বিদ্যার্থীরা কোনও বৃত্তিমূলক পরীক্ষার ভালো ফল করবে। বিবাহার্থীদের এখন ভালো সময়। ভাই ও বোনদের কারও ... বিশদ
মহিষাদল রাজ পরিবারের সদস্য হরপ্রসাদ গর্গ বলেন, করোনার জন্য রথের জমায়েত করা যাবে না। সেজন্য এবছর রথ টানা বন্ধ থাকবে। পালকিতে করে জগন্নাথদেবকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। রথ উৎসবের প্রতীকী অনুষ্ঠানের জন্য অনুমতি চেয়ে জেলাশাসক, পুলিস সুপার, মহকুমা শাসক, বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে ই-মেলে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
পুরী ও মাহেশের রথের মতো মহিষাদলের ঐতিহ্যবাহী সুউচ্চ কাঠের রথের খ্যাতি রয়েছে। মহিষাদলের রথযাত্রা ঘিরে প্রতি বছর দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হতো। শতাব্দী প্রাচীন রথযাত্রার আকর্ষণ বাড়াতে রথের দিন কখনও পুরীর মহাপ্রসাদ, কখনও ঘি ও কাজু কিসমিসে তৈরি প্রসাদী পোলাও বিতরণ করা হতো পুণ্যার্থীদের। দারু অর্থাৎ কাঠ-নির্মিত রথের প্রাণ প্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠান ‘লেত উৎসব’ হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত। এই উৎসবের মধ্য দিয়েই একদিন আগে রথযাত্রার সূচনা হয়। প্রথা অনুযায়ী, পুরীর রথ টানার পরই মহিষাদলের রাজা প্রথমে রশিতে টান দিয়ে থাকেন। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, রথ টানা হবে কি না, সেবিষয়ে মানুষের কৌতূহল রয়েছে। রথযাত্রা মহিষাদলের সবচেয়ে বড় উৎসব এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম আকর্ষণ। সেজন্য ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে জেলা প্রশাসনও রথ পরিচালনায় যুক্ত হয়। করোনা আবহে এবং উম-পুন বিধ্বস্ত মহিষাদলে এবার রথের উৎসব হচ্ছে না। আজ, মঙ্গলবার রথ পরিচালনা নিয়ে ব্লক প্রশাসন প্রথম বৈঠক করবে। পাঁচতলা সমান কয়েকশো টন ওজনের রথ টানতে যেহেতু কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হয়, সেজন্য রথ টানা হবে না। তবে রথের মেলার অনুমতি নিয়ে আলোচনা হবে।
মহিষাদলের মতো কাঠের তৈরি এতবড় প্রাচীন রথ ভারতে কোথাও নেই বলে দাবি প্রবীণ অধ্যাপক তথা আঞ্চলিক ইতিহাসবিদ হরিপদ মাইতি। তিনি বলেন, ৬৪হাজার টাকা খরচ করে প্রথমে ১৭ চূড়ার রথ তৈরি হয়েছিল। একটি দুর্ঘটনার পর রথের উচ্চতা কমিয়ে ১৩ চূড়া বা ৫৫ ফুট করা হয়। বহু বছর আগে একবার কাদার জন্য মাঝপথে রথ আটকে যাওয়ায় জগন্নাথদেবকে পালকিতে করে গুণ্ডিচাবাটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মাসির বাড়িতে প্রতিদিন জগন্নাথদেবকে বিভিন্ন দেবতার বেশে সাজিয়ে পোলাও, ফ্রায়েড রাইস, পনির, সন্দেশ, গোবিন্দভোগ চালের পায়েস দিয়ে রাজকীয় ভোগ দেওয়ার রীতি রয়েছে। পুণ্যার্থীদের কাছে এগুলি রথের বড় আকর্ষণ।