কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত ওয়ান ডে সিরিজে উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে যথেষ্ট সাবলীলতার সঙ্গেই কিপিং করেছেন রাহুল। পাশাপাশি ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন ব্যাট হাতেও। আর সেটাই তাঁর প্রতি টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রথম একদিনের ম্যাচে চোট পেয়ে ছিটকে গেলেও তৃতীয় ম্যাচের আগেই সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন স্পেশালিস্ট উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্থ। কিন্তু তাঁর বদলে অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যানকে খেলিয়ে রাহুলকেই উইকেটের পিছনে কিপিং গ্লাভস হাতে রেখে দেওয়া হয়। রবিবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর সাংবাদিক সম্মেলনে কোহলি কোনও রকম রাখঢাক না রেখেই বলে দিয়েছেন, দলে আপাতত আর কোনও পরিবর্তন চাইছেন না তিনি। অর্থাৎ রাহুলকেই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে দীর্ঘমেয়াদি উইকেটকিপার হিসেবে রেখে দিতে আগ্রহী কোহলি। তাঁর কথায়, ‘এতে (রাহুল কিপিং করলে) আমাদের সামনে একজন অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান খেলানোর সুযোগ থাকবে। ফলে আমাদের ব্যাটিং লাইন-আপ আরও শক্তিশালী হবে। তাছাড়া ব্যাটিং এবং কিপিং, দুটি ভূমিকাতেই রাহুল ভালো খেলেছে। ওকে আমরা এভাবেই ব্যবহার করে যেতে চাই। দেখতে হবে, ও কেমন করছে। আপাতত মনে হচ্ছে, আমাদের শেষ ম্যাচের কম্বিনেশন দুমদাম বদলে ফেলার কোনও কারণ নেই।’ এই প্রসঙ্গে কোহলি টেনে এনেছেন রাহুল দ্রাবিড়ের উদাহরণও। তিনি বলেন, ‘দলের ভারসাম্য বৃদ্ধির জন্য এটা প্রয়োজন। ২০০৩ বিশ্বকাপের কথাই ভাবুন। রাহুল দ্রাবিড় কিপিং করেছিলেন। ফলে একজন বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলাতে পারছিল দল। ব্যাটিং আরও শক্তিশালী হওয়ার সুবাদে গোটা দলের ভারসাম্যটাই বদলে গিয়েছিল।’ কোহলির পরিকল্পনা মতো লোকেশ রাহুল যদি উইকেটের পেছনে জায়গা পাকা করে ফেলেন, তা হলে ভারতের সীমিত ওভারের দলে ঋষভ পন্থের দরজা বন্ধ হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।
অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচে বিধ্বস্ত হলেও তিন ম্যাচের ওয়ান ডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে নিউজিল্যান্ডের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন কোহলিরা। প্রায় দেড় মাসের সফরে পাঁচ টি-টোয়েন্টি, তিনটি ওয়ান ডে এবং দু’টি টেস্ট খেলবে ভারতীয় দল। কিউয়িদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই দাপট দেখাতে চান কোহলি। ভারত অধিনায়ক বলছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা যেভাবে খেলছি, তাতে দলের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। আমরা জানি, ঠিক কী করতে চাইছি। আর এটাই সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না। গত বছর নিউজিল্যান্ডে পাওয়া সাফল্য এবারও আমাদের প্রত্যয়ী করে তুলছে। বিদেশে জিততে গেলে হোম টিমকে শুরুতেই চাপে ফেলতে হয়। গত বছর আমরা ঠিক সেটাই করেছিলাম। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট নিয়ে মিডল ওভারে ওদের আটকে দিয়েছিলাম। স্পিনাররা অসাধারণ বোলিং করেছিল। এবারও একইরকম ভাবে খেলতে চাইছি।’
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচে একবারও টস জিততে পারেননি কোহলি। তবে তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁর। সিরিজ জেতার পর কোহলি বলেছেন, ‘গত বছর বিশ্বকাপের পর নিজেরা কথা বলে ঠিক করেছিলাম যে, টস জিতে সুবিধাজনক পরিস্থিতির আশা করব না। রান তাড়া করতে পছন্দ করলেও, টস হেরে যদি তার উল্টো হয়, তাতেও ভয় পাব না। বরং টস হারলে মানসিকভাবে বদ্ধপরিকর থাকতে হবে ভালো পারফরম্যান্স করার জন্য। আমরা এখন আক্ষরিক অর্থেই টসকে গুরুত্বহীন করে দিয়েছি। বিপক্ষের ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জকে খোলা মনে স্বীকার করার জন্য যথাসম্ভব তৈরি থেকেছি।’ কোহলির বক্তব্যের প্রমাণ মিলেছে শেষ দু’টি ম্যাচে। রাজকোটে দ্বিতীয় ওয়ান ডে’তে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে জিতেছিল ভারত। আবার বেঙ্গালুরুতে রবিবার সিরিজের শেষ ম্যাচে টস হেরে রান তাড়া করে জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। গর্বিত কোহলি বলছেন, ‘টস হারলেও কখনও নিজেদের উপর বিশ্বাস ছিল অটুট। কারণ, প্রতিকূল পরিস্থিতিকে অনুকূলে নিয়ে আসার মতো ক্রিকেট খেলার ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। গত ছয়-আট মাসে দুর্দান্ত উন্নতি করেছে দল। তরুণরাও এগিয়ে এসেছে প্রয়োজনের সময়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের পক্ষে এটা দারুণ ভালো লক্ষণ।’