মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক ... বিশদ
ঠাকুরের সকালের অধিবেশনে নিত্য পাঠ হত ‘শ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত’। পাঠের পর কথামৃতের বাণীর অপূর্ব দিব্য আলোচনা করতেন শ্রীঠাকুর। ঠাকুরের শ্রীমুখের সেসব দিব্যমধুর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা নিবিষ্ট মনে শুনতেন ভক্তরা। আমার কাছেও খুবই আকর্ষণীয় ছিল ঠাকুরের আলোচনা। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই দেখতাম, আমার মন সবচেয়ে বেশী আকর্ষিত হয়ে পড়ত শ্রীঠাকুরের দেবতনুর ভুবনভোলান দিব্য রূপে। ফলে, ঠাকুর যা আলোচনা করতেন আমার কাছ থেকে তার অনেক কিছুই যেত হারিয়ে। আমি তন্ময় হয়ে প্রায় অপলক নয়নে উপভোগ করতাম ঠাকুরের দেবতনুর দিব্যজ্যোতির্ময় রূপ। সে কি অনির্বচনীয় দিব্য রূপ! সেই অনিন্দ্যসুন্দর দিব্যরূপ দর্শন করতে করতে আমি বিভোর হয়ে যেতাম। তারই ফলে বেশিরভাগ সময় ঠিকভাবে কিছু শোনা হত না তাঁর শ্রীমুখের আলোচনা। ঠাকুরের রূপদর্শনে বিভোর মন বসে বসে ভাবতো—ঠাকুর, তোমার এই যে রূপ এখন দর্শন করছি, এটাই কি সবচেয়ে সুন্দর রূপ, নাকি আরও—আরও সুন্দর রূপ তোমার আছে! আশ্চর্য্য, ততই আলোময় হয়ে প্রকট হত অন্তর্যামী শ্রীঠাকুরের দিব্যরূপ। ঠাকুরের দেবতনুর এই দিব্য জ্যোতির্ময় রূপ প্রসঙ্গেই আমার সতীর্থ বন্ধুবর পশুপতিদা (শ্রীপশুপতি সেনগুপ্ত) একদিন বললেন—ঠাকুরের যদি আরও সুন্দর রূপ দেখতে চাও, তাহলে একটা নির্দিষ্ট সময়ে তোমায় প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে। তাঁর কাছেই জেনেছিলাম কখন কোথায় কিভাবে ঠাকুরের সেই অপরূপ রূপের দর্শন পেতে পারি। ঠাকুরের প্রধান পার্ষদ স্বামী নির্বেদানন্দজী, যাঁর সম্বন্ধে ঠাকুর বলতেন, ‘মানিক আমার বুকের পাঁজর’, আমাদের সেই প্রিয় মানিকজ্যাঠার জন্যই শুধু নির্দিষ্ট ছিল ঐ সময়টি। ঠিক ঝাঁকি দর্শনের মত একটি মুহূর্তের দর্শন দিতেন প্রতিদিন ভোর চারটের সময়। ঠাকুরের এই ক্ষণিক দর্শনটি পাবার জন্য এই মহাতপস্বী প্রতিদিন প্রায় রাত দুটো থেকে নিজের শয্যায় বসে জপ ধ্যান করতেন।