মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক ... বিশদ
দুঃখজনিত প্রলয়েরও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। শ্রীমদ্ভাগবতে শুকদেব গোস্বামী মহারাজ পরীক্ষিৎকে বলছেন, “হে রাজন! শ্রীকৃষ্ণের বিরহে গোপীরা শ্রীকৃষ্ণের চিন্তায় এতই তন্ময় হয়েছিলেন যে, তাঁদের সমস্ত ইন্দ্রিয়গুলির ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায় এবং তাঁরা সম্পূর্ণভাবে তাঁদের দেহের চেতনা হারিয়ে ফেলেন। যেন তাঁরা সমস্ত জড় বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন।” শরীরে বিবিধ সাত্ত্বিক ভাবের মধ্যে স্তম্ভনের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। স্তম্ভনের মাত্রা অনুসারে দেহস্থ প্রাণ বিক্ষুদ্ধ হয় এবং তার ফলে ভগবৎ প্রেমজনিত বিবিধ ভাবের তারতম্য দেখা দেয়। এই দিব্যভাব ধীরে ধীরে বিকশিত হয় এবং এই বিকাশের মাত্রা অনুসারে তাদের ধুমায়িত, জ্বলিত ও উদ্দীপ্ত বলা হয়। এই তিনটি স্তর বহু বর্ষ ধরে উপলব্ধি হয় এবং তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যাপ্ত থাকে। স্তম্ভনের প্রভাব সমস্ত দেহে ব্যাপ্ত হয়, যা অশ্রুপাত বা স্বরভেদে হয় না। অশ্রুপাত ও স্বরভেদ কেবল নির্দিষ্ট স্থানে প্রকাশিত হয়।
অশ্রুপাতের ফলে কখনও কখনও চোখ ফুলে যায় এবং সাদা হয়ে যায়, আর চোখের তারা কেন্দ্রচ্যুত হয়। স্বরভেদের ফলে কখনও কখনও কণ্ঠ রুদ্ধ হয় এবং চরম ব্যাকুলতা দেখা দেয়। এই সাত্ত্বিক ভাবগুলির লক্ষণ বিশেষ কোন অঙ্গে প্রকাশিত হয়, এবং তাদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াও দেখা দেয়; যেমন স্বরভেদের ফলে যখন কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন ঘড় ঘড় শব্দ হয়। এই শব্দের ফলে কণ্ঠ রুদ্ধ হয় এবং বিভিন্নভাবে গভীর মানসিক ব্যাকুলতা দেখা দেয়। এই সমস্ত লক্ষণগুলি রুক্ষ সাত্ত্বিক ভাবের ধূমায়িত অবস্থা, এবং সেগুলি বিভিন্নভাবে প্রদর্শিত হয়।
কখনও কখনও শ্রীকৃষ্ণের মহোৎসবে অথবা ভক্তসমাজে আনন্দমুখর নৃত্য হয়। এই ভাবকে জ্বলিত বলা হয়। শ্রীকৃষ্ণের প্রতি গভীর অনুরাগ ব্যতীত উপরোক্ত এই সমস্ত লক্ষণগুলি প্রকাশিত হতে পারে না। এই সাত্ত্বিক ভাব যখন ধূমায়িত অবস্থায় প্রকাশিত হয়, তখন তা লুকানো যায়। নন্দ মহারাজের গৃহে গর্গ মুনি যখন বৈদিক কর্ম অনুষ্ঠান করছিলেন, তখন তিনি এই লক্ষণগুলি উপলব্ধি করেন। যখন তিনি শুনলেন যে, শ্রীকৃষ্ণ অঘাসুরকে নিধন করেছেন, তখন তাঁর নয়নযুগল অশ্রুপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, তাঁর কণ্ঠস্বর কম্পিত হচ্ছিল এবং তাঁর সমস্ত শরীর ঘর্মাক্ত হয়েছিল। এইভাবে গর্গ মুনির সুন্দর মুখমণ্ডল অপূর্ব শোভা প্রাপ্ত হয়েছিল।