কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। উপার্জন ভাগ্য ভালো। কর্মে উন্নতির যোগ আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা মিলবে। ব্যবসা ... বিশদ
আসছে বসন্ত দিন। আসছে গ্রীষ্মও। এই সময়টায় বিয়ের লগন তো থাকেই। থাকে নানা ধরনের উৎসব অনুষ্ঠানও। মেয়েদের শাড়ি, গয়না, হেয়ারস্টাইল, মেকআপ নিয়ে যতটা চিন্তাভাবনা হয়, ছেলেদের পোশাক-আশাক বা স্টাইলিং নিয়ে ততটা হত না। আজকের পুরুষরা অত্যন্ত ফ্যাশন সচেতন। তাই তাঁদের নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে শুরু করেছেন ডিজাইনাররা। চলছে ফ্যাব্রিক, কালার, কাট, স্টাইল নিয়ে রকমারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা। শুধু নামীদামি ব্র্যান্ডের ওয়েস্টার্ন ড্রেসেই নয়, ইন্ডিয়ান ড্রেসেও এখন নানান রকম ডিজাইনের খেলা দেখা যাচ্ছে। বাঙালির প্রিয় পাঞ্জাবি নিয়ে বেশ কিছু সংস্থা এক্সপেরিমেন্ট করছে। উত্তর ভারতীয় বন্ধ গলা, রাজস্থানের শেরওয়ানি, পাঞ্জাবের পাগড়ি, দক্ষিণ ভারতের শার্ট-কুর্তা ইত্যাদি মিলেমিশে যাচ্ছে নতুন পুরুষ সম্ভারে। কিছু ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাকও তৈরি হচ্ছে এ প্রজন্মের পুরুষের পছন্দের কথা মনে রেখে। সব মিলিয়ে পাঞ্জাবি আর এখন একান্ত বাঙালির নয়, বলা যায় গ্লোবাল।
আমাদের স্টাইলিংয়ের জগতে প্রথম সারিতে রয়েছেন রজত। কথা হচ্ছিল তাঁর সঙ্গে। এই মুহূর্তে ছেলেদের ফ্যাশন ট্রেন্ড কী জিজ্ঞেস করায় রজত বললেন, এবার স্প্রিং সামারে একরঙা বা টেক্সচারড পাঞ্জাবির সঙ্গে কালারফুল প্রিন্টেড জহরকোট এক নম্বরে থাকবে। ফ্লোরাল প্রিন্ট অরনামেন্টাল প্রিন্ট আর কিছু ক্ষেত্রে জিওমেট্রিক প্রিন্টের জ্যাকেট বা জহর কোট বাজার দখল করবে।
আর প্রিন্টেড পাঞ্জাবি?
রজত বললেন, আমি ছেলেদের স্টাইলিংয়ের দায়িত্বে থাকলে তাঁদের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কথা বলি। দেখেছি এখনও, ইয়ং জেনারেশনের খুব স্টাইলিশ ছেলেদেরও প্রিন্টে বেশ ফোবিয়া আছে। প্রিন্টকে অনেকেই মেয়েলি বলে এড়িয়ে চলতে চান। তাই প্রিন্টেড শার্ট বা পাঞ্জাবির দিকে সাধারণত ছেলেরা হাত বাড়াতে চান না। কিন্তু প্লেন বা টেক্সচারড একরঙা পাঞ্জাবির সঙ্গে জ্যাকেটটি প্রিন্টেড হলে তাঁদের আপত্তি নেই। নিশ্চিন্তে হাত বাড়াচ্ছেন তাঁরা।
কিন্তু বিয়ের সময় তো বাঙালি ঘরানার ধুতি-পাঞ্জাবি ছাড়া গতি নেই। তাঁতের ধুতি আর গরদের পাঞ্জাবি না পরলে কি বাঙালি বরকে ভালো লাগে? রজত এ কথা স্বীকার করে নিয়ে বললেন, একদম ঠিক। কিন্তু আজকাল বর শুধু বিয়ের দিনই সাজে না। বিয়ের আগে ব্যাচেলারস পার্টি, মেহেন্দি, আইবুড়ো ভাত, বিয়ের পরে হাতে ভাত, রিসেপশন ইত্যাদি প্রতিটি দিনের জন্য মেয়েদের মতো ছেলেরাও নতুন পোশাক খোঁজেন, কেনেন। এছাড়া ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বা বন্ধুর বিয়েতে যাওয়ার জন্য মেয়েরা যেমন নতুন শাড়ি বা ঘাঘরা কেনেন, ছেলেরাও তেমনই কুর্তা, শেরওয়ানি, জ্যাকেট জহরকোট কেনেন। সবসময় তো ধুতি পরে স্বচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করা মুশকিল। তাই এখন রেডিমেড ধুতির পাশাপাশি ধোতি-প্যান্ট, পাতিয়ালা পাজামা অনেকে চাইছেন। এছাড়া চুড়িদার তো পাঞ্জাবির অন্যতম জুড়িদার। নাচা-গানা-পার্টিতে চুড়িদার-পাঞ্জাবি-ওয়েস্ট কোট সেটের কম্বিনেশন ইয়াং জেনারেশনের ছেলেদের এক নম্বর পছন্দ।
আজ আমাদের দুই মডেল শুভঙ্কর ও আমন পরেছেন বেঙ্গালুরুর নামী ডিজাইনার ঈশানের পোশাক। কথা হচ্ছিল ডিজাইনার ঈশানের সঙ্গে। আমাদের এই গ্রীষ্মপ্রধান দেশে স্প্রিং সামার কালেকশনে জ্যাকেট কি ভালো চলবে মনে হয়?
ঈশান দৃঢ় স্বরে জানালেন, চলবে। কারণ এটা তো সবসময় পরার পোশাক নয়। উৎসব অনুষ্ঠানে পরার পোশাক। বেশিরভাগ উৎসব বাড়িই এখন এয়ারকন্ডিশনড। আর তা যদি নাও হয়, তাহলেও অসুবিধে নেই। কেননা ঈশানের জ্যাকেট, জহরকোট, ওয়েস্ট কোট সবই পিওর কটন ফ্যাব্রিকে তৈরি। তাই গরম হবে না। আর উজ্জ্বল রঙের লিনেন-কটনে তৈরি পাঞ্জাবিগুলোও সামার কুল।
শেষ প্রশ্ন ছিল নামী মেকআপ আর্টিস্ট কৌশিকের কাছে। ছেলেদের তো মেকআপ করার তেমন ব্যাপার নেই হেয়ার স্টাইল কেমন হলে ভালো হয়?
মিষ্টি হেসে কৌশিকের জবাব, ছেলেদের মেকআপের ব্যাপার না থাকলেও স্কিন কেয়ারের ব্যাপার আছে। গরমে ত্বকে নানারকম র্যাশ, ব্রণ হয়। নিয়মিত ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে। ওয়াটার বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। দিনের জন্য চাই সানস্ক্রিন লোশন। উৎসব অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে পারফিউম আর ঠোঁটে লিপ বাম কিন্তু মাস্ট। ক্ল্যাসিক নিট হেয়ার স্টাইলই এবারের স্প্রিং সামার স্পেশাল। পার্ক হোটেলে ফোটোশ্যুট শেষে মনে হল, সত্যিই বসন্ত এসে গেছে।