দীর্ঘদিনের আটকে থাকা কর্মে সফলতা। ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগের প্রচেষ্টায় সফলতা। ভ্রমণ যোগ আছে। ... বিশদ
আত্মৈব হ্যাত্মনো বন্ধুরাত্মৈব রিপুরাত্মনঃ।।
—‘নিজের চেষ্টায় উঠে দাঁড়াও, নিজেকে অধোগামী করোনা, কারণ কেবল তুমিই তোমার বন্ধু এবং তুমিই তোমার শত্রু।’
এটি বিস্ময়কর উক্তি, কারণ আমাদের প্রবণতা নিজের দুঃখকষ্টের জন্য অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো। আজ, বিশেষত এই আধুনিক সভ্যতায়, এই প্রবণতা মানুষকে অষ্টপ্রহর গ্রাস করে রয়েছে। ফলে আমার বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী কে? কেন? আমার বাবা অথবা মা, অথবা সমাজ অথবা ঈশ্বর—এই ধরনের উত্তরই আমরা দিয়ে থাকি। সব দোষ অন্যের উপর চাপিয়ে এটা জাহির করতে চাই যে, ‘আমি নিজে কোন কিছুর জন্যই দায়ী নই’। এমনকি শিশুরাও আজকাল বলে, যদি তাদের কাজে কিছু দোষ-ত্রুটি থাকে, তবে তার জন্য দায়ী তাদের বাবা-মা। ‘আমি নির্দোষ, অতএব আমার ওপর দোষ চাপানো কেন?’—এই হচ্ছে তাদের মনোভাব। কিন্তু এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি বর্জন করে বরং এই নতুন ধারণা পোষণ করা হিতকর—উদ্ধরেদ্ আত্মনাত্মানম্, ‘নিজেই নিজেকে উদ্ধার করো’। ধরা যাক, অল্প বয়সে আপনি কোন দুর্ব্যবহার পেয়েছিলেন। কিন্তু আপনি যদি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন, তাহলে সেই কুপ্রভাবকে আপনি কাটিয়ে উঠতে পারেন। সেই ইতিবাচক মানসিকতাটি কীঃ ‘নিজেই নিজেকে উদ্ধার করব’—এই ভাব। অতএব, নিজেই নিজেকে টেনে তুলুন, সর্বদা অন্যের কাছ থেকে ধাক্কা খাওয়ার দরকার নেই। ভাবুন—‘আমার এই দুর্ভাগ্য হয়েছিল; তার জন্য আমি দুঃখকষ্টও পেয়েছি; কিন্তু এখন আমাকেই তা কাটিয়ে উঠতে হবে এবং সে শক্তি আমার মধ্যে আছে’। এই আত্মবিশ্বাস জাগলে ঐ অশুভ চিন্তাগুলি আপনার থেকেই দূর হয়ে যাবে। কিন্তু তা না করে কেবল অন্যদের উপর দোষারোপ! কোন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করুন: ‘কেন তুমি পরীক্ষায় ফেল করলে?’ উত্তর পাবেন—‘শিক্ষক পড়ান নি!’ অবশ্য আজকের দিনে ভারতবর্ষে একথা সত্য যে, সব শিক্ষক ভালো পড়ান না; অথবা প্রশ্নপত্র অত্যন্ত কঠিন হয় এবং যেসব প্রশ্ন পরীক্ষায় আসে, সেগুলি ক্লাসে ঠিকমতো পড়ানো হয় না। কথাগুলি কমবেশি হয়তো যুক্তিযুক্ত; কিন্তু পরীক্ষায় ব্যর্থতার আরও একটি কারণ আছে—‘হয়তো আমি ভালোভাবে পড়িনি।’ এই উত্তরটি কেউই দেয় না। এই উত্তরটিই দেওয়া ভালো: ‘আমি ভালোভাবে পড়িনি। সব দোষ আমি নিজে নিচ্ছি। আমি নিজেকে সংশোধন করব।’ এইরকম ভাবনা আপনাকে শক্তি জোগাবে, নিজের যোগ্যতা সম্পর্কে আপনাকে সচেতন করে তুলবে।
অতএব, ন আত্মনম্ অবসাদয়েৎ, ‘নিজেকে নীচে টেনে নামাবেন না।’ কেন? আত্মা এব হি আত্মনো বন্ধুঃ, ‘মানুষ নিজেই নিজের বন্ধু’ এবং আত্মা এব রিপুঃ আত্মনঃ, ‘মানুষ নিজেই নিজের শত্রু’। কী অদ্ভুত ভাব! আত্মা এব হি আত্মনো বন্ধুঃ আত্মা এব রিপুঃ আত্মনঃ। খাঁটি কথা, ‘আমি নিজেই আমার বন্ধু, আবার আমি নিজেই আমার শত্রু।’ এমনকি যদি কেউ আমাকে কষ্ট দেয়, আর আমি যদি তা মনে না রাখি, তবে তা আমাকে আদৌ বিচলিত করবে না।