কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
‘সায়াং থিয়েটার অ্যান্ড আর্ট’ নাট্যগোষ্ঠীর সাম্প্রতিক প্রযোজনায় উঠে এল সেই নোটবন্দীর প্রেক্ষাপটে এক কঠোর কঠিন বাস্তবগাথা—কিংসুখ। রাতারাতি অচল হল ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট। এক অকল্পনীয় ভয়ঙ্কর সমস্যার মুখোমুখি হল মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। বহুদিনের কষ্টার্জিত জমানো টাকা অচল হয়ে যাওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। দেনার দায়ে আত্মহত্যা, অনাহারে বা টাকা তোলার লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু, নিত্য খবরের শিরোনামে। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে লাগল।
এই নোটবন্দীর প্রভাব পড়ল কিংশুক মুখার্জির উপর। যদিও সে উচ্চবিত্ত সমাজের প্রতিনিধি। এই আঁচ তার লাগার কথাই নয়। কিন্তু লাগল। কেন না, সে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন, সবাই তাকে অনুরোধ করে তাদের গচ্ছিত টাকা বদলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সৎ, দৃঢ়চেতা কিংশুক রাজি হয় না। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা,বজরং শর্মাও চায় তার লাখ লাখ বেআইনি টাকা কিংশুকের মাধ্যমে বদলে নিতে। যথারীতি রাজি হয় না কিংশুক। দুর্নীতি আর নোংরা রাজনীতির বিস্তৃত জালে কিংশুককে আটকে পড়তেই হয়। পরিণতি জেল, হার্ট অ্যাটাক এবং তার শেষ অবলম্বন হয়ে ওঠে হুইলচেয়ার।
মায়ের অমতে বিয়ে করার জন্য বহুদিন মায়ের সঙ্গে কিংশুকের কোনও যোগাযোগ নেই। মা অলকা মুখার্জি আজ স্বনামধন্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মা, ছেলের করুণ পরিণতির কথা জানতে পেরে ছুটে আসেন। তাঁর নির্দোষ ছেলের এই অবস্থার জন্য যারা দায়ী, তাদের তিনি কোনওমতেই ছেড়ে দেবেন না। মায়ের শপথের মধ্যে দিয়ে নাটকের সমাপ্তি।
নাট্যকার এবং নির্দেশক অমলেন্দু চট্টরাজের চিন্তাভাবনা প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু অলকনন্দা রায়ের মতো বলিষ্ঠ অভিনেত্রীকে পেয়েও তাঁকে কেন কাজে লাগালেন না, নাটক দেখতে বসে এই কথাটাই বারবার মনে আসে। অহেতুক কিছু চরিত্রের সংযুক্তি না রেখে অলকাদেবীর চরিত্রটির আরও বিস্তারের প্রয়োজন ছিল। চিন্তাভাবনারও দরকার ছিল। আবহ ও মঞ্চসজ্জায় আরও যত্নের প্রয়োজন। তবে নাটকটি উপভোগ্য হয়ে উঠেছে নাম ভূমিকায় সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সাবলীল অভিনয়ে। স্বল্প সময়ের জন্য অলকাদেবীর চরিত্রে অলকনন্দা রায় যথাযথ।
ভালো লাগে গৌরীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বজরং শর্মাকে। বাকিরাও চমৎকার। তবে একই সঙ্গে নাট্যকার, নির্দেশনা, অভিনয়, আবহ, মঞ্চ এতগুলো বিভাগ সামলানোর জন্য অমলেন্দু চট্টরাজের আরও একাগ্র হওয়ার প্রয়োজন।