দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম ও পুনঃ সঞ্চয়। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি বা নতুন কর্ম লাভের সম্ভাবনা। মন ... বিশদ
অনুদান বিতর্কে শুধু মুখই খোলা নয়, সরাসরি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকেও কাঠগড়ায় তুলে দেওয়া হল! ভারতকে মার্কিন অনুদান ইস্যুতে এই নিয়ে তিন তিনবার তোপ দাগলেন ট্রাম্প। স্বভাবতই তোলপাড় শুরু হয় ভারত ও আমেরিকায়। ভারতের এই অনুদানকে ‘কিকব্যাক প্রকল্প’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, এই ধরনের ব্যবস্থা ‘বেআইনি’ বলেই গণ্য হয়। ব্যবসায়িক লাভের বিনিময়ে কোনও ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দেশকে বেআইনিভাবে আর্থিক সাহায্য করা হলে তা ‘কিকব্যাক প্রোগ্রাম’ আখ্যা পায়। ট্রাম্পের মতে যা ‘ঘুষ’, তা কাকে এবং কী উদ্দেশ্যে দেওয়া হল? এই প্রশ্নে যখন আমেরিকা ও ভারত একযোগে তোলপাড় তখনই, শনিবার সামনে এল জোড়া রহস্য! বিখ্যাত মার্কিন দৈনিক ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ তাদের অন্তর্তদন্ত সূত্রে জানাচ্ছে, ভারতকে অনুদান দেওয়ার এমন কোনও মার্কিন সরকারি প্রকল্পই নেই। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্বয়ং ট্রাম্প বললেন, ‘আমার বন্ধু মোদিকে এই ২১ মিলিয়ন ডলার কেন দেওয়া হচ্ছে তা বুঝতেই পারছি না।’ ভোটার বৃদ্ধির কাহিনি শুনে ট্রাম্পের তির্যক মন্তব্য, ‘আমেরিকাতেও ভোটার বাড়ানো দরকার। কিন্তু এখানে তো কেউ কিছু দিচ্ছে না!’ একদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট-এর দাবি, ভারতকে এরকমভাবে সরকারি অনুদান দেওয়ার কোনও প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নেই। আবার তখনই ট্রাম্প নির্দিষ্ট করে জানাচ্ছেন, ভারতকে ১৮২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। তার মানে এটাই ধরে নিতে হবে যে, সরকারি নিয়মের ভেঙেই মোটা অঙ্কের ‘অনুদান’ ভারতে ঢুকেছে! বিজেপি অবশ্য বাংলাদেশে ঢোকা অনুদানের সঙ্গে ভারতের বিষয়টি নিয়ে সংশয়ের জাল তৈরির চেষ্টা করেছে। ভারতের প্রধান শাসক দলের সাফাই, মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই তথ্য গুলিয়ে ফেলছেন। আর এখানেই লক্ষণীয় যে, ট্রাম্প কিন্তু গোল গোল কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেননি, ভারত এবং বাংলাদেশে ঢোকা নির্দিষ্ট আর্থিক অঙ্ক ফাঁস করেছেন তিনি। তিনি সরাসরি আরও দাবি করেছেন, আমার ‘বন্ধু’ মোদিকেই দেওয়া হয়েছে ২.১০ কোটি ডলার!
শুক্রবার মোদি সরকারের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মন্তব্য করেছেন, এই অনুদানের বিষয়টি প্রচণ্ড উদ্বেগজনক এবং এই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিত। বিদেশমন্ত্রীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন? মোদিকে কেন ওই অনুদান দেওয়া হল, তার তদন্ত এবার হোক!’ কংগ্রেসের অভিযোগ, ২০১২ সালে ঠিক এভাবেই আন্না হাজারের আন্দোলন বিদেশি অনুদানে পুষ্ট হয়েছিল। কেজরিওয়াল এবং মোদি তার বেনিফিট পেয়েছেন। পবনের দাবি, ‘২০২১ সাল থেকে মোট ৬৫০ মিলিয়ন ডলার ভারতে এসেছে।’ অতএব সংগত প্রশ্ন, এই অর্থ মোদি সরকার কিংবা বিজেপি কী কারণে নিল? মহারাষ্ট্র, হরিয়ানায় কয়েক লক্ষ ভোটার বেড়ে গেল কোন জাদুতে? মোদিজি কেন তাঁর বন্ধু ট্রাম্পের ‘আজগুবি’ দাবি নস্যাৎ করছেন না? বিদেশ থেকে আসা অনুদানের পাই পয়সার হিসেব থাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে। দম থাকলে মোদি সরকার এবং বিজেপি তার ভিত্তিতে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। কেন এমন এক বেনজির কাণ্ডে দেশের মুখমান কালিমালিপ্ত হবে? শুল্ক দ্বৈরথে ভারতকে বাগে আনতে ট্রাম্পের এ কোনও চাল নয় তো? সেটাও ভেবে দেখা দরকার!