ব্যবসায় বাড়তি বিনিয়োগ প্রত্যাশিত সাফল্য নাও দিতে পারে। কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতি শ্বাসকষ্ট ও বক্ষপীড়ায় শারীরিক ক্লেশ। ... বিশদ
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে দিন আনি দিন খাই শ্রেণীর মানুষ চরম সমস্যায় পড়েছেন। দু’মুঠো ভাতের জোগাড় করতে যাদের সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়, তাঁরা কাজ হারিয়ে বাড়িতে অভুক্ত অবস্থায় দিন গুজরান করছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন ধরে হরিশ্চন্দ্রপুর সদরের বাইশা গ্রামের বেদে সম্প্রদায়ের মানুষরা অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। এরা সাধারণত এলাকায় ঘুরে বেড়িয়ে সাপের খেলা দেখিয়ে বা ভিক্ষা বৃত্তি করে সংসার চালান। লকডাউনের জেরে বাইরে বের হতে পারছেন না। তাই উপার্জন বন্ধ। পেটে টান। বাধ্য হয়েই আমের কচি গুঁটি, গাছের পাতা সিদ্ধ করে লবন দিয়ে খাচ্ছেন কেউ কেউ। বড়রা কোনওরকমে কষ্ট করে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটালেও ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্নার রোল এলাকার বাতাস ভারী করে তুলেছে।
বেদে সম্প্রদায়ের জগদীশ বেদ, শঙ্কর বেদ, উমনি বেদরা বলেন, আমরা ভিক্ষা বৃত্তি করে ঘর সংসার চালাই। কিন্তু লকডাউনের জেরে বাইরে বের হতে পারছি না। বাড়িতে একদানাও খাবার নেই। তাই অনাহারে দিন গুজরান করছি। বাচ্চারা খাওয়ার জন্য কাঁদছে। বাধ্য হয়ে তখন এদিন ওদিক থেকে পাতা টাতা জোগাড় করে সিদ্ধ করে লবন দিয়ে খাওয়াচ্ছি। নিজেরাও খাচ্ছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের খাবারের ব্যাবস্থা করা হোক। না হলে বাচ্চাদের নিয়ে আমরা না খেয়ে মরে যাব।
এপ্রসঙ্গে ফরোয়ার্ড ব্লকের মালদহ জেলা সাধারণ সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুর সদরের বাইশা গ্রামের বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ ভিক্ষাবৃত্তি করে দিন গুজরান করেন। লকডাউন থাকায় বাইরে বের হতে পারছেন না। বাড়িতে সঞ্চিত খাদ্যদ্রব্যও নেই। তাই সমস্যায় পড়েছেন। তাদের পাতা সিদ্ধ করে খাওয়ার দৃশ্য আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যাতে এই অভুক্ত মানুষদের খাদ্যের ব্যাবস্থা করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকেও তাদের সাহায্য করা হবে।
জেলা পরিষদের শিশু, নারী, জন কল্যাণ ও ত্রাণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের মর্জিনা খাতুন বলেন, ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করা হবে। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, লকডাউনের শুরুর দিকে ওই গ্রামের বেদে সম্প্রদায়ের মানুষদের চাল, ডাল, আলু সহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল। আবার ওই গ্রামে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হবে। তাদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী প্রেরণ করা হবে।