ব্যবসায় বেচাকেনা বেশ ভালো হবে। কাজকর্মে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির আনুকূল্য লাভ ও ভাগ্যোন্নতি। ... বিশদ
১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কোনও দিন উন্নতি হয়নি। বিশেষত পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও কাশ্মীরের আজাদি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে দু’দেশের মধ্যে আলোচনায় বরফ গলেনি। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামা হামলার পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কে বিরাট ফাটল ধরে। ওই ঘটনার পরে পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ শিবিরে হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। ওই বছরের আগস্টেই কাশ্মীর থেকে অনুচ্ছেদ ৩৭০ তুলে নেওয়ার মাধ্যমে বিশেষ মর্যাদা লোপ করার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও তলানিতে নামে। পাকিস্তান ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে দিয়ে কার্যত সমস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। ভারত অবশ্য নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, জম্মু ও কাশ্মীর দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই এই অঞ্চল নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাদের হাতেই রয়েছে। এই নিয়ে পাকিস্তানের মতামত থাকতে পারে না। তার উপর কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে পাক বাহিনী ও তাদের চর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ যোগের অসংখ্য প্রমাণ দিয়েছে ভারত। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের জমিকে ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিরা ভারত বিরোধী কাজকারবার চালিয়ে গিয়েছে। যদিও কোনও অভিযোগই পাকিস্তান মানতে চায়নি।
সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে সঙ্গত কারণেই নয়াদিল্লি একচুল পিছু হটতে নারাজ। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেই রেখেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে গিয়ে আমরা কখনওই সন্ত্রাসবাদকে উপেক্ষা করতে পারি না। পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদ শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছেছে। ভারত কোনওভাবেই এ ধরনের হুমকি বরদাস্ত করবে না। পাকিস্তান বরাবর আন্তর্জাতিক সীমান্তে সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ভারতকে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে ভারত কখনওই আলোচনায় বসবে না। সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে কিছু দেশ এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যা তাদের আর নিয়ন্ত্রণে নেই। তার অন্যতম উদাহরণ প্রতিবেশী পাকিস্তান। তাদের কুকাজের ফল অন্যদের, বিশেষত প্রতিবেশীদের ভুগতে হয়। পাকিস্তানের নীতির ফলে তাদের সমাজে ধর্মান্ধতা দেখা দিয়েছে। ফলে তাদের জিডিপি মাপা যায় মৌলবাদ দিয়ে। আর তাদের রপ্তানির পরিমাপ হয় সন্ত্রাসে। ওই মৌলবাদ তাদের সমাজকেই গ্রাস করেছে। এটা তাদের কৃতকর্মেরই ফল। যদিও কূটনৈতিক মহলের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বহু বছরের পুরনো আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের সমস্যা রয়েছে। তাই সেই সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতেই হবে। ভারতের লক্ষ্য সীমান্তে শান্তি বজায় রাখা। দীর্ঘ দিন ধরেই ভারত এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে শীতলতা রয়েছে। চলতি বছরে দুই দেশে নতুন সরকার এলেও সেই শীতলতা কাটেনি। তবে আগামী দিনে বরফ গলার আশা রয়েছে। জয়শঙ্কর শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে গেলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা হলেও হয়তো সহজ হবে। সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে একটি আলোচনায় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও ভারতের সঙ্গে এসসিওভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সংযোগের সুফলকে তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, ‘চরমপন্থা এবং সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় এসসিও। এই নীতিতেই এসসিও-র যাত্রা শুরু হয়েছিল। আঞ্চলিক স্থায়িত্ব ও সমৃদ্ধির জন্য সাংহাই কোঅপারেশন অর্গ্যানাইজেশন (এসসিও)-এর সদস্যদের উচিত একসঙ্গে কাজ করা।’ আর তাই প্রতিবেশীকে এড়িয়ে যাওয়া নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক বল পাকিস্তানের কোর্টে ঠেলে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ ভারত।