সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: পুরাতন মালদহ ব্লকের ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষবাথানে বিজেপির বুথ সভাপতির মাথা লক্ষ্য করে গুলি করার অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ওই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও দুষ্কৃতীরা বুথ সভাপতি প্রভাত টুডুকে গুলি করেই পালিয়ে যায়। ঘটনায় সামান্য জখম হন প্রভাতবাবু। গুলি তাঁর মাথা ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। যে কারণে অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বাঁচেন। রাতে গুলি লাগলেও সকালে মালদহ থানার পুলিস তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এক দুষ্কৃতীকে পুলিস শুক্রবার গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে একটি অত্যাধুনিক পিস্তল বাজেয়াপ্ত হয়। 
এদিকে গুলিকাণ্ডের জেরে জেলায় রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই গুলি করেছে। যদিও পাল্টা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এলাকায় অস্থিরতা তৈরি করার জন্য বিজেপির লোকেরাই  বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে। ভোটের  আগে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলে ওদের দলের এক প্রার্থীকেই গুলি করা হয়েছিল। তবে বিজেপির বুথ সভাপতিকে লক্ষ্য করে কী কারণে গুলি করা হল সেই বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছেন পুলিস কর্তারা। 
মালদহ থানার আইসি হীরক বিশ্বাস এদিন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। তবে আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করেছি। ধৃতের কাছ থেকে পিস্তল বাজেয়াপ্ত হয়েছে। 
আক্রান্ত বিজেপির বুথ সভাপতি প্রভাতবাবু এদিন বলেন, আমি দলের বুথ সভাপতি হতে রাজি ছিলাম না। পরে স্থানীয় নেতৃত্ব সভাপতির দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়। কেন আমাকে গুলি করা হল ধোঁয়াশার রয়েছি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি। তবে আমি এখনও আতঙ্কে আছি। 
এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, বিজেপির সক্রিয় বুথ সভাপতিকে দুষ্কৃতীরা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। কোনওক্রমে বুথ সভাপতি বেঁচে যান।  এ ঘটনার পেছনে তৃণমূলের মদত থাকতে পারে। দুষ্কৃতীরা যে দলই থাকুক না কেন শাস্তি হওয়া দরকার। 
মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা রাজ্যসভার এমপি মৌসম নুর বলেন, বিজেপির প্রার্থী থেকে শুরু করে বুথ সভাপতিকে গুলি এসব বিজেপিরই চক্রান্ত। ওরা নিজেরাই নিজেদের মারছে। পরে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এটা বিজেপির সংস্কৃতি। সঠিক তদন্ত হলে ওদের লোক বেরিয়ে আসবে। 
যাত্রাডাঙার-নারায়ণপুর রাজ্য সড়কের ধরে মহিষবাথান গ্রামে  প্রভাত টুডুর বাড়ি। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ বাড়ির বাইরে শৌচালয়ে যান প্রভাতবাবু। সেই সময়ে তিনি দেখেন বাড়ির সামনেই দুই দুষ্কৃতী মোটর বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তিনি তাদের কাছে যান। গভীর রাতে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রভাত টুটু ওদের কাছে কারণ জানতে চান। তখনই পেছন থেকে এক দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে। দুষ্কৃতীদের গুলি প্রভাসবাবুর মাথার পিছনের অংশে লেগে ছিটকে বেরিয়ে যায়। 
পরে পুলিস তদন্ত চালিয়ে গাজোলের আগামপুর থেকে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মৌআলি খান। তার বাড়ি কালিয়াচকের নারায়ণপুর গ্রামে।