মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক ... বিশদ
জানা যায়, বহু আগে বিন্ধ্য পর্বত থেকে এক সাধু আসেন জামুড়িয়ার ইকরা গ্রামে। তিনিই অষ্টধাতুর দুর্গামূর্তি দিয়ে যান। সেখানে সিংহবাহিনী মা দুর্গাপুর পাশাপাশি রয়েছে মায়ের চার সন্তান কার্তিক গণেশ লক্ষ্মী সরস্বতীও। তখন থেকেই চট্টোপাধ্যায় পরিবারে এই মূর্তির পুজো হয়ে আসছে। পরবর্তীকালে অষ্টধাতুর মূর্তির পিছনে বড় আকারের পটের দুর্গার পুজো শুরু হয়। সেই পটের দুর্গা আঁকা ও তাতে পুজোর করার রীতিও বহু প্রাচীন। পরে এই পুজোয় চট্টোপাধ্যায়দের পাশাপাশি দৌহিত্র হিসাবে যুক্ত হন চক্রবর্তীরা। পুজোর পালি ভাগ হয়। এক বছর পুজোর পালি পড়েছিল বাদল চট্টোপাধ্যায়ের। যে শিল্পী পটের দুর্গা আঁকতেন, তিনি অনেক টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না দরিদ্র বাদলবাবুর। এরপর তিনি গ্রামের ছেলে অশোকবাবুকেই প্রতিমা আঁকতে অনুরোধ করেন। প্রথমে ইতস্তত করলেও বড়দের নির্দেশে প্রতিমা আঁকা শুরু করেন। তাঁর আঁকা সকলের মন জয় করে নেয়। তারপর থেকে আর শিল্পী বদল হয়নি। তবে শিল্পকর্মে বদল এসেছে। প্রথমে ৭ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া ক্যানভাসে পটের দুর্গা আঁকতেন। এখন ক্যানভাস হয়ে উঠেছে ১০ ফুট লম্বা ও ১২ ফুট চওড়া। কখনও তিনি সিনারির মধ্যে মা দুর্গাকে অবস্থান করান। কখনও আবার হয় সাবেকি প্রতিমা। সারা বছরই এই পটের দুর্গা মন্দিরে অবস্থান করে। বিসর্জনের দিন ঘটের পাশাপাশি পুরনো পটের দুর্গার চিত্রকেও বিজর্সন দেওয়া হয়। নতুন পটের চিত্র আবার সারা বছর অবস্থান করে।
অশোকবাবু বলেন, আমারও বয়স হচ্ছে। মা যেমন আমাকে দিয়ে এই কাজ এতবছর করিয়ে নিলেন, তেমনি মা আবার কাউকে অন্তরালে প্রস্তুত করছেন যিনি পরবর্তীকালে এর হাল ধরবেন।
ইকরা গ্রাম শিল্পাঞ্চলের অন্যতম প্রসিদ্ধ গ্রাম। এখানে সাধক বামাখ্যাপা সাধনা করে গিয়েছেন। এই গ্রামেই বিখ্যাত সাহিত্যিক শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের শ্বশুরবাড়ি। বহু প্রাচীন দুর্গাপুজো রয়েছে গ্রামে। তারমধ্যে অন্যতম বিন্ধ্যবাসিনী মা দুর্গা। ইকরা গ্রামের পুজো দেখতে বাইরে থেকে মানুষ ভিড় করেন। গ্রামের সদস্যরা সারা বছর কর্মসূত্রে যে যেখানেই থাকুন, পুজোর সময়ে এখানে এসে ভিড় করেন। -নিজস্ব চিত্র