫/৫৬ মধ্যে ও ৯/২৩ গতে ১১/১৬ মধ্যে। কালবেলা ৩/২ গতে ৬/২৪ মধ্যে। কালরাত্রি ১১/৪০ গতে ১/০ মধ্যে।  
২০ জেলহজ্জ।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
টি-২০ বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল: ইংল্যান্ডকে ১৭২ রানের টার্গেট দিল ভারত

12:07:02 AM

টি-২০ বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল: ১০ রানে আউট অক্ষর, ভারত ১৭০/৭ (১৯.৫ ওভার), বিপক্ষ ইংল্যান্ড

12:03:49 AM

টি-২০ বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল: ০ রানে আউট দুবে, ভারত ১৪৬/৬ (১৭.৫ ওভার), বিপক্ষ ইংল্যান্ড

11:52:40 PM

টি-২০ বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল: ২৩ রানে আউট হার্দিক, ভারত ১৪৬/৫ (১৭.৪ ওভার), বিপক্ষ ইংল্যান্ড

11:50:48 PM

টি-২০ বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল: ভারত ১৩২/৪ (১৭ ওভার), বিপক্ষ ইংল্যান্ড

11:48:10 PM

টি-২০ বিশ্বকাপ সেমি ফাইনাল: বৃষ্টির জেরে বন্ধ ম্যাচ, ভারত ৬৫/২ (৮ ওভার), বিপক্ষ ইংল্যান্ড

10:01:26 PM