নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গাঢ় রসে চোবানো পান্তুয়ার হাতছানি দিয়ে ডাক এড়িয়ে এগলেই ফাঁদ পাতা রয়েছে কাশ্মীরি কাবাবের। চোখকে কোনওমতে বশে রাখা সম্ভব হলেও টার্কির রোস্টের ‘স্মোকি’ গন্ধকে উপেক্ষা করবেন কোন অজুহাতে! এরকমই মনের ভিতর চলা এক যুদ্ধক্ষেত্রে অসুখবিসুখ ও রসনা এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে পড়ছেন না এমন নির্ভেজাল বাঙালিদের নিয়ে হেঁসেল গরম হয়ে উঠেছে ‘আহারে বাংলা’র।
কাঁচালঙ্কা দিয়ে তৈরি রসগোল্লা থেকে রাশিয়ান খাবার চিকেন স্কিউয়ার্স চেখে দেখার স্বাদ-আহ্লাদ সবই রয়েছে এই মেলায়। কালো ভাত, তুলাইপাঞ্জি চাল চোখ টানছে বরাবরের মতোই। শুক্রবার সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক মেলা প্রাঙ্গণে এই খাদ্য মেলার চতুর্থ দিন ছিল। এদিন দেখা গেল, খাবারের স্টলের সামনে রাখা চেয়ারে বন্ধুদের সঙ্গে বসে জমাটি আড্ডা দিচ্ছেন অনেকে। শীতের মিঠেকড়া রোদের আমেজে মহানন্দে সপরিবারে অনেককে খাবার খেতে দেখা গেল। বিভিন্ন রকমের মাছ, মাংস, মিষ্টির পদ স্টলগুলিতে জ্বলজ্বল করছে। এমনকী কাঁচা সব্জি, সামুদ্রিক মাছও পাওয়া যাচ্ছে। চাল, তেল, তরকারির মশলা কী নেই? এমনকী এই মেলায় সরকারি ন্যায্য মূল্যে সব্জি, আনাজ পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে হরেক রকমের মিষ্টি থাকলেও চোখ টানছে সরকারি উদ্যোগে তৈরি পান্তুয়া।
এদিন দেখা গেল, ওই সংস্থার স্টলে প্রতি পিস ১০ টাকা করে ওই পান্তুয়া বিক্রি হচ্ছে। কোনওটায় ২ পিসে একটি প্যাকেট করা হয়েছে। কোনওটায় ৪ পিসের প্যাকেট রয়েছে। এদিন সেখানে দেখা গেল ওই সরকারি সংস্থার এক আধিকারিক সুব্রত সাঁতরা নিজেই তিন প্যাকেট পান্তুয়া কিনছেন। তাঁর কথায়, এই মেলা ছাড়া আমাদের আর কোথাও এখনও এটা পাওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য এখান থেকে এটি কিনলাম। এরপর আমাদের রসগোল্লা আসতে চলেছে। মেলায় স্টলগুলিতে জিআই প্রাপ্ত সীতাভোগ থেকে ছানাবড়া বরাবরের মতো এবারও নজর কেড়েছে। অনেককে দেখা গেল, স্টলের পাশে লেখা মেনু তালিকায় চোখ বুলিয়ে নিতেই ব্যস্ত। ১৪০ টাকা দরে পাবদার ঝাল, প্রন কাটলেট ৬০ টাকা, গলদা চিংড়ির মালাইকারি ১৫০ টাকা ও রাশিয়ান স্টাইল চিকেন স্কিউয়ার্স ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দোকান ভেদে দাম আলাদা রয়েছে। মেলা চত্বরে রান্না শেখানোর জন্যে শেফরা রয়েছেন। এদিন দেখা গেল একজন রান্না করা শেখাচ্ছেন। সেখানে উৎসাহী অনেকের ভিড় ছিল।