মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক ... বিশদ
এসব কথা ভাবতে ভাবতেই দৃষ্টিটা আমার প্রসারিত হল লনের চারপাশের ফুলগাছগুলি ও আশ্রমের অন্যান্য তরুলতার দিকে। সব যেন বড় জীবন্ত মনে হচ্ছে আজ। ওদের মধ্যেও তো রয়েছে চেতনা! না কি ঠাকুরের দিব্য প্রাণস্পন্দনে আজ ওরা এমন প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে! আশ্রমের এসব পুষ্প লতা বৃক্ষ তো দেখছি রোজ। কোন দিন তো এমন চিন্তা এমন অনুভূতি জাগেনি মনে! ভাবতে বড় ভাল লাগছে। এমনি একটা দিব্য মিষ্টি পবিত্র আবেশে আবিষ্ট হয়ে আছে মনটা কতক্ষণ জানি না। হঠাৎ কে যেন কানের পাশ দিয়ে বলে গেল—ঠাকুর বেরিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে সম্বিৎ ফিরে পেলাম। পেছন ফিরে বারান্দার দিকে তাকাতেই দেখি—সত্যিই তো ঠাকুর এসে দাঁড়িয়েছেন বারান্দায়। কয়েকটি ভক্তের সঙ্গে আলাপরত। ছুটে গিয়ে ঠাকুরের চরণে প্রণাম নিবেদন ক’রে দাঁড়ালাম তাঁর সামনে।
কি অপূর্ব জ্যোতির্ময় দেবতনু! তেমনি নয়নাভিরাম শ্রীঅধরের প্রসন্ন হাসির দিব্যদ্যুতি! আমার দিকে প্রসন্ন দৃষ্টি মেলে বললেন শ্রীঠাকুর সস্নেহে—“সব কিছুকে চেতন বলে যত অনুভব করবে তত নিজের চৈতন্য সত্তায় প্রতিষ্ঠিত হবে।”
ঠিক এইরকম একটি বাণী আছে শ্রীঠাকুরেরই বাণীসঞ্চায়ন গ্রন্থ ‘বেদছন্দা’র বুকে—“সৃষ্টির কোন কিছুকে জড়ের প্রকাশ বা জড় সত্তা বলা মানেই নিজের চৈতন্য সত্তাকে বঞ্চিত করা। সমস্ত জিনিষের পেছনে বা সমস্তর মধ্যে যত চৈতন্য সত্তার প্রকাশ দেখতে পাবে, যত চেতন বলে বিশ্বাস করবে, ততই নিজে চৈতন্য সত্তায় প্রতিষ্ঠিত হবে।” ঠাকুরের কাছে সবে আসা-যাওয়া করছি। বেদছন্দা তখনও হাতে আসেনি। কাজেই এ বাণীটি তখনও চোখে পড়েনি, জানতাম না এটার কথা। আজ এই বাণীটি যতবার পড়ি, আর ভাবি, ততবারই স্মরণে আসে সেদিনের সেই অনুভূতির কথা আর অন্তরে শুনি শ্রীঠাকুরের শ্রীমুখে উচ্চারিত সেদিনের সেই বাণীর অনুরণন—সব কিছুকে যত চেতন বলে অনুভব করবে তত নিজের চৈতন্য সত্তায় প্রতিষ্ঠিত হবে।